1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি চায় প্যারিসের পাড়ার বিস্ত্রো

৭ এপ্রিল ২০২৩

পুরোনো পাড়ায় কোণের চায়ের দোকান একসময়ে যেমন এলাকার মানুষের যোগাযোগের প্রাণকেন্দ্র ছিল, প্যারিসের বিস্ত্রোও বহুকাল সেই ভূমিকা পালন করেছে৷ এমন ঘরোয়া রেস্তোরাঁ বাঁচাতে ইউনেস্কোর হস্তক্ষেপ চাইছেন মালিকরা৷

https://p.dw.com/p/4Porh
Paris Bistro
৪০ বছর আগে ফ্রান্সে এখনকার তুলনায় পাঁচ গুণ বেশি বিস্ত্রো ছিল৷ছবি: Adam Davy/PA/IMAGO

প্যারিসে সকালে সবার আগে যে খাবার দোকান খোলে, তার নাম ‘বিস্ত্রো'৷ তবে এককালে শহরের ট্রেডমার্ক হলেও বর্তমানে বিস্ত্রোর সংখ্যা কমে চলেছে৷

আল্যাঁ ফঁতেইন ২০ বছরেরও বেশি সময় ধরে নিজের বিস্ত্রো চালাচ্ছেন৷ সেইসঙ্গে তিনি এমন এক সংঘের সভাপতি, যেটি বিস্ত্রোগুলিকে ইউনেস্কোর সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের তালিকায় স্থান দিতে চায়৷ আল্যাঁ বলেন,‘‘বিস্ত্রো সংস্কৃতির অর্থ হলো, গুরুত্বপূর্ণ হোক বা না হোক – যে কোনো বিষয়ে কথা বলা যায়৷’’

তবে সবকিছু খুব বেশি গোছানো হলে কিন্তু চলবে না৷ আল্যাঁ মনে করেন, ‘‘আমার বিস্ত্রোর একটা অন্তরাত্মা রয়েছে৷ আমার পরিবারের অনেক জিনিস সেখানে রয়েছে, যেমন বাবার হেলমেট ও পরিবারের অনেক ফটো৷’’

পাড়ার কোণায় বিস্ত্রো সাতসকাল থেকে অনেক রাত পর্যন্ত খোলা থাকে৷ প্রেম নিবেদন হোক, অথবা রাজনীতি নিয়ে গরম তর্ক, অনেকের কাছে বিস্ত্রোই দ্বিতীয় বাসার মতো৷ তবে ইতোমধ্যে বাইরের জগত মারাত্মকভাবে বদলে গেছে৷ ৪০ বছর আগে ফ্রান্সে এখনকার তুলনায় পাঁচ গুণ বেশি বিস্ত্রো ছিল৷

প্যারিসের বিস্ত্রো যেন পাড়ার চায়ের দোকান

ইউনেস্কো যদি সত্যি প্যারিসের এই ছোট খাবার জায়গাগুলিকে সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের তালিকায় স্থান দেয়, তখন সেগুলি বাঁচানো সম্ভব হবে বলে মালিকরা আশা করছেন৷ সরাসরি কোনো আর্থিক সুবিধা না পেলেও এমন স্বীকৃতি বিজ্ঞাপন হিসেবে মন্দ হবে না৷ বিশেষ করে ফাস্ট ফুড কোম্পানিগুলি বর্তমানে যেভাবে প্যারিসের জমি দখল করে চলেছে, ইউনেস্কোর স্বীকৃতি সেগুলির বিজ্ঞাপনের মোকাবিলা করতে পারবে বলে বিস্ত্রোর মালিকরা আশা করছেন৷

‘ফ্লোরিয়ান অন এয়ার'-এর মতো ইনফ্লুয়েন্সর ফরাসি নয়, এমন দোকানের প্রতি আকর্ষণ বোধ করেন৷ তিনি প্রতিনিয়ত নতুন প্রবণতার সন্ধান করে চলেছেন এবং ফলোয়ারদের কাছে তুলে ধরছেন৷ ফ্লোরিয়ানের মতে, বিস্ত্রোয় সৃজনশীলতা ও নতুন কনসেপ্ট পাওয়া যায় না৷

যেমন আভিজাত্যের ছাপসহ থাইল্যান্ডের স্ট্রিটফুড নতুনত্ব আনছে৷ তবে নতুনের প্রতি টান সত্ত্বেও ফ্লোরিয়ান বিস্ত্রো বাঁচিয়ে রাখতে চান৷ তিনি বলেন, ‘‘বিস্ত্রো আমার অত্যন্ত পছন্দ৷ ফ্রান্সের অনবদ্য বৈশিষ্ট্য৷ বাগেৎ রুটি দ্রুত ইউনেস্কোর তালিকায় স্থান পেয়েছে৷ বিস্ত্রোও যেন সেটা পারে৷''

ইনফ্লুয়েন্সরের সমর্থন পেলেও সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় সেই উদ্যোগে তাল মেলাচ্ছে না৷ সরকারকেই ইউনেস্কোর কাছে আনুষ্ঠানিক আবেদন পেশ করতে হবে৷ কিন্তু মন্ত্রণালয় সেই কাজে মোটেই আগ্রহ দেখাচ্ছে না৷ সরকারি কর্মচারীদের নীরবতায় হতাশ বিস্ত্রোর মালিকরা মরিয়া হয়ে ফঁতেইনকেও ব্যতিব্যস্ত করে তুলছেন৷ আল্যাঁ বলেন, ‘‘তারা দুইবার আমাদের হতাশ করেছে৷ আমরা নাকি ইউনেস্কোর কনভেনশনের সঙ্গে খাপ খাই না৷ সেই সনদ আমার ঘুম কেড়ে নিয়েছে৷''

সমস্যা হলো, বিস্ত্রোর মালিকরা কিছুতেই নিজেদের স্পষ্ট সংজ্ঞা স্থির করতে পারছেন না৷ কারণ প্রত্যেকটি বিস্ত্রোই বাকিগুলির থেকে ভিন্ন৷ কিন্তু বিস্ত্রো জগতে এমন বৈচিত্র্য সত্ত্বেও একেবারে নিজস্ব কিছু বৈশিষ্ট্যও রয়েছে৷ শেষ পর্যন্ত বিষয়টি গুরুত্ব পাবে বলে আল্যাঁ ফঁতেইন নিশ্চিত৷ কারণ তাঁর মতে, পর্যটকরা বহুকাল আগে থেকেই টের পেয়েছেন যে বিস্ত্রো ছাড়া ফ্রান্সের কথা ভাবাই যায় না৷

সুসানে ড্যোরহাগে/এসবি

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান