1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ইউএনওর ওপর হামলার উদ্দেশ্য এখনো অস্পষ্ট

হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
৫ সেপ্টেম্বর ২০২০

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ওয়াহিদা খানমের ওপর হামলার কারণ এখনো স্পষ্ট নয় বলে জানিয়েছেন তদন্ত কর্মকর্তা মোমিনুল ইসলাম৷ আর যুবলীগ নেতা জাহাঙ্গির হোসেনকে র‌্যাব ধরেছে আবার র‌্যাবই ছেড়ে দিয়ছে বলে উল্লেখ তিনি৷

https://p.dw.com/p/3i2oh
Bangladesch | Wahida Khanam - Regierungsmitarbeiter von Angreifern schwer verletzt
ছবি: bdnews24

তিনি বলেন ‘‘যে তিনজনকে এখনো আটক রাখা হয়েছে তাদের এই মামলায় সন্দেহজভাজন হিসেবে আটক করা হয়েছে৷ এখনো মামলার আসামি হিসেবে আদালতে পাঠানো হয়নি৷ জিজ্ঞাসাবাদ চলছে৷ সবকিছু পরিষ্কার হতে আরো সময় লাগবে৷’’

বুধবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে ইউএনও'র সরকারি বাসার দারোয়ানকে বেঁধে ভবনের ভেন্টিলেটর ভেঙে দুর্বৃত্তরা ঘরের ভিতর প্রবেশ করে এবং ওয়াহিদা খানমকে হাতুড়িপেটা ও কুপিয়ে জখম করে

এসময় তার বাবার ওপরও হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা৷ মাথায় গুরুতর আঘাত পান ওয়াহিদা৷ ঢাকার আগারগাঁওয়ে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস অ্যান্ড হসপিটালে ওয়াহিদা খানমের চিকিৎসা চলছে৷

হামলার পর বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে র‌্যাব ও পুলিশ যৌথ অভিযান চালিয়ে মোট ছয় জনকে আটক করে৷

এর মধ্যে ঘেড়াঘাট উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক জাহাঙ্গির হোসেনসহ তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদের পর শুক্রবার ছেড়ে দেয়া হয়েছে৷ এখন আটক আছে আসাদুল ইসলাম, নবীরুল ইসলাম ও সান্টু কুমার৷

‘সবকিছু পরিষ্কার হতে আরো সময় লাগবে’

এ তিনজনের মধ্যে আসাদুল ইসলাম উপজেলা যুবলীগের সদস্য৷ তাকে ও যুবলীগের আহ্বায়ক জাহাঙ্গির হোসেনকে শুক্রবার সংগঠন থেকে বহিস্কার করা হয়েছে৷

জাহাঙ্গির হোসেনকে শুক্রবার বিকেলে ছেড়ে দেয়া হয়৷ র‌্যাব-১৩ এর অধিনায়ক কমান্ডার রেজা আহমেদ ফেরদৌস শুক্রবার সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘‘জাহাঙ্গির হোসেনকে সন্দেহজনকভাবে আটক করা হয়েছিল৷ কিন্তু প্রাথমিকভাবে তদন্তে তার কোনো সম্পৃক্ততা না পাওয়ায় তাকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে৷ প্রয়োজনে তাকে আবার জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে৷’’

তিনি আরো বলেন, ‘‘চুরির উদ্দেশ্যে ইউএনও'র ওপর হামলা করা হয়েছে৷ আসাদুলসহ আটক তিনজন তা স্বীকার করেছেন৷’’

কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে যুবলীগের আহ্বায়ক জাহাঙ্গির হোসেনকে কোন ধরনের তথ্য আর সন্দেহের ভিত্তিতে আটক করা হয়েছিল? আবার সুনির্দিষ্ট কোন তথ্যের ভিত্তিতে ছেড়ে দেয়া হলো?

