1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

২৮ হাজার ইভিএম অকেজো আর নির্বাচন কমিশন?

এম আবুল কালাম আজাদ
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২২

ঠিকমতো সংরক্ষণ না করায় ২৮ হাজার ইভিএম (ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন) ব্যবহার অনুপোযোগী হয়ে পড়েছে৷ এর মধ্যে কিছু ইভিএম পুরোপুরি নষ্ট হয়ে গেছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে, যদিও নির্বাচন কমিশন বলছে এগুলো সবই মেরামত করা সম্ভব হবে৷

https://p.dw.com/p/4HT0G
Bangladesch Elektronische Wahlmaschine
ইভিএম (ফাইল ফটো)ছবি: bdnews24.com

কয়েকটি গণমাধ্যমে এনিয়ে আজ সংবাদ প্রকাশের পর ইভিএম প্রসঙ্গ আবার সামনে চলে এসেছে৷ কেননা, ইভিএম আগামী সংসদ নির্বাচনে বড় একটি নিয়ামক৷ অধিকাংশ রাজনৈতিক দল না চাইলেওনির্বাচন কমিশন জানিয়ে দিয়েছে যে তারা ১৫০ আসনে এই ভোটিং মেশিন ব্যবহার করবে৷ তাই অকেজো ইভিএমের খবরটি রাজনৈতিক মহলে নতুন করে বিতর্কের সৃষ্টি করছে৷

২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ৩ হাজার ৮২৫ কোটি টাকার এক প্রকল্পের আওতায় ১ লাখ ৫০ হাজার ইভিএম কেনা হয়৷ এর মধ্যে ৯৩ হাজার বিভিন্ন আঞ্চলিক, জেলা ও উপজেলা কার্যালয়ে পাঠানো হয়৷ চলতি মাসে ঢাকার বাইরে থাকা ইভিএমগুলোর অবস্থা নিয়ে তথ্য সংগ্রহ করে ইসি৷ এর পরেই বেরিয়ে আসে, ৩০ শতাংশ মেশিন কোনো না কোনোভাবে অকেজো হয়ে গেছে৷

ইসি বলছে যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে এমনটি হয়েছে৷ তাদের দাবি, প্রকল্পের আওতায় রক্ষণাবেক্ষণের জন্য কোন বরাদ্দ রাখা হয়নি৷ ফলে ইভিএম মেশিনগুলো নির্দিষ্ট কোনো গুদামে রাখা হয় না৷ প্রশ্ন হলো এত ব্যয়বহুল ও নির্বাচনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ মেশিনগুলো কেন এভাবে ফেলে রাখা হলো? স্বাভাবিকভাবেই এর রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব ছিল ইসির৷

এছাড়া এসব ইভিএমের পাঁচ বছর টিকে থাকার কথা৷ তাহলে কীভাবে চার বছরের মধ্যে এগুলো নষ্ট হয়ে গেল সেটাও খতিয়ে দেখা দরকার৷ ইসি দাবি করেছে অকেজো ইভিএমগুলো মেরামত করা যাবে৷ তবে আগে কখনো নষ্ট ইভিএম মেরামত করা হয়নি৷ তাই এগুলো মেরামতযোগ্য কিনা তা নিশ্চিত বলা যায় না৷ আবার মেরামত করা হলেও ঠিকমত চলবে কিনা সেই প্রশ্ন থেকেই যায়!

জানা যায়, ঢাকার বাইরে বিভিন্ন স্থানে আরও ৪৫ হাজার ৫০০টি ইভিএম রাখা হয়েছে কাগজের প্যাকেটে৷ এগুলোর মান নিয়েও সংশয় তৈরি হয়েছে৷ ইসি এখনো এগুলোর মান যাচাই করেনি৷ এর বাইরে ৫৪ হাজার ৫০০ ইভিএম রাখা আছে গাজীপুরে মেশিন টুলস ফ্যাক্টরিতে (বিএমটিএফ)৷ আর ২ হাজার ৫০০টি ইভিএম আছে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে৷ এগুলোরও মানও যাচাই করা প্রয়োজন৷

Ak Azad - Praktikant bei DW
এম আবুল কালাম আজাদ, ডয়চে ভেলেছবি: Private

নির্বাচন কমিশনের উচিত যত দ্রুত সম্ভব সব ইভিএমের মান যাচাই করে সেগুলো ব্যবহার করা যাবে কিনা তা নিশ্চিত করা৷ কেননা, ইতিমধ্যে কেনা ইভিএমগুলোও আগামী নির্বাচনে ব্যবহার করার কথা৷ এগুলো হিসেব করেই ইসি নতুন করে দুই লাখ ইভিএম কেনার জন্য ৮ হাজার ৭১১ কোটি টাকার প্রকল্প চূড়ান্ত করেছে৷ তাই কিছু ইভিএম অকেজো থাকলে নির্বাচনের সময় সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে৷ আর এ আশঙ্কা খোদ ইসির কিছু কর্মকর্তার৷

ইসির অভ্যন্তরীণ এক রিপোর্টের বরাত দিয়ে কয়েকজন জানিয়েছেন, আগামী নির্বাচনে ১৫০ আসনে সব বুথে ব্যবহারের কথা মাথায় রেখে ইভিএম কেনা হচ্ছে৷ আর তা করা হচ্ছে ইতিমধ্যে কেনা ইভিএমেগুলোকে ধরেই৷ তাই এতগুলো ইভিএম অকেজো থাকলে নির্বাচনের সময় ঘাটতি দেখা দিতে পারে৷ ইসির উচিত ইভিএমের পুরো বিষয়টি রাজনৈতিক দলগুলোকে জানানো৷

বিএনপিসহ সরকারবিরোধী বেশির ভাগ দল ইভিএমের বিরোধিতা করে আসছে, ইভিএমের উপর তাদের আস্থা নেই৷ অন্যদিকে, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগসহ চারটি দল নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের পক্ষে৷ এমনকি জাতীয় সংসদের প্রধান বিরোধী দলের ভূমিকায় থাকা জাতীয় পার্টিরও ইভিএমের প্রতি অনাস্থা জানিয়েছে৷ এরপরও ইভিএমের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে ইসি৷