জাতীয় পরিচয়পত্র সঙ্গে রাখতে হবে ট্রেন যাত্রীদের
২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ঢাকার একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত মো. আব্দুল্লাহ ডয়চে ভেলের কনটেন্ট পার্টনার দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ট্রেনের সময়সূচির মাত্র একদিন আগে অনলাইনে টিকিট পাওয়া স্বপ্নের মতো৷ আগে চট্টগ্রামে আসা-যাওয়ার জন্য ৪ দিন আগে টিকিট কাটতে হতো৷যেদিন সকালে টিকিট ছাড়ে সেদিনও একটু দেরি করলে টিকিট পাওয়া যেতো না৷'
তিনি সরকারের উদ্যোগের প্রশংসা করে বলেন, 'ভ্রমণের সময় টিকিট চেকিংয়ের ক্ষেত্রে কঠোর নজরদারি প্রয়োজন৷'
'বাংলাদেশ রেলওয়ে ফ্যান গ্রুপ' নামের ফেসবুক পেজসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরকারের এই উদ্যোগ নিয়ে অনেকেই প্রশংসা করছেন৷ তবে কেউ কেউ অভিযোগ করেছেন, জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়ে নিবন্ধনে অনেকের সমস্যা হচ্ছে৷
শুধু চট্টগ্রামগামী সুবর্ণ এক্সপ্রেস ট্রেনই নয়, আজ দুপুর দেড়টায় ১ মার্চ রাত ৯টা ২০ মিনিটে ছেড়ে যাওয়া মহানগর এক্সপ্রেসের ৫৪টি টিকিট অবিক্রিত দেখা গেছে৷
এছাড়া আগামী ২, ৩ ও ৪ মার্চ চট্টগ্রামগামী প্রায় সব ট্রেনের টিকিট অনলাইনে বা কাউন্টারে পাওয়া যাচ্ছে৷ অন্যান্য জেলার ট্রেনের টিকিটের ক্ষেত্রেও একই দৃশ্য দেখা যায়৷
যাত্রীরা এখন যাত্রার ৪ দিন আগে অগ্রিম টিকিট কিনতে পারেন৷ তবে বাংলাদেশ রেলওয়ের কিছু অসাধু কর্মকর্তার যোগসাজশে টিকিট বিক্রি শুরুর কিছু সময়ের মধ্যেই তা শেষ হয়ে যেতো ফলে সাধারণ যাত্রীরা টিকিট পেতেন না৷
এই সিন্ডিকেট পরে টিকিটগুলো বেশি দামে বিক্রি করতো৷ এতে সাধারণ যাত্রীদের কাছ থেকে কখনো কখনো প্রকৃত ভাড়ার দ্বিগুণ থেকে তিন গুণ আদায় করতেন তারা৷ বিভিন্ন উৎসব, ছুটির দিন বিশেষ করে ঈদের সময় এই সংকট তীব্র আকার ধারণ করে৷
তবে আগামীকাল বুধবার থেকে আন্তঃনগর ট্রেনে ভ্রমণ ও টিকিট কেনার জন্য যাত্রীদের জাতীয় পরিচয়পত্র বা জন্ম নিবন্ধন সনদ সঙ্গে রাখতে হবে৷
এভাবে একজন যাত্রী একসঙ্গে সর্বোচ্চ ৪টি টিকিট কিনতে পারবেন, তবে ওই ব্যক্তিকে অবশ্যই ট্রেনে ভ্রমণ করতে হবে এবং তার সঙ্গে যে ৩ জন থাকবেন তাদের জাতীয় পরিচয়পত্র বা জন্ম নিবন্ধন কার্ড সঙ্গে রাখা বাধ্যতামূলক নয়৷
প্রতি মাসে ঢাকা থেকে রাজশাহী ভ্রমণকারী আহমেদ শফিক বলেন, এই উদ্যোগের ফলে কালোবাজারিরা আর টিকিটি নিয়ে তেমন একটা কারসাজি করতে পারবেন না৷
ঢাকা থেকে দিনাজপুরে ট্রেনে যাতায়াত করা মো. সুমন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সাধারণত টিকিট বিক্রি শুরুর আধা ঘণ্টার মধ্যে অনলাইনে আর টিকিটি পাওয়া যেত না৷ জাতীয় পরিচয়পত্রের মাধ্যমে টিকিট বিক্রির যে নিয়ম চালু হচ্ছে এতে আশা করি এই সমস্যা আর হবে না৷ এখন কালোবাজারিরা আর তেমন একটা কারসাজি করতে পারবেন না৷ তবে অবশ্যই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে কঠোর নজরদারি রাখতে হবে৷'
কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের ম্যানেজার মোহাম্মদ মাসুদ সারওয়ার ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আগামীকাল বুধবার থেকে টিকিট যার ভ্রমণ তার চালু হবে৷ ট্রেনের ভেতরে বিষয়টি ভালোভাবে যাচাই করা হবে৷ কেউ আর অন্যের টিকিট দিয়ে ভ্রমণ করতে পারবেন না৷ সবাইকে ভ্রমণের সময় জাতীয় পরিচয়পত্র বা জাতীয় জন্ম নিবন্ধন সনদ সঙ্গে রাখতে হবে৷'
এই উদ্যোগের ফলে টিকিট কালোবাজারিরা তেমন একটা সুবিধা করতে পারবেন জানিয়ে সবাইকে সহযোগিতা করার আহ্বান জানান তিনি৷
এনএস/এসিবি (দ্য ডেইলি স্টার)