এ নিয়ে র‌্যাব শুক্রবারের সংবাদ সম্মেলনের বাইরে আর কোনো কথা বলতে নারাজ৷ আর তদন্ত কর্মকর্তা ও ঘোড়াঘাট থানার ওসি (তদন্ত) মমিনুল ইসলাম বলেন, ‘‘জাহাঙ্গির হোসেনকে র‌্যাব আটক করেছিল আবার র‌্যাবই ছেড়ে দিয়েছে৷ এ ব্যাপারে আমরা কিছু জানি না৷ র‌্যাব এই মামলার তদন্ত করছে না৷’’

চুরির উদ্দেশ্যে হামলা কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘‘মোটিভ সম্পর্কে এখনো কোনো ধারণা তদন্তে পাওয়া যায়নি৷ আটক তিনজনের দুইজনকে এখন পর্যন্ত আমাদের হাতে দেয়া হয়েছে৷ একজন এখনো র‌্যাবের হেফাজতে আছে৷ এদের কাউকেই আমরা মামলার সরাসরি আসামি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করিনি৷ তাদের সন্দেহজনকভাবে আটক দেখানো হয়েছে৷’’

মামলার সরেজমিন তদন্তও শুরু হয়েছে৷ হামলার সময় ব্যবহৃত হাতুড়ি উদ্ধার করা হয়েছে৷ এই মামলায় নতুন আর কাউকে আটক করা হয়নি বলে জানান তিনি৷

জানা গেছে, দুই-একদিনের মধ্যে মামলার তদন্তের ভার গোয়েন্দা বিভাগকে (ডিবি) দেয়া হতে পারে৷

ইউএনওদের নিরাপত্তায় আনসার

ওয়াহিদা খানমের ওপর হামলার পর ইউএনওদের নিরাপত্তার জন্য চার জন করে আনসার দেয়া হয়েছে৷ তারা ইউএনওদের আবাসস্থল ও শারীরিক নিরাপত্তায় নিয়েজিত থাকবেন৷ বেশ কয়েকজন ইউএনও'র সাথে কথা বলে জানা গেছে, সরকারের নির্দেশের পর তারা তাদের নিরাপত্তায় এরইমধ্যে আনসার পেয়েছেন৷ তবে আদেশে সশস্ত্র আনসারের কথা থাকলেও কোথাও কোথাও নিরস্ত্র আনসার সদস্য দেয়া হয়েছে৷

ইউএনওরা মনে করেন তাদের বন্দুকধারী নিরাপত্তরক্ষী প্রয়োজন৷ ২০১৮ সালে ডিসি সম্মেলনে এই দাবিটি তোলা হয়েছিল৷ তখন প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে সম্মতিও দেয়া হয়েছিল৷ কিন্তু পরে তা আর কার্যকর হয়নি বলে একজন ইউএনও জানান৷

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে কথা বলে জানা গেছে, ইউএনও ওয়াহিদা খানমের ওপর হামলার পর উদ্বিগ্ন ইউএনওদের সার্বিক নিরাপত্তায় তাৎক্ষনিকভাবে চারজন করে সশস্ত্র আনসার দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়৷ কিন্তু তাদের নিরপত্তা কিভাবে আরো বাড়ানো যায় তা নিয়ে সরকার চিন্তা করছে৷

বদরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মেহেদী হাসান বলেন, ‘‘একজন ইউএনও একই সঙ্গে একজন ম্যাজিষ্ট্রেট৷ তাকে প্রশাসনিক কাজের বাইরে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করতে হয়৷ বালুমহল, জলমহল দেখতে হয়৷ করোনায় ত্রাণ বিতরণ করতে হয়৷ লকডাউন করতে হয়৷ রোগীকে হাসপাতালে পাঠাতে হয়৷ উপজেলার উন্নয়নমূলক কাজ দেখতে হয়৷ উন্নয়নের সাথে টেন্ডার একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়৷ ফলে অনেকের স্বার্থে অনেক সময় আঘাত লাগে৷ আইন-শৃঙ্খলা কমিটির সভাপতিও ইউএনও৷ তাই সার্বক্ষণিক ফোর্স প্রয়োজন৷’’

‘সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা প্রয়োজন’

তিনি জানান, চারজন আনসার দেয়া হলেও বাস্তবে ২৪ ঘন্টা ডিউটি ভাগ করলে সার্বক্ষণিকভাবে একজন আনসার দায়িত্বে থাকবেন৷

তিনি আক্ষেপ করে বলেন, ‘‘কোন পরিস্থিতিতে ইউএনওকে আনসার ও গ্রাম পুলিশ নিয়ে কাজ করতে হয় তা অনুধাবন করতে হবে৷ পুলিশেও লোক স্বল্পতা আছে সত্য৷ তাদেরও আলাদা দায়িত্ব আছে৷ তারপরও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা যে আমাদের নিরাপত্তায় তিনি ব্যবস্থা নিয়েছেন৷’’

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য