1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

১৭ জেলায় বন্যা পরিস্থিতি ‘অপরিবর্তিত’

হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
২৪ জুলাই ২০১৯

বাংলাদেশের ১৭ জেলায় এখানো বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে৷ নতুন করে প্লাবিত হতে পারে আরো তিন চারটি জেলা৷ তবে ১১ জেলায় বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে৷ সব মিলিয়ে প্রায় এক কোটি মানুষ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন৷

https://p.dw.com/p/3MfXA
Hochwasser in Rangamati, Bangladesh
ছবি: DW/H. Chakma

 বন্যার কারণে ১৩ দিনে ৯৪ জনের মৃত্যু হয়েছে৷  এবার ২৮ জেলায় বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে৷ তারমধ্যে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, বন্দরবান, খাগড়াছড়ি, রাঙ্গামাটি, ফেনী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, নীলফামারী, লালমনিরহাট, নেত্রকোণা ও মৌলভীবাজারের বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে৷ বন্যায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত জেলাগুলোর মধ্যে রয়েছে শেরপুর,জামালপুর, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধাসহ কয়েকটি জেলা৷

জামালপুরে প্রায় ১৩ লাখ মানুষ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন৷ প্রায় ২৬ হাজার হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হয়েছে এই জেলায়৷ ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সংখ্যা প্রায় ৩ লাখ৷ ৫০ হাজার ঘরবাড়ি নষ্ট হয়েছে৷

ন্যাশনাল ডিজাস্টার রেসপন্স কোঅর্ডিনেশন সেন্টারের(এনডিআরসিসি) উপ-সচিব কাজী তাসমীন আরা আজমীরী ডয়চে ভেলেকে জানান,‘‘বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে৷ বৃষ্টি না থাকায় নদীর পানি নেমে যাচ্ছে৷ তবে আবার বৃষ্টি হলে পরিস্থিতি খারাপ হতে পারে৷''
তিনি দাবি করেন, ‘‘ত্রাণ সামগ্রী বিতরণের অবস্থাও ভালো৷ তবে কিছু কিছু জায়গায় ত্রাণ পেয়েও না পাওয়ার অভিযোগ করছে কেউ কেউ৷ বন্যার পানি নেমে যেতে শুরু করায় এখন আমরা পুনর্বাসনের ওপর জোর দিচ্ছি৷''

এনডিআরসিসির সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী, ১৭ জেলায় এপর্যন্ত মোট ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সংখ্যা ৫০ লাখ৷ আর এক লাখ ৪০ হাজার হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হয়েছে৷ কিন্তু যে ১১ জেলায় বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে সেই জেলাগুলোর ক্ষয়ক্ষতির হিসাব এখন আর জানানো হচ্ছে না৷ কয়েকটি সংশ্লিষ্ট সূত্রের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ওই ১১ জেলা যোগ করলে প্রায় এক কোটি মানুষ বন্যায় কম বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন৷ ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সংখ্যা হবে কমপক্ষে ২০ লাখ৷ আর দুই লাখেরও বেশি হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হয়ে গেছে৷ গবাদী পশু-পাখি, রাস্তা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেরও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে৷

পানি নেমে যাচ্ছে তবে বৃষ্টি হলে পরিস্থিতি খারাপ হতে পারে: তাসমীন আরা আজমীরী

তাসমীন আরা আজমীরী বলেন,''বন্যা শেষ হলে আমরা পুরো ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ একসঙ্গে প্রকাশ করব৷ আর যেসব এলকায় বন্যার পানি নেমে গেছে, সেখানকার ক্ষয়ক্ষতির হিসাবও পুরোটা তখন জানা যাবে৷ এখন ওইসব এলাকায় পুনর্গঠনের কাজ চলছে৷‘‘

পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আরিফুজ্জামান ভুঁইয়া ডয়চে ভেলেকে বলেন,‘‘উত্তরবঙ্গ এবং মধ্যাঞ্চলে এখনো বন্যা আছে৷ গাইবান্ধা, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, টাঙ্গাইল, মুন্সিগঞ্জ ফরিদপুর, শরিয়তপুর, রাজবাড়ি ও সুনামগঞ্জে  বন্যা পরিস্থিতি  অপরিবর্তিত আছে৷ জামালপুর ও গাইবান্ধার পরিস্থিতি সবচেয়ে খারাপ৷ আগামী ২৪ ঘন্টায় লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম ও নীলফামারী নতুন করে প্লাবিত হতে পারে৷''
তিনি জানান, সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলায় দু-এক দিনে বন্যা পরিস্থিতির হয়তো কিছুটা অবনতি ঘটবে৷ তবে শুক্র-শনিবার থেকে সব জেলায়ই বন্যার পানি কমতে শুরু করবে৷ আগামী সপ্তাহে সব জায়গায়ই বন্যা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসবে৷‘‘

শুক্র-শনিবার থেকে সব জেলায়ই বন্যার পানি কমতে শুরু করবে:মো. আরিফুজ্জামান ভুঁইয়া

ভারতের আসাম, উত্তর পশ্চিম বঙ্গ ও মেঘালয়ে এবার প্রচুর বৃষ্টিপাতই এবার বাংলাদেশ বন্যার কারণ৷ এখনো কোথাও কোথায় বৃষ্টি হচ্ছে৷ এই পানি প্রধানত নদীর ঢল হয়ে এসে বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত করে৷ আর সিলেট ও সুনামগঞ্জে পাহাড়ি ঢল হিসেবে আসে৷
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে জানানো হয়েছে, গত ১০ জুলাই থেকে এপর্যন্ত ১৩ দিনেবন্যা ও বন্যার কারণে ৯৪ জন মারা গেছেন৷ এর মধ্যে পানিতে ডুবে সর্বোচ্চ ৭৬ জনের মৃত্যু হয়েছে৷ বজ্রপাতে ৭ জন এবং সাপের কামড়ে ৮ জন মারা গেছেন৷ ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন প্রায় ৪ হাজার৷
ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের হিসাবে, এপর্যন্ত বন্যা দুর্গতদের মধ্যে প্রায় ২৬ হাজার টন চাল, ৪ কোটি ২৮ লাখ টাকা,  এক লোক ৮ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার, সাড়ে ৮ হাজার তাঁবু, আড়াই হাজার বান্ডিল ঢেউ টিন বিতরণ করা হয়েছে৷  আর ঘর বানানো ও মেরামতের জন্য দেয়া হয়েছে ৭৮ লাখ টাকা৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য