1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

শিশুদের গরু জবাই দেখানো কি উচিত?

২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২১

‘জবাই জবাই খেলায় ৮ বছরের শিশুর হাতে ছোট ভাইয়ের মৃত্যু’ শিরোনামটি দেখে শিউরে উঠলাম ৷ হ্যাঁ, এমন মর্মান্তিক ঘটনাই বগুড়ার ধুনট উপজেলায় ঘটেছে৷ কিন্তু এর জন্য দায়ী কারা?

https://p.dw.com/p/3pjbK
Screenshot | bdnews24 zu Artikel zu Kindesmord
ছবি: bdnews24.com

ধুনট উপজেলায় আট বছর বয়সি বড়ভাই খেলার ছলে বটি দিয়ে গরু জবাই করা দেখাতে গিয়ে পাঁচ বছর বয়সি ছোটভাইয়ের গলা কেটে ফেলায় তার মৃত্যু হয়৷ রোববার বিকেলে এক প্রেস ব্রিফিং-এ বগুড়ার পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভূঞা বাংলাদেশে ডয়চে ভেলের কন্টেন্ট পার্টনার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে একথা জানান৷

গত শুক্রবার আট এবং পাঁচ বছর বয়সি দুই শিশু সন্তানের মা দুলালী খাতুন বাড়ির কাছেই জমিতে কাজ করছিলেন৷ সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বাড়িতে বড় কেউ উপস্থিত ছিল না৷ তখনই শোবার ঘরে দুই ভাই গরু জবাই খেলতে শুরু করে৷ সেই খেলাই কেড়ে নেয় একটি জীবন৷

কোনটা খেলা আর কোনটা খেলা নয় তা বোঝার ক্ষমতা ওই শিশুদের নেই৷ এটা বুঝিয়ে দেওয়ার প্রথম দায়িত্ব মা-বাবা বা পরিবারের বড়দের৷ তবে ধুনট উপজেলায় ওই দুই শিশুর বাবা গেছেন মালয়েশিয়ায়৷ মা-কেও ব্যস্ত থাকতে হয় কাজে৷ কাজেই এই দুই শিশুর মা-বাবার আসলে সন্তানদের মনস্তত্ত্ব নিয়ে ভাবার সুযোগই হয়ত ছিল না৷

তবে আমরা দেখেছি কোরবানী ঈদে গরু জবাই করার দৃশ্য অনেক পরিবারের শিশুদেরই দেখানো হয়৷ শিশুরাও দেখে দেখে অভ্যস্ত হয়ে যায় বা আনন্দ পায়৷ তবে শিশুদের ছোট্ট মনে এর বিরূপ কোনো প্রভাব পড়ে কিনা তা নিয়ে হয়ত ভাবা হয় না৷ বিদেশ থেকে অনেকেই সন্তানদের নিয়ে দেশে কোরবানী ঈদ করতে যায়৷ বিদেশে জন্ম বা বড় হওয়া অনেক ছেলে-মেয়ের মুখেই আমি শুনেছি, কোরবানী ঈদের সব আনন্দ ওরা উপভোগ করে ঠিকই, তবে গরু জবাই করার দৃশ্যটি ছাড়া৷ ওরা মনে করে, সে দৃশ্য বড়ই নিষ্ঠুর! আমারও মনে হয়, গরু জবাইয়ের সময় অবুঝ শিশুদের সামনে না থাকাই উচিত৷

Nurunnahar Sattar, DW-Mitarbeiterin Bengali Programm
নুরুননাহার সাত্তার, ডয়চে ভেলেছবি: DW/A. Islam

দুই ভাইয়ের কাছে গরু জবাই করার বিষয়টি ছিল কেবলই খেলা৷ এর ঝুঁকি সম্পর্কে ওদের কোনো ধারণা ছিল না৷ ফলে ব্যাপারটি মৃত্যু পর্যন্ত গড়িয়েছে৷ উন্নত বিশ্বে শিশুদের একা বাড়িতে রেখে যাওয়ার ক্ষেত্রে রয়েছে নানা নিয়ম-কানুন৷ এত ছোট শিশুদের একা বাড়িতে রাখার কারণে জার্মানিতে কোনো মারাত্মক ঘটনা ঘটলে সাধারণত বাবা-বাবাকেই দায়ী করা হয়ে থাকে ৷ বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে স্বাভাবিকভাবে সেসব নিয়ম-নীতি পুরোপুরি মানা হয়ত সম্ভব নয়৷ তবে কিছুটা হলেও সতর্ক থাকা উচিত৷ বটি, ছুরি ইত্যাদি ধারালো জিনিস বাচ্চাদের হাতের কাছে না থাকলেও তো সেদিন এত বড় ‘দূর্ঘটনা' এড়ানো সম্ভব হতো৷

পাচ বছর বয়সি তাওহীদ ধুনট উপজেলার এলাঙ্গী ইউনিয়নের ফকিরপাড়া গ্রামের মালেয়শিয়া প্রবাসী আব্দুল গফুর সরকারের ছেলে৷ নিহত তাওহীদের দাদা আসামির নাম উল্লেখ না করে থানায় একটি হত্যা মামলা করেন৷ মামলার তদন্তের প্রয়োজনে শিশুর পরিবারের সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদ করার পর পুলিশ সুপার জানান, ওই ঘরে নিহতের আট বছর বয়সি ভাইয়ের উপস্থিতির প্রমাণ পাওয়া গেছে এবং সে এ ঘটনার বর্ণনাও দিয়েছে৷ আইন অনুযায়ী ৮ বছরের শিশুর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের সুযোগ নেই৷ এ কারণে ওই শিশুকে তার পরিবারের কাছেই হস্তান্তর করা হয়েছে৷

কিন্তু আট বছর বয়সি ছেলেটি না বুঝে নিজের হাতে খুন করা ভাইকে কি ভুলে যেতে পারবে ? শিশুর মা কিংবা পরিবারের অন্যরা কি ভুলতে পারবে অসতর্কতার এমন পরিনামের কথা?

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান