৭০ বছরেও যৌবনবতী বিকিনি

মাত্র চার টুকরো ছোট ছোট কাপড়ে তৈরি পোশাকটি পরে ১৯৪৬ সালের ৫ জুলাই এভাবেই ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়েছিলেন ফ্রান্সের স্ট্রিপটিজ ড্যান্সার মিশেলিন বার্নাডিনি৷ পোশাকের ডিজাইনার হিসেবে প্রকৌশলী লুই রেয়ার্ডের নাম ছড়িয়ে পড়ে তখনই৷

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ তখন সবে শেষ হয়েছে৷ শুরু হয়েছে শীতল যুদ্ধের যুগ৷ যুক্তরাষ্ট্র তখনো দক্ষিণ প্রশান্ত সাগরের বিকিনি অ্যাটলে পরীক্ষামূলকভাবে পারমাণবিক বোমা ছুড়ছে৷ ফরাসি প্রকৌশলী ওই বিকিনি অ্যাটলের কথা মনে করেই নতুন ধরণের সাঁতারের পোশাকটির নাম দিয়েছিলেন ‘বিকিনি’৷

ফরাসি প্রকৌশলী নতুন চেহারার পোশাক নিয়ে এলেও পোশাকটি কিন্তু নতুন ছিল না৷ এক চিলতে দড়ি আর ছোট ছোট চারটি ত্রিভূজাকৃতির কাপড় দিয়ে তৈরি এমন পোশাক প্রাচীন রোমেও ছিল৷ ওপরের ছবিটিই তার প্রমান৷

১৯৪৯ সাল৷ হলিউড কিংবদন্তি মেরিলিন মনরো তখন স্রাফ একজন পিন আপ কন্যা, অর্থাৎ পিন আপ ম্যাগাজিনের প্রচ্ছদকন্যা হিসেবেই তখন তাঁকে চিনতো সকলে৷ ওপরের ছবিটি সেই সময়ের৷ ব্রুকলিন জাদুঘরে এখনো শোভা পায় ছবিটি৷ ছবির শিরোনাম দেয়া হয়েছে, ‘সাগর সৈকতে মেরিলিন’৷

জেমস বন্ড ছবিতে বহুবার বিকিনি পরে সুন্দরীরা দর্শক হৃদয় কাঁপিয়েছেন৷

১৯৭১-এর দিকে সমাজতান্ত্রিক পূর্ব জার্মানিতেও জনপ্রিয়তা পায় এক ধরণের বিকিনি৷ হাতে বোনা সেই বিকিনি দেখতে চমৎকার হলেও কিছু অসুবিধাও ছিল৷ কাপড় বেশি পানি শুষে নিত বলে খুব তাড়াতাড়িই বেশ ভারি হয়ে যেত পোশাকটি৷

শরীর বড় বেশি দেখা যায় বলে ব্রাজিলে শুরুর দিকে বিকিনি পড়েছিল প্রতিরোধের মুখে৷ ১৯৫০-এর দশকে বিকিনির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর জন্য রিও ডি জেনিরোতে একটি সংগঠনও আত্মপ্রকাশ করেছিল৷ পরে অবশ্য ব্রাজিলেও বিকিনি ধীরে ধীরে ভীষণ জনপ্রিয় হয়ে ওঠে৷

বিশ্বের বড় সব তারকারই পিছু নেয় পাপারাৎসিরা৷ অনেকেরই আশা থাকে – যদি একটা হৃৎস্পন্দন কয়েক মুহূর্তের জন্য থামিয়ে দেয়া একটি ছবিও তোলা যায়!

বিচ ভলিবল খেলাটি জনপ্রিয়ই হয়েছে মূলত বিকিনি পরা যৌনাবেদনময়ী নারীদের আকর্ষণে৷ ১৯৯৬ সাল থেকে অলিম্পিকেও নিয়মিত ইভেন্টের স্বীকৃতি পায় বিচ ভলিবল৷

এ বছর ৭০ বছরে পা দিল বিকিনি৷ তাই বার্সেলোনায় গত জুনে অনুষ্ঠিত ফ্যাশন উইকেও ফিরে এসেছিল ১৯৪৬ সালের সেই বিকিনি৷