1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান
বিচার ব্যবস্থাভারত

সুপ্রিম কোর্টে প্রশ্নবিদ্ধ রাজ্য, দিল্লিতে কর্মবিরতি উঠলো

২২ আগস্ট ২০২৪

আরজি কর নিয়ে সর্বোচ্চ আদালতে প্রশ্নের মুখে পড়লো রাজ্য সরকার। কাজে যোগ দেয়ার সিদ্ধান্ত দিল্লির জুনিয়র ডাক্তারদের।

https://p.dw.com/p/4jmgf
সিআইএসএফ জওয়ানরা আরজি করে ঢুকছেন।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পর আরজি করে সুরক্ষার দায়িত্ব নিলো কেন্দ্রীয় আধা সামরিক বাহিনী সিআইএসএফ। ছবি: Satyajit Shaw/DW

কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে আবার কাজে যোগ দেয়ার আবেদন জানিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। মেনে নিয়েছেন দিল্লির ডুনিয়র ডাক্তাররা। আন্দোলনরত এমসের জুনিয়র ডাক্তার ও রেসিডেন্টস ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন জানিয়েছে, তারা ১১ দিনের কর্মবিরতির পর কাজে ফেরার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে সুপ্রিম কোর্ট যা বলেছে, তা কর্তৃপক্ষকে মানতে হবে। দেশজুড়ে চিকিৎসকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।

রাজ্য সরকার নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট

এদিন সুপ্রিম কোর্টে রাজ্য সরকারকে প্রচুর প্রশ্নের মুখে হয়। কলকাতা পুলিশের তদন্ত নিয়ে প্রশ্ন করেন বিচারপতিরা।

বিচাপপতি পারদিওয়ালা জানিয়েছেন, ''পশ্চিমবঙ্গ ক্রিমিনাল প্রসিডিওর কোড অনুসরণ করছে না। আমি গত ৩০ বছরে এরকম মামলা দেখিনি।''

বিচারপতি পারদিওয়ালা প্রশ্ন করেছেন, ''আমার অবাক লাগছে এটা দেখে যে, ময়না তদন্তের আগে কী করে বলে দেয়া হলো অস্বাভাবিক মৃত্যু? এটা কী করে সম্ভব? তা হলে ময়না তদন্তের কী প্রয়োজন ছিল?''

এরপর রাজ্য সরকারের আইনজীবী কপিল সিবাল তার ব্যাখ্যা দেন। তখন বিচারপতি প্রশ্ন করেন, ''তাহলে ময়নাতদন্তের পরও অস্বাভাবিক মৃত্যু বলা হয় কী করে? তখন তো কারণ পুলিশ জেনেই গেছে।''

বিচারপতি জানতে চান,  ''৯ অগাস্ট টালা থানায় রাত সাড়ে এগারোটায় ইউডি কেস ৮৬১ দায়ের করা হয়। আর এফআইআর দায়ের হয় রাত ১১.৪৫ মিনিটে। এটা কি ঠিক?''

সিআইএসএপের নারী জওয়ানরা আরজি করে।
আরজি করের ২৪টি জায়গায় সিআইএসএফ নিয়োগ করা হয়েছে। আচেন নারী জওয়ানও। ছবি: Satyajit Shaw/DW

আইনজীবী সিবাল বলেন, ''ইউডি মামলা দায়ের হয় দুপুর একটা ৪৫ মিনিটে। সলিসিটার তার বিরোধিতা করেন।  বিচারপতি তখন পুলিশের কাছ থেকে ব্যাখ্যা চান।

বিচারপতিরা বলেন, ''কলকাতা পুলিশ অটপ্সির আগেই অস্বাভাবিক মৃত্যুর কথা বললো, তা খুবই উদ্বেগজনক।'' যে পুলিশ অফিসার এই বিষয়ে প্রথম খাতায় এন্ট্রি করেছিলেন, তাকে পরের শুনানিতে হাজির থাকার নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।

