1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

সূর্য আটকে জলবায়ু পরিবর্তনের সমাধান নাকি কল্পনা?

২৫ জুলাই ২০২৩

শুনতে বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী মনে হলেও, একদল গবেষক বিশ্বাস করেন সূর্যকে অবরুদ্ধ রাখতে পারলে জলবায়ু পরিবর্তনের হাত থেকে আমাদের রক্ষা করা সম্ভব।

https://p.dw.com/p/4UN6y
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবিছবি: Jochen Tack/picture alliance

সোলার জিওইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে কাজ করা গবেষকেরা বলছেন, এটি খুবই সাধারণ একটি পদার্থ বিজ্ঞান। আমরা যদি স্ট্র্যাটোস্ফেয়ারে দীর্ঘসময় ধরে সালফার ডাই-অক্সাইডের ছোট কণা স্প্রে করি, তাহলে একটা সময় সেগুলো সূর্যরশ্মিকে প্রতিফলিত করবে। যেটি বৈশ্বিক উষ্ণায়নের বিপরীতেও কাজ করবে।

কিন্তু এই গবেষণার অনেক বিরোধী রয়েছেন, যারা মনে করছেন  এই ধরনের পরিবর্তন করা একটি ভয়ানক বাজি খেলা। যার পরিণতি হবে খুবই ভয়াবহ। তারা এই ব্যাবস্থাকে বিকল্প হিসেবে মানতেও নারাজ।

ক্রমাগত গবেষণার কয়েক বছর পর সোলার ইঞ্জিনিয়ারিং কিংবা সৌর ভূপ্রকৌশল বিষয়টি বর্তমানে শিক্ষাবিদ, আইনপ্রণেতা এমনকি জাতিসংঘের জলবায়ু বিষয়ক সংস্থা আইপিসিসির আলোচনার টেবিলে প্রাধান্য পাচ্ছে। কার্বন নিঃসরণের মাত্রা হ্রাস করা গেলে, এই প্রক্রিয়ায় পৃথিবীর তাপমাত্রা প্রাক-শিল্প যুগে নিয়ে যাওয়া সম্ভব বলে মনে করছেন কেউ কেউ।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রশাসন জানিয়েছে, সোলার রেডিয়েশন ম্যানেজমেন্ট নিয়ে কাজ করলেও সোলার জিওইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে এই মুহূর্তে তাদের কোন পরিকল্পনা নেই। অপরদিকে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন সোলার রেডিয়েশন ম্যানেজমেন্ট এর সম্ভাব্য কাঠামো তৈরি এবং ব্যবস্থাপনার বিষয়ে আলোচনার জন্য তার আন্তর্জাতিক মিত্রদের আহ্বান জানিয়েছে।

কীভাবে এটি কাজ করে?

সবচেয়ে কার্যকর পদ্ধতিগুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে, পৃথিবী পৃষ্ঠের উপরে বায়ুমণ্ডলের স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারের ১০ থেকে ৫০ কিলোমিটারের মধ্যে সালফার ডাই-অক্সাইডের ছোট কণা স্প্রে করা।

১৯৯১ সালে ফিলিপাইনের পিনাটুবোর আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত থেকে এই তত্ত্বটি প্রমাণিত হয়। এই বিস্ফোরণটির শক্তির মাত্রা এত বেশি ছিল যে, সেখান থেকে প্রায় ১৫ মিলিয়ন টন সালফার ডাই-অক্সাইড স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারে ঢুকে যায়। যার কারণে বিস্ফোরণের দুই বছর পর পর্যন্ত পৃথিবীর তাপমাত্রা গড়ে অর্ধেক ডিগ্রি সেলসিয়াস কম ছিলো।

যুক্তরাষ্ট্রের কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র রিসার্চ ফেলো ডগলাস ম্যাকমার্টিন বলেছেন, সোলার জিওইঞ্জিনিয়ারিং মডেলিং অনুযায়ী পৃথিবীতে পৌঁছানো সূর্যালোকের শতকরা এক ভাগও প্রতিফলিত করা গেলে তা পৃথিবীর তাপমাত্রা প্রাক শিল্প যুগে ফিরিয়ে নেয়ার জন্য যথেষ্ট হবে। 

তিনি আরও বলেন, এই পরিকল্পনার বার্ষিক ব্যয় ধরা হয়েছে ১৬ বিলিয়ন ডলার।

এর খারাপ দিকগুলো কী কী?

সোলার জিওইঞ্জিনিয়ারিং এর সম্ভাব্য ক্ষতিকর দিকগুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে স্প্রে করা কণা থেকে এসিড বৃষ্টি সরাসরি ওজোনস্তরকে ক্ষতিগ্রস্থ করবে ।

এটি বৃষ্টিপাতের ধরণকেও প্রভাবিত করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ফলে, ইতিমধ্যে জলবায়ু পরিবর্তনে বিপর্যস্ত আবহাওয়া ব্যবস্থা আরও খারাপ হবে।

ম্যাকমারটিন মন্তব্য করেন, কার্বন নিঃসরণের মাত্রা দ্রুত কমিয়ে আনা না হলে, জলবায়ু পরিবর্তন রোধে এই সোলার জিওইঞ্জিনিয়ারিং কিছু না করার চেয়ে অন্তত ভালো ফল বয়ে আনবে।  

আলিস্টেয়ার ওয়ালশ/এসএইচ