জাপানে তেজস্ক্রিয় বিকিরণের বিপদ এখনো কাটে নি
১৬ মার্চ ২০১১ভূমিকম্প ও সুনামির মতো প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের প্রভাব ঘটনার ঠিক পরেই বোঝা গেছে৷ কিন্তু ফুকুশিমার দাইইচি পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্রে বিপর্যয় ও তেজস্ক্রিয় বিকিরণের প্রভাব নিয়ে অনিশ্চয়তা এখনো কাটছে না৷ বিকিরণের মাত্রা, সেই মাত্রায় হেরফের, তার স্থায়িত্ব, কত বড় এলাকা জুড়ে তা ছড়িয়ে পড়ছে বা পড়বে – এসব প্রশ্নের কোনো সহজ উত্তর এখনো পাওয়া যাচ্ছে না৷ আপাতত সবার নজর ৫ ও ৬ নম্বর চুল্লির দিকে৷ বুধবার এক সাংবাদিক সম্মেলনে জানানো হয়েছে, যে এই দুটি চুল্লি ঠাণ্ডা করতে জল ঢালা হচ্ছে৷ এর আগে হেলিকপ্টারের মাধ্যমে আকাশ থেকে ফুকুশিমার চুল্লিগুলির উপর জল ঢালার পরিকল্পনা নেওয়া হলেও তেজস্ক্রিয় বিকিরণের মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় শেষ পর্যন্ত সেই ঝুঁকি নেওয়া হয় নি৷ মার্কিন সামরিক বাহিনীর দমকল ট্রাক আগুন নেভানোর কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে৷ জাপানের সম্রাট আকিহিতো জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া বিরল এক ভাষণে দেশে বিপর্যয়ের ফলে চরম দুঃখ ও সমবেদনা প্রকাশ করেন৷ সেইসঙ্গে তিনি বিকিরণের আশঙ্কার ফলে গভীর দুশ্চিন্তার কথাও বলেন৷
বিদেশী নাগরিকরা টোকিও ছাড়ছেন
বিশ্বের বিভিন্ন দেশ জাপানে তাদের নাগরিকদের সতর্ক করে দিচ্ছে৷ গত কয়েক দিনের মতো আজও অনেক বিদেশী প্রতিনিধি টোকিও ছেড়ে দেশের দক্ষিণের দিকে রওনা হয়েছেন৷ জার্মান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সেদেশের নাগরিকদের এমন পরামর্শ দিয়েছে৷ জাপান ভ্রমণের ক্ষেত্রেও সতর্কতা জারি করেছে কিছু দেশ৷ অস্ট্রেলিয়া সেদেশের নাগরিকদের জাপান ছেড়ে চলে যাবার পরামর্শ দিয়েছে৷ তবে দেশ ছাড়ার হিড়িক সত্ত্বেও বিমানবন্দরগুলিতে কোনো অরাজকতা বা অচলাবস্থা দেখা যাচ্ছে না৷
বাকিদের ভাবনা
জার্মানি সহ অন্যান্য অনেক দেশের মতো চীনও পরমাণু শক্তি নিয়ে নতুন করে ভাবনা-চিন্তা করছে৷ সেদেশের কর্তৃপক্ষ নতুন পরমাণু বিদ্যুৎ প্রকল্পের অনুমোদন আপাতত বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে৷ রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভ অবশ্য মন্তব্য করেছেন, যে সামগ্রিকভাবে পরমাণু শক্তি নিয়ে আশঙ্কার কোনো কারণ নেই৷ পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র শুধু সঠিক স্থানে অবস্থান, সঠিক ডিজাইন ও ঠিকমতো পরিচালনা করাই আসল কথা৷
প্রতিবেদন: সঞ্জীব বর্মন
সম্পাদনা: রিয়াজুল ইসলাম