সবকিছু বদলানো হয়েছে, বললো সিবিআই

সিবিআইয়ের পক্ষে সওয়াল করার সময় সলিসিটার জেনারেল তুষার মেহতা বলেন, ঘটনা ঘটার পাঁচদিন পরে সিবিআই তদন্তের ভার হাতে নিয়েছে। তারমধ্যে সবকিছু বদলে ফেলা হয়েছে।

তিনি জানিয়েছেন,  ''কলকাতা পুলিশ ডেইলি ডায়েরিতে এন্ট্রি করেছে সকাল ১০টা বেজে ১০ মিনিটে। আর ঘটনাস্থল সুরক্ষিত করা হয়েছে গভীর রাতে। এটা খুবই উদ্বেগজনক ঘটনা।''

বিচারপতিরাও বলেছেন, ''রাতে অপরাধ হয়েছে। আর অপরাধের জায়গা সুরক্ষিত করা হয়েছে ১৮ ঘণ্টা পরে।''

তুষার মেহতা জানিয়েছেন, ''আরজি করের সাবেক প্রিন্সিপালকে অনেকগুলি আর্থিক অনিয়ম নিয়ে সিবিআই জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ হলো, তিনি সিসিটিভি কেনার বদলে সেগুলি ভাড়ায় নিয়েছিলেন।''

সিবিআইকে আবার তদন্ত নিয়ে স্টেটাস রিপোর্ট দিতে বলেছে সুপ্রিম কোর্ট।

সন্দীপ ঘোষকে নিয়ে

সুপ্রিম কোর্ট এদিন আবার জানিয়েছে, চিকিৎসকের ধর্ষণ ও মৃত্যু নমিয়ে এফআইআর করতে দেরি করা হয়েছিল। এটা মেনে নেয়া যায় না। আরজি করের সাবেক প্রিন্সিপাল সন্দীপ ঘোষের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলে সর্বোচ্চ আদালত।

প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড় বলেন, ''মৃতদেহ পাওয়ার ১৪ ঘণ্টা পরে কেন এফআইআর করা হলো? সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, প্রিন্সিপাল কেন সঙ্গে সঙ্গে এফআইআর করতে বললেন না? তার সঙ্গে কে যোগাযোগ করছিল? তিনি ইস্তফা দেয়ার পর তাকে আরেকটি কলেজের অধ্যক্ষ করা হলো কী করে? রাজ্য সরকারকে এই বিষয়ে আলাদা করে জানাতে হবে।''

চিকিৎসকদের বিষয়ে

প্রধান বিচারপতি বলেন, পরিবারের একজন অসুস্থ ছিলেন বলে তিনি একবার হাসপাতালের মাটিতে শুয়ে রাত কাটিয়েছেন। তখন দেখেছেন, চিকিৎসকরা ৩৬ ঘণ্টা ধরে কাজ করছেন। তারা প্রায় ৪৮ ঘণ্টা ধরেও কাজ করেন। তারপর কেউ তাদের উত্যক্ত করলে তাদের তা প্রতিরোধ করার মানসিক ও শারীরিক শক্তিও থাকে না।

প্রধান বিচারপতি বলেন, ''চিকিৎসকরা তাদের কাজে ফিরুন। তাদের বিরুদ্ধে যাতে কোনো ব্যবস্থা নেয়া না হয়, সেটা আদালত দেখবে।''

সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দিয়েছে, শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে রাজ্য সরকার কোনো ব্যবস্থা নিতে পারবে না।

আরজি করে সিআইএসএফ জওয়ানরা।
আরজি করের নিরাপত্তার জন্য ১৮০ জন জওয়ানকে নিয়োগ করেছে সিআইএসএফ।ছবি: Satyajit Shaw/DW

সিআইএসএফ মোতায়েন করা হলো

আরজি কর হাসপাতালে বৃহস্পতিবার দুপুরে সিআইএসএফ সুরক্ষার দায়িত্ব হাতে তুলে নিলো। ১৮০ জন সিআরপিএফ জওয়ানকে মোতায়েন করা হয়েছে। তারা হাসপাতালের ২৪টি গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় প্রহরার কাজে থাকবেন। ছেলে ও মেয়েদের হস্টেলের সামনেও তারা থাকবেন।

জিএইচ/এসজি(পিটিআই, এএনআই)