1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

শান্তিসেনা নিয়ে মমতাকে কটাক্ষ শশীর, মানিকের দুঃখপ্রকাশ

৪ ডিসেম্বর ২০২৪

মঙ্গলবার দিনভর বাংলাদেশ নিয়ে সরগরম ছিল ভারতীয় রাজনীতি। দিল্লি থেকে উত্তর-পূর্ব সর্বত্রই আলোচনায় ছিল এই প্রসঙ্গ।

https://p.dw.com/p/4niKC
আগতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাই কমিশন
আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাই কমিশনছবি: Asien, Indien, Bangladesch, Tripura, Konsulat, Diplomatie, diplomatischer Konflikt, Schließung, Politik

সোমবার পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেছিলেন, কেন্দ্রীয় সরকার জাতিসংঘের সঙ্গে আলোচনা করে বাংলাদেশে শান্তিবাহিনী বা পিস কিপিং ফোর্স পাঠানোর ব্যবস্থা করুক। মঙ্গলবার পার্লামেন্টে সেই প্রসঙ্গ উত্থাপন করেন প্রবীণ তৃণমূল সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। যদিও সুদীপ যখন একথা বলছেন, তখন স্পিকার পরবর্তী বক্তার নাম ঘোষণা করে দেন।

তৃণমূলের এই দাবি নিয়ে তাদের শরিক দলের মধ্যেই অস্বস্তি তৈরি হয়েছে। মঙ্গলবার সংসদ চত্বরে কংগ্রেস সাংসদ শশী থারুর বলেন, ''মমতা সম্ভবত শান্তিবাহিনীর বিষয়ে ভালো করে জানেন না। আমি বহুদিন সেখানে কাজ করেছি। কোনো দেশ নিজে থেকে না চাইলে সেখানে শান্তিবাহিনী পাঠানো যায় না।'' বস্তুত, শশী খানিক কটাক্ষের সুরেই বলেছেন, তৃণমূলনেত্রী 'স্ট্রিট পলিটিক্সে'র মানুষ, সে জন্যই হয়তো তিনি জাতিসংঘের বিষয়ে খুব বেশি জানেন না।

শশীর এই মন্তব্যের পর পার্লামেন্টের ভিতরে দৃশ্যত কংগ্রেসের সঙ্গে তৃণমূলের দূরত্ব বেড়েছে। শুধু তা-ই নয়, শশীকে পাল্টা আক্রমণ করেছেন তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। তার বক্তব্য, ''তিনি তো বিরাট পণ্ডিত, তাহলে শান্তি ফেরানো নিয়ে কোনো কথা বলছেন না কেন?''

বস্তুত, শশীর মন্তব্যেরই প্রতিধ্বনি শোনা গেছে ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অন্দরে। মন্ত্রণালয়ের এক অফিসার ডয়চে ভেলেকে বলেছেন, ''কূটনৈতিকভাবে মুখ্যমন্ত্রীর এই মন্তব্য ভিত্তিহীন। এভাবে এক দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে অন্য দেশ হস্তক্ষেপ করতে পারে না।'' শুধু তা-ই নয়, এভাবে যে শান্তিবাহিনীর বিষয়ে দাবি জানানো যায় না, তা-ও স্পষ্ট করে দিয়েছেন তিনি।

তবে তৃণমূলের সূত্র জানাচ্ছে, এবিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে আলাদা করে আলোচনা করেছে তৃণমূল। তারা চাইছে, আগামী ১০ ডিসেম্বর ভারতীয় পররাষ্ট্র সচিব ঢাকা সফরে গিয়ে বিষয়টি উত্থাপন করুন। যদিও বাস্তবে তা ঘটবে কি না, তা নিয়ে সংশয় যথেষ্ট।

মানিক সাহার দুঃখপ্রকাশ

এদিকে সোমবার আগরতলায় বাংলাদেশ সহকারী হাই কমিশনে যে হামলার ঘটনা ঘটেছে তা নিয়ে প্রকাশ্যে দুঃখপ্রকাশ করেছেন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা। বিজেপিশাসিত এই রাজ্যে বেশ কিছুদিন ধরেই নানা ঘটনা ঘটছে। মানিক বলেছেন, 'বাংলাদেশের হিন্দুদের উপর ব্যাপক আক্রমণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে কিছু সংখ্যক লোক আগরতলা সার্কিট হাউসের গান্ধীমূর্তির পাদদেশে জড়ো হয়ে শান্তিপূর্ণ ধর্না প্রদর্শন করছিলো কিন্তু কিছু যুবক আচমকাই আগরতলাস্থিত বাংলাদেশ সহকারী হাই কমিশনের অফিসে ঢোকার চেষ্টা করে। আমি এই ঘটনার নিন্দা জানাই। শান্তিপূর্ণ আন্দোলন/প্রতিবাদ চলতেই পারে কিন্তু এই ধরনের আচরণ একেবারেই কাম্য নয়।'

উল্লেখ্য, ওই ঘটনার জেরে মঙ্গলবার আগরতলায় বাংলাদেশ সহকারী হাই কমিশন তাদের সমস্ত কনসুলার পরিষেবা বন্ধ করে দিয়েছে। এর ফলে সমস্যায় পড়বেন গোটা উত্তর-পূর্ব ভারতের মানুষ। আগরতলা থেকেই এই অঞ্চলের মানুষ ভিসা পরিষেবা নেন। আগরতলার অফিস বন্ধ হয়ে যাওয়ার অর্থ তাদের কলকাতায় যেতে হবে।

ঘটনাটির তীব্র নিন্দা করেছে কংগ্রেস। ত্রিপুরা প্রদেশ কংগ্রেসের মুখপত্র প্রবীর চক্রবর্তী বলেছেন, ''এই ঘটনা ত্রিপুরার মাথা হেঁট করে দিয়েছে।''

তবে মঙ্গলবার থেকেই আগরতলায় বাংলাদেশ সহকারী হাই কমিশনের বাইরে বিরাট নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। ত্রিপুরার অন্যান্য অঞ্চলে বাংলাদেশ বিষয়ক যত কার্যালয় আছে, সর্বত্র নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। উল্লেখ্য, ত্রিপুরার এই ঘটনা নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারও ত্রিপুরা সরকারকে ভর্ৎসনা করেছে।

এসবি/এসজি (পিটিআই)