1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান
স্বাস্থ্যজার্মানি

স্তন ক্যান্সার মোকাবিলায় খেলাধুলার ভূমিকা

২৯ অক্টোবর ২০২৪

ক্যান্সারের বিরুদ্ধে সংগ্রামের জন্য মনের জোর জরুরি৷ সেইসঙ্গে খেলাধুলাও কিছু ক্ষেত্রে অভাবনীয় ফল দিতে পারে৷ ব্রেস্ট ক্যানসারের এক রোগী ‘স্ট্রেনথ অ্যান্ড এন্ডুরেন্স ট্রেনিং’ করে দারুণ সুফল পাচ্ছেন৷

https://p.dw.com/p/4mMcu
স্তন ক্যান্সারের চিকিৎসায় ব্যায়ামের গুরুত্ব নিয়ে গবেষণা হচ্ছে৷
স্তন ক্যান্সারে ভুগছেন অনেকেছবি: Bo Valentino/Zoonar/picture alliance

আচমকা স্তনে একটি পিণ্ড ধরা পড়লো৷ জানা গেল ক্যান্সার  হয়েছে৷ আনে ম্যুলার সবে প্রথম বারের জন্য মা হয়েছেন৷ ফলে এমন খবরের জন্য একেবারেই প্রস্তুত ছিলেননা৷

দ্রুত জানা গেল, যে তাঁর একটা অপারেশন ও কেমোথেরাপির প্রয়োজন৷ দুটোতেই বেশ ধকল হলেও তাঁর সামনে অন্য কোনো পথ খোলা ছিলনা৷ স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে আনে বলেন, ‘‘প্রথমেই মনে হলো, আমি আর বাঁচবোনা৷ আমার মেয়েকে বড় হতে দেখবোনা৷ প্রায়ই এখানে বসে ভাবতাম সেরে ওঠার জন্য আর কী করতে পারি? মোটকথা আবার সুস্থ হওয়ার লক্ষ্যই ছিল আসল কথা৷ তার জন্য সব কিছু করতে প্রস্তুত ছিলাম৷'' 

স্তন ক্যান্সারের চিকিৎসায় ব্যায়াম

৩৪ বছর বয়সি এই নারী এক অনকোলজিকাল ট্রেনিং এবং ব্যায়াম থেরাপি সম্পর্কে জানতে পেরে অবিলম্বে সেই প্রক্রিয়া শুরু করতে চেয়েছিলেন৷ তাঁর ডাক্তার হিসেবে মারেন প্যোসডর্ফও সাহায্য করতে এগিয়ে এসেছিলেন৷ মারেন বলেন, ‘‘খেলাধুলার এক মৌলিক নিরাময় ক্ষমতা রয়েছে৷ কোলোন বিশ্ববিদ্যালয়ে তার সাক্ষাৎ প্রমাণও পাওয়া গেছে৷ শরীরের উপর খেলাধুলার প্রভাব নিয়ে একাধিক গবেষণা হয়েছে৷ যথেষ্ট প্রভাবের কথা জানা গেছে৷ আমরা দেখেছি, নারীদের ক্ষেত্রে কেমোথেরাপির পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া অনেক কমে যায়৷ বমি বমি ভাব কমে, হাড় ও জয়েন্টের ব্যথাও কম হয়৷ সেটা স্পষ্ট দেখা গেছে৷''

আনে ম্যুলার কেমোথেরাপির মাঝেই সেই প্রক্রিয়া শুরু করেন৷ বিশেষ এক ফিজিওথেরাপি চেম্বারে তিনি সপ্তাহে দুইদিন ‘স্ট্রেনথ অ্যান্ড এন্ডুরেন্স ট্রেনিং' করতে থাকেন৷

ক্রীড়াবিজ্ঞানীরা আনে-কে উত্সাহ দিয়েছিলেন৷ ক্যানসারের চিকিৎসার সময়ে হাতে-পায়ে যেমন ব্যথা করে, এই থেরাপির ফলে সেই পলিনিউরোপ্যাথি নামের সমস্যা আদৌ দেখাই দেবেনা বলে আশা করেছিলেন তাঁরা৷ ক্রীড়াবিজ্ঞানী হিসেবে ডিয়র্ক বিয়ারমান বলেন, ‘‘গবেষণায় স্পষ্ট দেখা গেছে, যে এর ফলে কষ্ট কিছুটা কমে যায়৷ কেমোথেরাপি বন্ধ করার অন্যতম প্রধান কারণ এই পলিনিউরোপ্যাথি৷ যতকাল কেমোথেরাপি চালিয়ে যাওয়া যায়, সেটা রোগীদের জন্য ভালো৷ থেমে গেলে অবনতি হয়৷ আমি সেটা এভাবেই দেখি৷ শরীরের যে সব কাঠামো আমরা ট্রেনিং বা সঞ্চালন করি না, সেগুলির আবার অবনতি ঘটে৷''

অর্থাৎ ক্যান্সারের সময়ে খেলাধুলা বন্ধ করা একেবারেই ভালো কাজ নয় বলে ডিয়র্ক বিয়ারমান মনে করেন৷

ইতোমধ্যে আনে ম্যুলারের মেয়ে ইয়েটের এক বছর বয়স হয়েছে৷ আনে তাঁর মেয়ে ও জীবনসঙ্গীর জন্য উপস্থিত রয়েছেন৷ খেলাধুলা তাঁকে সেই শক্তি দিচ্ছে বলে তিনি বিশ্বাস করেন৷ তিনি বলেন, ‘‘খুবই ভালো৷ আমি খুব ভালো বোধ করছি৷ সুস্থ আছি৷ শক্তি পাচ্ছি৷ এর থেকে ভালো আর বোধহয় কিছুই হতে পারে না৷''

আনের পোস্ট-ট্রিটমেন্ট এখনো চলছে৷ কয়েক মাস পর পর তাঁকে ডাক্তারের কাছে চেকআপের জন্য যেতে হচ্ছে৷ তিনি অবশ্যই নিজের ও নিজের পরিবারের স্বার্থে ‘স্ট্রেনথ অ্যান্ড এন্ডুয়রেন্স ট্রেনিং' চালিয়ে যেতে চান৷

প্রতিবেদন: কোলিয়া সেলকার/এসবি