1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান
সমাজইটালি

ইটালির প্রধানমন্ত্রী হওয়ার দৌড়ে ডানপন্থি জর্জা মেলোনি

২১ সেপ্টেম্বর ২০২২

‘ফ্যাসিস্ট' বললে তিনি গায়ে মাখেন না৷ ইউরোপীয় ইউনিয়নকে বলেন, ‘অযোগ্য'৷ প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে ভয়ঙ্কর সব তোপ দাগেন হাসিমুখে৷ এভাবেই ইটালির প্রধানমন্ত্রী হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে চলেছেন ডানপন্থিদের ভীষণ প্রিয় জর্জা মেলোনি৷

https://p.dw.com/p/4HA2j
Italien Wahlkampf, Giorgia Meloni in Cagliari
ছবি: Alexandra von Nahmen/DW

২৫ সেপ্টেম্বরের সাধারণ নির্বাচনকে সামনে রেখে জর্জা মেলোনি যেখানেই যাচ্ছেন সেখা্নেই জমছে উপচে পড়া ভিড়৷ ক্যালিয়ারির সভা শুরুর অনেক আগে সভাস্থলে হাজির হয়ে যান মারসেডেস উসাই৷ মেলোনির দল ‘ব্রাদার্স অব ইটালি' (ফ্রাটেলি ডি'ইটালিয়া)-র সদস্য এই তরুণী দেশের বাকি দলগুলোর ওপর ভীষণ বিরক্ত৷ জ্বালানি সংকট, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি, মুদ্রাস্ফীতিসহ চলমান সব সংকটের জন্যই প্রতিপক্ষকে মেলোনি যেভাবে দায়ী করেন, ঠিক সেই সুরে কথা বলেন মারসেডেস৷ ২ সেপ্টেম্বর সার্ডিনিয়ার সবচেয়ে বড় শহর ক্যালিয়ারির সভার আগে তাকে বলতে শোনা যায়, ‘‘আমি মেলোনিকে বিশ্বাস করি! তার যে শক্তি তাতে অগাধ আস্থা আমার!''

সর্বশেষ জনমত জরিপে বেশ এগিয়েছিলেন ৪৬ বছর বয়সি মেলোনি৷ মার্সেডেস উসাইয়ের মতো অনেকেই এখন মনে করেন, এবার হয়ত প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী পেতে চলেছে ইটালি৷

নির্বাচনি সভায় মেলোনি বারবার ঠোঁটে একটা চওড়া হাসি ঝুলিয়ে বলছেন, ক্ষমতায় গেলে দ্রব্যমূল্য, জ্বালানিসংকট ইত্যাদির কারণে মানুষ, বিশেষ করে ছাত্রসমাজ এবং ব্যবসায়ীরা যে কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন, তার অবসান হবে৷

এ মুহূর্তে অবশ্য কৌশলে কিছুটা পরিবর্তন এনেছেন জর্জা মেলোনি৷ কথা বলছেন একটু বুঝে-শুনে, সাবধানে৷ দলের অতীত ফ্যাসিজম-সংশ্লিষ্টতার কথা ভোলানোর চেষ্টায় সবসময় তৎপর তিনি৷ যদিও এখনো অনেক মুসোলিনি-সমর্থকই তার দলের সঙ্গে রয়েছে বলে বিশ্লেষকদের অভিযোগ৷

Italien Wahlkampf, Giorgia Meloni in Cagliari
মেলোনির দল ‘ব্রাদার্স অব ইটালি:র সদস্য মার্সেডেস উসাউছবি: Adriaan De Loore/DW

আগের মতো ইটালিকে ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বের করে নেয়ার কথাও আর বলেন না মেলোনি৷ তবে ইউরাপীয় ইউনিয়নের সমালোচনাও কম করেন না৷ ক্যালিয়ারির সভায় উপস্থিত সবাইকে ‘‘শুভসন্ধ্যা'' বলেই মেলোনি শুরু করেছিলেন ইটালিতে মানুষের বর্তমান দুর্ভোগের জীবনের বর্ণনা৷ তারপর বামপন্থি, মধ্যপন্থিসহ সব প্রতিপক্ষের সমালোচনা চলল কিছুক্ষণ৷ তারপরই এলো ইউরোপীয় ইউনিয়ন প্রসঙ্গ এবং সেখানে মেলোনি আবার বললেন পুরোনো কথাটা৷ বললেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ইউরোপের মানুষকে ভালো রাখতে অক্ষম, তারা অযোগ্য, নইলে এমন জ্বালানি সংকট, অর্থনৈতিক সংকট কখনোই দেখা দিতো না৷

ওরা কি নারী-শিশুদের যুদ্ধ করার জন্য রেখে এসেছে?'

মেলোনির ‘ব্রাদার্স অব ইটালি' দল ঘোর অভিবাসনবিরোধী৷ ইটালিতে যারা অভিবাসী হয়েছেন বা হতে চাইছেন, তাদের প্রসঙ্গে কথা বলতে গেলে ইউক্রেনীয় শরণার্থীদের বিষয়টি টেনে আনেন৷ তারপর সবার কাছে জানতে চান, ‘‘আপনারা কি ইউক্রেনীয় শরণার্থীদের দেখেছেন? দেখেছেন নারী এবং শিশুরা কেমন করে পালিয়ে চলে আসছে?'' শ্রোতারা তখন বলে ওঠেন, ‘‘হ্যাঁ, দেখেছি৷'' মেলোনি আবার বলতে থাকেন, ‘‘কিন্তু ভূমধ্যসাগর দিয়ে যারা আসছেন, তাদের দেখুন৷ তাদের অধিকাংশই পুরুষ কেন? সব পুরুষ যদি চলে আসে, তাহলে এমন তো হতেই পারে যে তারা কোনো যুদ্ধের কারণে প্রাণ বাঁচাতে এখানে আসছেন না৷ না হলে তো বলতে হবে তারা সব নারী আর শিশুকে যুদ্ধ করার জন্য রেখে নিজে এখানে চলে এসেছেন৷ তেমন কিছু হয়েছে বলে তো আমার মনে হয় না৷''

ওরা শুধু ইটালীয় ধর্ষকের শিকারদের প্রতি সহানুভূতিশীল'

কয়েক দিন আগে তার দলের সমর্থকরা একটা ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছেড়ে দেয়৷ ভিডিওটিতে উঠে এসেছে এক ইউক্রেনীয় নারীর ধর্ষণের শিকার হওয়ার ঘটনা৷ ধর্ষণের অভিযোগ এক আফ্রিকানের বিরুদ্ধে৷ভিডিওটি প্রচার করায় মেলোনি এবং তার দলের তীব্র সমালোচনা শুরু হয়৷ মেলোনি চুপ না করে বা দুঃখ প্রকাশ না করে শুরু করেন পাল্টা আক্রমণ৷সমালোচকদের উদ্দেশ্যে তার একটাই কথা- ইটালির কেউ কোনো নারীকে ধর্ষণ করলেই কেবল ওরা ধর্ষিতার প্রতি সহানুভূতি দেখায়, তার প্রতি সহমর্মিতা প্রকাশ করে৷

আলেক্সান্দ্রা ফন নামেন/ এসিবি