1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বেলগ্রেডে সবুজ কমছে, গরম বাড়ছে

১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪

শহরের বায়ুর মান ধরে রাখতে এবং তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে সবুজ জায়গা দরকার৷ সার্বিয়ার রাজধানী বেলগ্রেডে বড় ধরনের নির্মাণকাজ হওয়ায় সবুজ জায়গা অনেক কমে গেছে৷ ফলে গ্রীষ্মে সেখানে অসহনীয় তাপদাহ দেখা যাচ্ছে৷

https://p.dw.com/p/4kUod
বেলগ্রেডের একটি ভবন
সার্বিয়ার রাজধানী বেলগ্রেডে ২০২৩ সাল ছিল স্মরণকালের সবচেয়ে উষ্ণ বছরছবি: Dragoslav Dedovic/DW

বেলগ্রেডে গ্রীষ্মের আরেকটি অসহনীয় গরম দিন৷ তাপমাত্রা প্রায় ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছুঁয়েছে৷ শহরের এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘আমরা শুধু ছায়ায় থাকি এবং পানি পান করি... আমি জানি না, কোনোভাবে আমাদেরকে টিকতে হবে৷''

আরেক বাসিন্দা বলেন, ‘‘আমি কোনোরকমে গরম সহ্য করছি৷ পানি, ছোট্ট ফ্যান ইত্যাদি সাথে রাখি৷''

সার্বিয়ার রাজধানী ইতোমধ্যে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব অনুভব করছে৷ ২০২৩ সাল ছিল স্মরণকালের সবচেয়ে গরম বছর৷ বেশি ভবন আর কম সবুজের কারণে নিউ বেলগ্রেড জেলার দুই লাখ বাসিন্দা সবচেয়ে বেশি ভুগছেন৷

বেলগ্রেড বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থাপত্য বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. আইভান সিমিচ বলেন, ‘‘এখানে সবুজের অভাব রয়েছে৷ আসলে মানসম্পন্ন সবুজের অভাব, যা বায়ুমণ্ডলীয় জল শোষণ করতে পারে৷''

সিমিচ বলেছেন যে নির্মাণ কাজের জন্য সবুজ জায়গা কমে যাওয়াটার মূল কারণ হচ্ছে ‘‘বিনিয়োগকারী নগরবাদ৷'' এটা তখন ঘটে যখন জনগণের চেয়ে বেসরকারি বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ আগে দেখা হয়৷ যেমন ‘ওয়েস্ট ৬৫' হিসেবে পরিচিত আধুনিক আবাসিক এলাকায় গত সত্তরের দশকের তুলনায় এক দশমাংশ সবুজ জায়গা রাখা হয়েছে৷ 

জলবায়ুর পরিবর্তন টের পাচ্ছে বেলগ্রেড

ড. সিমিচ বলেন, ‘‘এসব ভবন সম্ভবত জ্বালানি সাশ্রয়ী এবং নির্মাণের মানও ভালো, কিন্তু এসব দিয়ে সবুজের ঘাটতি মেটানো যাবে না৷ অবশ্যই দুটোই দরকার৷ আর তখনই পরিবেশবান্ধব বিল্ডিং কমপ্লেক্স তৈরি সম্ভব৷''

কিন্তু পৌরসভাগুলো কেন জলবায়ু পরিবর্তনকে গুরুত্ব দিচ্ছে না? কেন অবশিষ্ট সবুজ জায়গাগুলোতেও ভবন তৈরি হচ্ছে? ডয়চে ভেলে বেলগ্রেড কর্তৃপক্ষের কাছে জবাব চেয়েও পায়নি৷ 

আবহাওয়াবিদ লাজার ফিলিপোভিচ মনে করেন যে ভবিষ্যতে কী হবে তার ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে৷ তিনি শহরের সবচেয়ে গরম এলাকাগুলোর ম্যাপ তৈরি করেছেন৷ এবং তিনি নিশ্চিত যে সবুজ জায়গার অভাবের কারণে বেলগ্রেডে বসবাস আরো কঠিন হবে৷

আবহাওয়াবিদ লাজার ফিলিপোভিচ বলেন, ‘‘আমাদের গবেষণায় দেখা গেছে শহরের কিছু অংশে গ্রীষ্মের প্রতি নব্বই দিনের মধ্যে পঞ্চাশটির মতো রাতে বেশ গরম থাকে৷ সে রাতগুলোতে তাপমাত্রা ২০ ডিগ্রির নিচে নামে না৷ যদি এই ধারা অব্যাহত থাকে তাহলে গ্রীষ্মমন্ডলীয় শহরগুলোর মতোই অবস্থা হবে বেলগ্রেডের৷ যেমন ২০৫০ নাগাদ বেলগ্রেডের তাপমাত্রা বর্তমানের কায়রোর মতো হতে পারে৷''

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এক্ষেত্রে পরিবেশগত সূচক একটি সমাধান হতে পারে৷ এই সূচক একটি শহরের পরিবেশগত মান নির্ধারণ করে৷ অনেক ইউরোপীয় দেশে এই পন্থা চালু রয়েছে৷ 

ড. আইভান সিমিচ বলেন, ‘‘এর অর্থ হচ্ছে শহরের প্রত্যেক অংশে কিংবা নির্দিষ্ট কিছু অংশে তৈরি আবাসিক বা বাণিজ্যিক কমপ্লেক্সের সবুজ অংশের মান এবং সংখ্যা এই সূচকের মাধ্যমে যাচাই করা হবে৷''

শহরের সবুজ অঞ্চল কী পরিমান হওয়া উচিত তা নির্ধারণে বেলগ্রেড কর্তৃপক্ষের নির্দিষ্ট নিয়ম আছে৷ তবে কাগজে কলমে সেই নিয়মের অস্তিত্ব থাকলেও তা মানার কোনো আইনি বাধ্যবাধকতা নেই৷ এধরনের নিয়ম মানার বিষয়টি বাধ্যতামূলক না হওয়া অবধি বেলগ্রেডের মানুষকে কংক্রিটের জঙ্গলে থাকতে হবে বলে মনে হচ্ছে, যেখানে তাপমাত্রা শুধু বাড়বেই৷ 

প্রতিবেদন: লুকা স্টোকিচ/এআই

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান