ঈদে বাড়ি ফেরা, পরিস্থিতি এবার আরও সঙ্গিন
২৬ আগস্ট ২০১১প্রথমে তাকানো যাক এক ব্যক্তির দিকে৷ নাম তাঁর শাজাহান আলি৷ ঢাকার মীরপুরের বাসিন্দা শাজাহানের আসল বাড়ি চট্টগ্রামে৷ প্রতি বছর ঈদের সময়ে পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাতে তিনি বাড়িতে যান৷ গত বছর এই সময়ে বাড়ি যেতে তাঁর সময় লেগেছিল ১৪ ঘন্টা৷ আর এ বছর? ‘কী হবে, কখন পৌঁছাবো, তা আল্লাই জানেন৷' বলছেন শাজাহান৷ হাতে তাঁর বাসের টিকিট৷ কিন্তু বাস যথাস্থানে কতক্ষণে পৌঁছবে, তা বলার সাধ্য কারওই নেই৷
কিন্তু কেন এই পরিস্থিতি৷ সাংবাদিক কবি হুমায়ূন রেজা এর কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে প্রথমেই মনে করিয়ে দেন ক'দিন আগেই প্রখ্যাত চলচ্চিত্র পরিচালক তারেক মাসুদ এবং এটিএন বাংলা টিভি চ্যানেলের সংবাদ দপ্তরের প্রধান. টেলিভিশন ব্যক্তিত্ব মিশুক মুনিরের পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যুর প্রসঙ্গ৷ সেই মর্মান্তিক ঘটনার প্রসঙ্গ টেনে রেজা জানান, এই ঘটনার পর থেকেই মিডিয়া উঠেপড়ে লেগেছে মহাসড়ক আর অন্যান্য পথের পরিস্থিতি নিয়ে৷ তাতে দেখা যাচ্ছে, পরিস্থিতি যেদিকে, তাতে এবারের ঈদেও ভোগান্তিতেই পড়বেন লাখো লাখো মানুষ৷
এর কারণটাও স্পষ্ট৷ বলছেন রেজা৷ বলছেন, পরিকাঠামোগত উন্নয়নের দিকে সারা বছর সেভাবে দৃষ্টি দেওয়া হয়না৷ ঈদের মুখে বেশি বাস চলানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েও বাস মালিকরা বেশি মুনাফার আশায় সেই কম বাস দিয়েই বেশি যাত্রী পরিবহণের চেষ্টা করে থাকেন৷ ফলে দুর্ঘটনা আর অঘটনের আশঙ্কা বাড়ে বই কমে না৷ গত বছরেই ঈদের সময়ে লঞ্চডুবি হয়ে ৮৫ জনের সলিল সমাধি হয়েছিল৷ সেদিকেও দৃষ্টি আকর্ষণ করে সেকথা মনে করিয়ে দেন রেজা৷
সমস্যা তার জায়গাতেই হয়তো আছে৷ তার মধ্যে তো জীবন থেমে যাবে না৷ বৃহস্পতিবার রাত থেকেই দূরের যাত্রীরা ঢাকা ছাড়তে শুরু করে দিয়েছেন৷ দেখা যাচ্ছে লঞ্চঘাটে, বাস টার্মিনাসে প্রত্যাশী মানুষের ভীড়৷ ঘরে ফেরার, আপনজনের সঙ্গে মিলিত হওয়ার আসন্ন আগামীর স্বপ্ন তাঁদের চোখেমুখে৷
সেই প্রত্যাশাটি, সেই স্বপ্নটি পূরণ করে ঈদের আনন্দ সম্পূর্ণ হয়েই ধরা দিক সকলের কাছে৷
প্রতিবেদন: সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়
সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক