1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

হাক্কানি গোষ্ঠীকে ইন্ধন নিয়ে নতুন বিতর্কে পাক-মার্কিন সম্পর্ক

১ অক্টোবর ২০১১

হাক্কানি গোষ্ঠীর সাথে পাকিস্তান সরকারের সম্পর্ক নিয়ে মার্কিন প্রতিরক্ষা বিষয়ক অন্যতম শীর্ষ কর্মকর্তা মাইক মালেনের মন্তব্যকে ঘিরে নতুন বিতর্কের মুখে পাক-মার্কিন সম্পর্ক৷ খোদ মার্কিন প্রশাসনেই ‘ধরি মাছ না ছুঁই পানি’-র ভাব৷

https://p.dw.com/p/12jxZ
পাকিস্তানে মার্কিন বিরোধী বিক্ষোভছবি: AP

পাক-মার্কিন সম্পর্ক দ্বিপাক্ষিক নানা স্বার্থের কারণেই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ৷ ফলে সাম্প্রতিক কিছু ঘটনা নিয়ে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ ও সমালোচনার সুর উঠলেও যেন অনেকেই গা বাঁচিয়ে চলার চেষ্টা করে যাচ্ছেন৷ আর এবার  মার্কিন জয়েন্ট চিফস অফ স্টাফ এর বিদায়ী চেয়ারম্যান অ্যাডমিরাল মাইক মালেনের মন্তব্য থেকে দূরত্বে থাকার চেষ্টা করছেন স্বয়ং প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা থেকে শুরু করে তাঁর প্রশাসনের শীর্ষ কিছু দপ্তরও৷

নতুন বিতর্কের শুরু চরমপন্থী গোষ্ঠী হাক্কানির সাথে পাক গোয়েন্দা সংস্থার আইএসআই-এর সহযোগিতামূলক সম্পর্ক নিয়ে করা মালেনের কড়া মন্তব্য৷ গত ১৩ সেপ্টেম্বর আফগানিস্তানে মার্কিন দূতাবাসে হাক্কানি গোষ্ঠীর হামলা এবং এর কয়েকদিন আগে ট্রাক বোমা হামলায় ৭৭ জন মার্কিন সেনার হতাহতের ঘটনার পেছনে আইএসআই-এর ইন্ধনের অভিযোগ তোলেন মালেন৷ এমনকি তিনি দাবি করেন যে, হাক্কানি গোষ্ঠীর শক্ত অবস্থান গড়তে অর্থ, কারিগরি এবং নিরাপত্তা সহায়তায়ও দিয়েছে আইএসআই৷

বিশেষজ্ঞদের মতে, আফগান যুদ্ধ শুরুর পর থেকে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে তোলা অভিযোগগুলোর মধ্যেই এটিই সবচেয়ে মারাত্মক৷ আর তার উপর অ্যাডমিরাল মালেনের মতো মার্কিন প্রশাসনের অন্যতম বড় কর্তার মুখ থেকে আসার ফলে আরো বেশি ওজন পেয়েছে এটি৷ মার্কিন প্রশাসনের ভেতর পাকিস্তানি সামরিক দপ্তরের নিকটতম বন্ধু হিসেবেও ধরা হয় এই মালেনকে৷ তাই বিষয়টিতে নড়েচড়ে বসতে হয়েছে মার্কিন ও পাকিস্তানি উভয় শিবিরকেই৷

ইসলামাবাদ মালেনের এমন অভিযোগ দৃঢ়তার সাথে অস্বীকার করায় এ বিষয়টিকে সতর্কতার সাথে এড়িয়ে যেতে চেষ্টা করছে হোয়াইট হাউস, পেন্টাগন এবং এমনকি মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরও৷ হোয়াইট হাউসের তথ্য সচিব জে ক্যারনির সতর্ক মন্তব্য, মালেনের বিবৃতিতে ব্যবহৃত ‘‘ভাষা আমি ব্যবহার করতাম না''৷ তবে হাক্কানি গোষ্ঠীর তৎপরতা দমাতে পাকিস্তানকে আরও শক্ত পদক্ষেপ নিতে হবে বলে উল্লেখ করেন ক্যারনি৷ মালেনের মন্তব্য প্রসঙ্গে সরাসরি কথা না বলে কিছুটা ঘোরানো বিবৃতি এসেছে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিন্টনের মুখ থেকে৷ তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘এটা একটা খুব জটিল এবং কঠিন সম্পর্ক এমন কথা যিনি বলেন তার সাথে আমার বিতর্কের কিছু নেই৷ তবে আমি মনে করি যে, এই জটিলতা সত্ত্বেও আমাদের একসাথে কাজ করতে হবে৷''

অন্যদিকে, পাকিস্তানি প্রধানমন্ত্রী ইউসুফ রাজা গিলানি বৃহস্পতিবার ইঙ্গিত দিয়েছেন যে, তাঁর সরকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে কাজ করতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ৷ তবে তিনি এটিও স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে, হাক্কানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপ গ্রহণের কোন পরিকল্পনা তাদের নেই৷ এমনকি গিলানির মন্তব্য, ‘‘এর চেয়ে বেশি কিছু করার জন্য চাপ মেনে নিবে না পাকিস্তান৷''

এ পরিপ্রেক্ষিতে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, আসলে মার্কিন প্রশাসন পাকিস্তানকে দিয়ে যা করাতে চাই, তা একটু ঘুরিয়ে প্রকাশ করার চেষ্টা করেছে৷ কারণ পাকিস্তানের উপর চাপের ঘাত সরাসরি এবং অতিরিক্ত হলে একেবারে বেঁকে বসতে পারে ইসলামাবাদ সেই আশঙ্কায় রয়েছে ওয়াশিংটন৷ কারণ আফগানিস্তানে মোতায়েন সেনা সদস্যদের জন্য রসদ সরবরাহের জন্য পাকিস্তানের ভূখণ্ড ব্যবহার করতে হয় ন্যাটো বাহিনীকে৷ ফলে পাকিস্তান এই পথ বন্ধ করে দিলে বেশ বিপাকে পড়বে সামরিক জোট৷ ফলে টানাপোড়েন সত্ত্বেও এই জটিল সম্পর্ক নিয়ে খুব সতর্ক অবস্থানে উভয় পক্ষ৷

প্রতিবেদন: হোসাইন আব্দুল হাই

সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন