জাপানে তেজস্ক্রিয়তা ছড়িয়ে পড়ছে
১৫ মার্চ ২০১১সর্বশেষ পরিস্থিতি
মঙ্গলবার সকালে জাপানের দাইচি পরমাণু কেন্দ্রের দুই নম্বর চুল্লিতে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে৷ যে কারণে তেজস্ক্রিয়তা ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে৷ এবং বাতাসের মাধ্যমে তা টোকিও'র দিকে এগিয়ে যাচ্ছে বলে খবর পাওয়া গেছে৷ সরকার বলছে, এই তেজস্ক্রিয়তার মাত্রা স্বাস্থ্যের জন্য হুমকিস্বরূপ৷ তাই ঐ পরমাণু কেন্দ্রের ৩০ কিলোমিটারের মধ্যে সব মানুষকে হয় সরে যেতে, না হয় ঘরে থাকতে বলা হয়েছে৷ তবে আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা আইএইএ বলছে, তেজস্ক্রিয়তার মাত্রা ধীরে ধীরে অনেক কমে এসেছে৷ এদিকে পরমাণু কেন্দ্রের চার নম্বর চুল্লিতেও আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে আজ৷ আর ৫ ও ৬ নম্বর চুল্লিগুলো উত্তপ্ত হয়ে উঠছে বলে জানিয়েছেন সরকারের এক মুখপাত্র৷ ফলে দেখা যাচ্ছে, পরমাণু কেন্দ্রের ছয়টি চুল্লিতেই কোনো না কোনো সমস্যা দেখা দিয়েছে৷ কেননা এর আগে ১ ও ৩ নম্বর চুল্লিতে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছিল৷
মানুষের মধ্যে প্রতিক্রিয়া
ভয়ে মানুষ টোকিও ছেড়ে যাচ্ছে৷ কেউ বা বেশি করে খাবার কিনে ঘরেই থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে৷ কয়েকটি দেশ তাদের দূতাবাসের কর্মীদের নিরাপদ জায়গায় চলে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে৷ যেমনটা করেছে বাংলাদেশও৷ পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপু মনি আজ সাংবাদিকদের বলেছেন যে, তারা খবর পেয়েছেন যেখানে বাংলাদেশ দূতাবাস অবস্থিত সেটা বিপদমুক্ত নয়৷ তাই দূতাবাসের কর্মীদের নিরাপদ জায়গায় সরে যেতে বলা হয়েছে৷ এছাড়া জাপানে থাকা ১২ হাজার বাংলাদেশিকেও সরে যেতে বলা হয়েছে৷ টোকিওতে থাকা বিভিন্ন কোম্পানিও তাদের কর্মীদেরও নিরাপদে সরে যেতে বলেছে৷ এদিকে জার্মানির বিমান সংস্থা লুফটহানসা টোকিওতে বিমান না নামিয়ে পাশের কোনো শহরে নামানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে৷
জার্মানির প্রতিক্রিয়া
গত দুই দিনে দু'টি সিদ্ধান্ত দিয়েছেন চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল৷ গতকাল সোমবার তিনি পরমাণু কেন্দ্রগুলির মেয়াদ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত আপাতত তিন মাসের জন্য স্থগিত করেছেন৷ আর আজ মঙ্গলবার তিনি সরাসরি পুরানো সাতটি পরমাণু কেন্দ্র বন্ধের ঘোষণা দিলেন, যেগুলো ১৯৮০ সালের আগে থেকে চালু রয়েছে৷ ম্যার্কেল বলছেন, এগুলো আগামী তিনমাস বন্ধ থাকবে৷ তবে এরপর এগুলো আবার চালু হবে কি না তা এই মুহূর্তে বলা যাচ্ছে না৷ তবে স্থানীয় গণমাধ্যম বলছে এই মাসে জার্মানির তিনটি রাজ্যে নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে৷ সেগুলোতে সাফল্য পেতেই ম্যার্কেল এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন৷
প্রতিবেদন: জাহিদুল হক
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন