1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জেএনইউ হামলার দায় নিলো হিন্দু রক্ষা দল

স্যমন্তক ঘোষ নতুন দিল্লি
৭ জানুয়ারি ২০২০

বিবৃতি দিয়ে জেএনইউয়ে হামলায় দায় স্বীকার করেছে হিন্দু রক্ষা সমিতি। যদিও বিজেপি এবং এবিভিপি এখনো দাবি করছে, সে দিনের হামলার পিছনে বামেদের হাত ছিল।

https://p.dw.com/p/3Vo57
ছবি: DW/S. Ghosh

রবিবার দিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে যে তাণ্ডব চলেছে, তার দায় স্বীকার করে নিল হিন্দু রক্ষা দল নামে একটি সংগঠন।

সোমবার রাতে বিবৃতি দিয়ে হিন্দু রক্ষা দল জানায়, জেএনইউয়ের ক্যাম্পাসে দেশ বিরোধী এবং হিন্দু বিরোধী কার্যকলাপ চলে। তারই প্রতিবাদে এবং হিন্দু সংস্কৃতি রক্ষা করতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে তারা আক্রমণ চালিয়েছিল। শুধু তাই নয়, একই সঙ্গে তাদের হুমকি, ভবিষ্যতে জেএনইউয়ের ক্যাম্পাসে আবার হামলা চালানো হবে। উল্লেখ্য, হিন্দু রক্ষা দল এর আগে দিল্লির আম আদমি পার্টির একটি দফতরে ভাঙচুর চালিয়েছিল।

শনিবার থেকেই জেএনইউয়ের সাধারণ ছাত্রছাত্রী এবং বামপন্থী ছাত্র সংগঠন দাবি করছিল, সঙ্ঘ পরিবারের ছাত্র শাখা এবিভিপি তাদের উপর আক্রমণ চালাচ্ছে। রবিবারেও একই অভিযোগ ওঠে। বিকেল তিনটে থেকে রাত প্রায় ৯টা পর্যন্ত ক্যাম্পাসে তাণ্ডব চালায় মুখোশ পরা গুন্ডারা। আহত হন শিক্ষক, ছাত্র সকলেই। যাঁদের অনেকেই এখনও হাসপাতালে ভর্তি। প্রশ্ন ওঠে কারা এই গুন্ডারা? কাদের নির্দেশে তারা ক্যাম্পাসে ঢুকল? বাম ছাত্র এবং শিক্ষকেরা আঙুল তুলেছে এবিভিপির দিকে। আর এবিভিপি প্রেস বিবৃতি দিয়ে দায়ী করেছে বামেদের। যদিও প্রশ্ন উঠেছে, বাম ছাত্ররাই যদি গুন্ডা নিয়ে আসবে, তাহলে তারাই আক্রান্ত হল কেন?

ঘটনার পরে বিজেপি নেতৃত্বও দাঁড়িয়েছিলেন এবিভিপির পাশে। তাণ্ডবের জন্য দায়ী করা হয়েছিল 'টুকরা টুকরা গ্যাং'কে। এ নামেই বামপন্থী ছাত্রদের ইদানীং অভিহিত করছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং দক্ষিণপন্থীরা। কিন্তু হিন্দু রক্ষা দল হামলার দায় স্বীকার করে নেওয়ায় এবিভিপি এবং বিজেপির অভিযোগ কার্যত জলে চলে গেল। হিন্দু রক্ষা দলের দাবির পরেও তাদের কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি৷ সূত্র জানমিয়েছে, পুলিশ আগে জেএনইউতে গিয়ে তদন্ত করে তারপর ব্যবস্থা নেবে৷ সেই তদন্ত মঙ্গলবার শুরু হয়েছে৷

জেএনইউয়ের ছাত্র লোকির বক্তব্য, ''হিন্দু রক্ষা দলের এই স্বীকারোক্তির পিছনেও আসলে রাজনীতি আছে। এবিভিপি-কে আড়াল করতেই বিজেপি হিন্দু রক্ষা দলকে আসরে নামিয়ে দিল। কারণ, ওই দিনের ঘটনা যে হিন্দুত্ববাদীরাই ঘটিয়েছে, ভিডিও ফুটেজেই তা স্পষ্ট।''

রাজনৈতিক মহলের একাংশ লোকির সঙ্গে এক মত। তাঁদের বক্তব্য, এবিভিপি এবং বিজেপির মদত না থাকলে হিন্দু রক্ষা দলের পক্ষে জেএনইউয়ের ভিতরে ঢুকে হামলা চালানো সম্ভব হত না। এখন তাদের সামনে এনে এবিভিপিকে বাঁচানোর চেষ্টা হচ্ছে।

স্বাভাবিক ভাবেই এবিভিপি এ কথা মানছে না। তাদের বক্তব্য, হিন্দু রক্ষা দলের সঙ্গে তাদের কোনও সম্পর্ক নেই। তারা কী দাবি করেছে, তাও তাদের জানা নেই। এখনও তাদের অভিযোগ, ক্যাম্পাসে বামেরাই অশান্তি তৈরি করেছিল। তাদের কাছে সেই তথ্য প্রমাণও আছে। বস্তুত, এ দিনই তিনটি এফআইআর হয়েছে পুলিশের কাছে। যার একটিতে নাম আছে বাম পরিচালিত জেএনইউ ছাত্র সংসদের প্রেসিডেন্ট ঐশী ঘোষের। রক্তাক্ত অবস্থায় যাঁকে রবিবার ভর্তি করা হয়েছিল অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্সে। তাঁর কপালে গভীর ক্ষত তৈরি হয়েছে।

ডয়চে ভেলের দিল্লি প্রতিনিধি স্যমন্তক ঘোষ
স্যমন্তক ঘোষ ডয়চে ভেলে, দিল্লি ব্যুরো