সার্দিনিয়ার গ্রামে বিরল পাস্তা
১৫ মে ২০২৪বিশ্বের কোনো সুপারমার্কেটেই এই নুডেল কিনতে পাওয়া যায় না৷ ‘সু ফিলিন্দেউ' নামের সেই নুডেলের অর্থ ঈশ্বরের সুতা৷ হাতে গোনা কিছু মানুষ সেই নুডেল তৈরি করতে পারেন বলেই এর এত কদর৷ লুকা ফ্লোরিস তাঁদেরই একজন৷ তাঁর মতে, ‘‘ধৈর্য্য ও প্রত্যয়ের প্রয়োজন৷ কেউ যদি মনে করে, চটজলদি এই কৌশল শিখে নিয়ে সেটা রপ্ত করে চলে যাবে, তার এখানে না আসাই ভালো৷''
ভূমধ্যসাগরে ইটালির সার্দিনিয়া দ্বীপের একটি মাত্র জায়গায়ই এই নুডল তৈরি হয়৷ দ্বীপের মধ্যভাগে পাহাড়ি এলাকায় নুয়োরো শহরে দুটি পরিবারের জিম্মায় সেই পাস্তা তৈরির প্রণালী গচ্ছিত আছে৷ তাদেরই একজন হিসেবে লুকা ফ্লোরিস সেই প্রণালী দেখাতে রাজি হলেন৷ উপকরণ, পানি, লবণ নাকি বিশেষ ময়দার কারণে এই নুডলের এমন খ্যাতি? আসলে কিন্তু বিষয়টা বেশ সহজ৷ লুকার মতে, ‘‘প্রথম দিকে বার বার চেষ্টা চালিয়ে যেতে হয়৷ উপকরণগুলির অনুপাত সঠিক হতে হবে৷ বুঝতে হবে, বাতাসে আর্দ্রতা বা উত্তাপের কারণে সেমোলিনা কোন প্রতিক্রিয়া দেখায়৷ তাপমাত্রার পার্থ্যক্য অনুযায়ী সেটি অনেক পানি গ্রহণ বা বর্জন করতে পারে৷''
যন্ত্র নয়, হাতে করে সেই তাল মাখতে হয়৷ মাখার সময়েই লুকা সঠিক গঠন ও স্থিতিস্থাপকতা টের পান৷ তবে সেই সঙ্গে আরো কিছু বিষয় মনে রাখতে হয়৷ লুকা বলেন, ‘‘ঠিক এই পর্যায়ে অনেক মানুষ একটা ভুল করে৷ তারা মনে করে, ময়দা মাখার কাজ শেষ হয়ে গেছে৷ কিন্তু সেই তাল সত্যি মসৃণ হতে হবে এবং আরো মাখতে হবে৷ সেটা অনেক পরিশ্রমের কাজ৷ সত্যি বেশ বেগ পেতে হয়৷ পরে কনুইয়ে সেটা টের পাওয়া যায়৷''
ফিতা তৈরি বড় জাক৷ তারপর নুডলগুলি বেতের চাকার উপর শুকোতে দেওয়া হয়৷ শুধু এই কৌশল রপ্ত করতেই অনেক অনুশীলনের প্রয়োজন৷ সেই সঙ্গে আরো কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে৷ লুকার মতে, ‘‘শুরু ও শেষের অংশ যত দ্রুত সম্ভব তৈরি করতে হবে৷ কারণ কাজ করার সময়ে এই ময়দার তাল শুকাতে শুরু করে৷ শুকনা তালের উপর তাজা তাল বসানো যায় না৷ সেটা একেবারেই আটকায় না৷''
তিন স্তরের সুতা শেষে এক ধরনের বিনুনির মতো দেখতে লাগে৷ ‘সু ফিলিন্দেউ' খেতে হলে সৌভাগ্যের প্রয়োজন৷ এমনকি সার্দিনিয়ার দোকান-বাজারেও সব সময়ে সেই নুডল কিনতে পাওয়া যায় না৷ সে কারণেও সার্দিনিয়ার এই খাদ্যের কদর এত বেশি৷
ইয়ানা ওরটেল/এসবি