‘মকবুল ফিদা হুসেন - হয়রানির শিকার এক চিত্রশিল্পী’
১২ জুন ২০১১লন্ডনের রয়াল ব্রম্পটন হাসপাতালে ৯৫ বছর বয়সে মারা গেলেন ভারতের সবচেয়ে বিখ্যাত চিত্রশিল্পী মকবুল ফিদা হুসেন৷ স্বেচ্ছানির্বাসনেই তাঁর জীবনাবসান হলো৷ ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং-এর ভাষায়: ‘‘তাঁর মৃত্যু এক জাতীয় ক্ষতি৷'' ভারতের চিত্রশিল্পের পুনরুজ্জীবনের প্রতীক হয়ে উঠেছিলেন হুসেন৷ তাঁর মৃত্যু জাতির জন্য এক বড় রকমের ক্ষতি, মন্তব্য করেছেন বিজেপি মুখপাত্র রবিশঙ্কর প্রসাদ৷ সুইজারল্যান্ডের জুরিখ থেকে প্রকাশিত দৈনিক নয় স্যুরশার সাইটুং হুসেন সম্পর্কে লিখছে:
‘‘শিল্পী মহলে হুসেন প্রায়শই ভারতের পিকাসো বলে অভিহিত হয়েছেন৷ অত্যন্ত খামখেয়ালি এক জিনিয়াস হিসেবে প্রসিদ্ধি ছিল তাঁর৷ অভিজাত ক্যালকাটা ক্লাব একবার তাঁকে ঢুকতে দেয়নি ক্লাবের পোশাকবিধি না মান্য করায়৷ বার্তামাধ্যমে এই ঘটনার কঠোর সমালোচনা করা হয়৷ নগ্ন পায়ে ঢুকে পড়তেন তিনি ইস্টাবলিশমেন্টের প্রতিনিধিদের কাছে৷...১৯৪৭ সালে ভারতের স্বাধীনতার পর থেকে সমাজ আর রাজনীতির ক্ষেত্রে বড় রকমের যে পরিবর্তনগুলো ঘটে, তার ছায়া পড়েছে হুসেন'এর জীবনে৷ নব্বই'এর দশকে উগ্র হিন্দুত্ববাদীদের উজ্জীবনের সময় বহু হিন্দু সংগঠনের কাছে তিনি হয়ে ওঠেন ঘৃণার পাত্র৷''
উগ্র হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলোর হাতে মকবুল ফিদা হুসেন নানাভাবে হয়রানির শিকার হয়েছেন৷ তাঁর আঁকা দেবী সরস্বতীর নগ্ন প্রতিকৃতি নিয়ে এই সব সংগঠন হয়ে ওঠে মারমুখো৷ সেকথা জানিয়ে নয় স্যুরশার সাইটুং লিখছে:
‘‘১৯৯৮ সালে কট্টর হিন্দুত্ববাদীরা মুম্বই'এ শিল্পীর বাড়িতে চড়াও হয়৷ তাঁর আঁকা বেশ কিছু ছবি নষ্ট করে দেয়৷ একই সময়ে হত্যার হুমকি দেয়া হয় তাঁকে৷ ২০০৬ সালে দেশ ছাড়েন তিনি৷ দুবাই অথবা লন্ডন হয় তাঁর বাসস্থল৷ ২০১০ সালে কাতারের আমীর নাগরিকত্ব নেয়ার প্রস্তাব দেন শিল্পীকে৷ তিনি তা গ্রহণ করেন৷''
প্রতিবেদন: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন