1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান
স্বাস্থ্য

সার্বিয়ায় বিরল রোগে আক্রান্ত কিশোরদের জন্য আশার আলো

৪ অক্টোবর ২০২৪

ইউরোপের দেশ হওয়া সত্ত্বেও সার্বিয়ায় বিরল রোগে আক্রান্ত শিশুদের জন্য উন্নত চিকিৎসা ও তার ব্যয়ভার বড় সমস্যা৷ কিন্তু পরিবারের প্রত্যয় ও বেসরকারি উদ্যোগ কিছুটা আশার আলো এনে দিচ্ছে৷

https://p.dw.com/p/4lQrD

ডানকোর বয়স ১৩৷ সে ডাচেন মাস্কিউলার ডিসট্রোফি নামের রোগে ভুগছে৷ সেই রোগের অগ্রগতি ধীর করাই তার সবচেয়ে বড় স্বপ্ন৷ ডানকোর ক্ষেত্রে দ্রুত হস্তক্ষেপ জরুরি৷

বিরল এই রোগ মূলত কিশোরদের মধ্যেই দেখা যায়৷ ডিস্টোফিন নামের প্রোটিনের অভাবের কারণে পেশির দ্রুত ক্ষয় এই রোগের বৈশিষ্ট্য৷ সাধারণত পাঁচ বছর বয়সের মধ্যেই লক্ষণগুলি দেখা যায়৷ সার্বিয়ায় প্রায় ২০০ শিশু এই সমস্যায় ভুগছে৷

ডানকো সেই পাঁচটি ছেলের একজন, যারা এই রোগের অভিনব সাব টাইপে ভুগছে৷ সেই সার্বিয়ার প্রথম শিশু, যে এই প্রথম বিদেশে এক উদ্ভাবনি থেরাপি পেতে চলেছে৷ ডানকোর মা মারিয়া রান্ডইয়েলোভিচ বিষয়টির উপর আলোকপাত করে বলেন, ‘‘এই পাঁচটি ছেলের নির্দিষ্ট ডাচেন মাস্কিউলার ডিসট্রোফি রোগের মিউটেশনের খুঁটিনাটী বিষয়গুলি অন্য ছেলেদের মতো নয়৷ কয়েকটি ছেলে তাদের মিউটেশনের টাইপ অনুযায়ী চিকিৎসা পাচ্ছে৷ কিন্তু এখনো পর্যন্ত এই পাঁচটি ছেলে বিশ্বের অন্যত্র প্রচলিত উদ্ভাবনী থেরাপির সুযোগ পায়নি৷ জানুয়ারি মাসের শুরুর দিকে এই সুযোগ এলো৷ ডিসট্রোফিন জিনের মিউটেশনের নির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্যের কারণে তাদের বাছাই করা হয়েছে৷''

এই পাঁচটি ছেলের উদ্ভাবনী থেরাপির জন্য ১৫ লাখ ডলার প্রয়োজন৷ এ ক্ষেত্রে সময় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ৷ কয়েক মাসের মধ্যে অর্থ সংগ্রহ করতে হবে৷ কারণ রোগ অত্যন্ত দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে৷ তাছাড়া ছেলেগুলির বয়স চিকিৎসায় সাফল্যের চাবিকাঠি৷ দূর্ভাগ্যবশত সার্বীয় রাষ্ট্র চিকিৎসার ব্যয় বহন করেনা৷ ডানকোর বাবা দালিবর রান্ডইয়েলোভিচ বলেন, ‘‘রোগ দানা বাঁধছে৷ মাসেল টোন অপরিবর্তিত রাখতে আমাদের প্রতিদিন কাজ করতে হয়৷ তা না হলে শিশুটি স্বাধীনভাবে নিজের শরীর ব্যবহার করতে পারবে না৷ এর অর্থ, দিনে দুই বার আমাদের ব্যায়াম করতে হয়৷ এক দিন পর পর পুলে গিয়ে হাইড্রোথেরাপি চালিয়ে যেতে হয়, যাতে সে সাঁতার কেটে পানিতে নিজের পেশি সঞ্চালন করতে পারে৷’’

ডিসট্রোফির অগ্রগতির গতি কমাতে পরিবারগুলি এই সব কাজ করে৷ চিকিৎসার জন্য তহবিল সংগ্রহের কাজে গতি আনতে পাঁচটি পরিবার একত্র হয়ে জেড্রো ফাউন্ডেশন গঠন করেছে৷ তাঁরা ‘ব্যান্ড ৫৫' নামের এক গোষ্ঠীও গড়ে তুলেছে, যার আওতায় সংগীতশিল্পী, অভিনেতা ও পরিচালকের মতো ৫৫ জন বিখ্যাত ব্যক্তিত্ব এক চ্যারিটি ক্যাম্পেইন শুরু করেছেন৷ ‘জেড্রা' নামের গান এবং ‘ফাইভ বাই ফাইভ উইথ নিউ হোপ ফর দ্য ওয়ার্ল্ড' স্লোগান ব্যবহার করে তাঁরা এই উদ্যোগ নিচ্ছেন৷

সার্বিয়ায় বিরল রোগের চিকিৎসার জন্য আলাদা কোনো কেন্দ্র নেই৷ অনেক নাগরিক শুভাকাঙ্খীদের দাক্ষিণ্য, টেক্সট মেসেজ ডোনেশন বা খ্যাতনামা ব্যক্তিদের সমর্থনের উপর নির্ভর করেন৷

দেড় হাজারের বেশি মানুষ নানা মানবিক ফাউন্ডেশনের বদান্যতার উপর নির্ভরশীল৷ লেস্কোভাচ শহরের ‘পোকরেনি সিভোট' বা ‘জীবন শুরু করো' নামের ফাউন্ডেশন প্রায় ৩০০ মানুষের জন্য অর্থ সাহায্য দেয়৷ সংগঠমের প্রতিনিধি দুশান মিলিকোভিচ বলেন, ‘‘আমাদের দেশের নাগরিকরা খুবই সক্রিয়৷ সম্প্রতি আমরা এক শিশুর জন্য ক্যাম্পেইন চালিয়ে  মাত্র দুই দিনে দুই লাখ ইউরোর বেশি সংগ্রহ করেছি৷ বিশেষ করে শিশুদের চিকিৎসার ক্ষেত্রে অবশ্যই বেশি সাড়া পাওয়া যায়৷’’

ডানকো একেবারেই হাল ছাড়তে প্রস্তুত নয়৷ সে ‘ব্যান্ড ৫৫' এবং খ্যাতিমান শিল্পীদের ক্যাম্পেইনের গানের লোগো ডিজাইন করেছে৷ গোটা পরিবার নিজস্ব ঐক্য থেকে শক্তি পায়৷ আর ডানকো তাদের মধ্যে সবচেয়ে বড় সংগ্রামী৷

ইয়েলেনা জুকিচ-পেজিচ/এসবি

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান