1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান
রাজনীতিসুদান

সুদানে এই সংঘর্ষ কেন?

১৮ এপ্রিল ২০২৩

সুদানে সেনা ও আধাসামরিক বাহিনীর মধ্যে ভয়ংকর লড়াই চলছে। কেন এই সংঘর্ষ?

https://p.dw.com/p/4QDXX
খার্তুমে প্রবল লড়াই হচ্ছে।
খার্তুমে প্রবল লড়াই হচ্ছে। ছবি: Mahmoud Hjaj/AA/picture alliance

সোমবার রাতে সুদানে জাতিসংঘের দূত জানিয়েছেন, সেনা ও আধা-সামরিক বাহিনী(আরএসএফ)-র সংঘর্ষে ১৮০ জন মারা গেছেন। আহত হয়েছেন এক হাজার আটশ জন।

সুদানের বিভিন্ন জায়গায় লড়াই ছড়িয়েছে। রাজধানী খার্তুমে বিমানহামলা হচ্ছে।

গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করে যাওয়া জার্মান সংগঠন ফ্রিডরিক ইবার্ট স্টিফটুংয়ের প্রধান ক্রিশ্চিন রোহার্স বলেছেন, ''খার্তুমের বাসিন্দা বেসামরিক মানুষ এই লড়াইয়ের মধ্যে পড়ে গেছেন।  তারা বাড়ির বাইরে বেরোলেই শুনতে পাচ্ছেন, চারপাশ থেকে গুলির আওয়াজ আসছে। সারাদিন ধরে গুলি চলছে।''

তিনি জানিয়েছেন, ''সেনা এবং আরএসএফের অফিস শহরের কেন্দ্রস্থলে। সেখান থেকেই লড়াই পরিচালনা করা হচ্ছে।''

সমর্থকদের অভিনন্দন প্রহণ করছেন আধাসামরিক বাহিনীর প্রধান দাগালো।
সমর্থকদের অভিনন্দন প্রহণ করছেন আধাসামরিক বাহিনীর প্রধান দাগালো।ছবি: Umit Bektas/REUTERS

সুদানের আসল শাসক আব্দেল-ফত্তাহ আল বুরহান এবং তার ডেপুটি এবং আরএসএফের প্রধান জেনারেল মোহাম্মদ হামদান দাগালো সেখানেই আছেন। দাগালোকে তার সমর্থকরা 'হেমেটি' বলে ডাকেন। সুদান এখন শাসন করে বুরহানের নেতৃত্বে একটি অন্তর্বর্তী কাউন্সিল।

কেন এই সংঘাত?

মিডিয়া রিপোর্ট বলছে, সামরিক বাহিনীর সংস্কার কর্মসূচি নিয়ে বিরোধের জেরেই এই সংঘর্ষ। প্রস্তাব ছিল, সেনা ও আধাসামরিক বাহিনীকে এক করে দেয়া হবে।

ফ্রিডরিক বলেছেন, ''বুরহান ও হেমেটির মধ্যে সম্পর্ক কখনই খুব ঘনিষ্ঠ ছিল না। দুই জনের স্বার্থ এক হওয়ায় তারা হাত মিলিয়েছিলেন। দুজনে মিলে ২০২১ সালের অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে সামরিক অভ্যুত্থান করেছিলেন। এখন সেনা ও আরএসএফের স্বার্থ আলাদা বলে তারা এখন লড়াই করছেন। ''

খার্তুমের উপগ্রহচিত্র।
খার্তুমের উপগ্রহচিত্র। ছবি: Maxar Technologies via AP/picture alliance

ভয়ও আছে

সাউথ সুদান ফোরামের  ম্যারিনা পিটার বলেছেন, বুরহান ও হেমেটি কেউই নিজেদের কাজের দায় নিতে চান না। দুজনেই সেনাবাহিনী থেকে যাত্রা শুরু করেছেন। দুজনকেই সুদানের দীর্ঘদিনের শাসক ওমর আল-বশির উপরে উঠতে সাহায্য করেছেন।

বুরহান সেনাতেই থেকে গেছেন। আর হেমেটি আধাসামরিক বাহিনীর নেতৃত্ব দিয়েছেন। ১৯৮০ পরবর্তী সময়ে দারফুরে তিনি অত্যন্ত কড়াহাতে বিদ্রোহীদের দমন করেছিলেন।

পিটার জানিয়েছেন, ''দুজনেই ভয় পান এবং দায় এড়াতে চান। হেমেটি দারফুরের ঘটনার এবং বুরহান ২০১৯ সালে আল-বসিরের বিরুদ্ধে অভ্যুত্থানের। দুজনেই তাই ভয়ে থাকেন। ''

আন্তর্জাতিক দুনিয়ার স্বার্থ

সুদান নিয়ে বিভিন্ন দেশেরও স্বার্থ আছে। সুদানে সোনার খনি আছে, যা রাশিয়ার সুদান নিয়ে উৎসাহবৃদ্ধির কারণ। পুটিন সাবেক শাসক আল-বসিরকে বলেছিলেন, সুদান হলো রাশিয়ার অন্যতন প্রধান বন্ধু দেশ।

সেই সময় রাশিয়ার কোম্পানি এম-ইনভেস্টকে সুদান খনির অধিকার দিয়েছিল বলে জানিয়েছে মার্কিন রাজস্ব দপ্তর। এই কোম্পানির পিছনে ওয়াগনার গোষ্ঠী আছে বলেও অভিয়োগ।

খার্তুমে দোকানপাট বন্ধ। রাস্তাঘাট শুনশান।
খার্তুমে দোকানপাট বন্ধ। রাস্তাঘাট শুনশান। ছবি: Marwan Ali/AP Photo/picture alliance

পিটার জানিয়েছেন, ''মিশর সরকার চায়, সুদানে একজন স্বৈরাচারী শাসক থাকুক। তাই তারা বুরহানকে সমর্থন করছে। এপ্রিলের গোড়ায় দুই দেশ যৌথ সামরিক মহড়াও করেছে।''

হেমেটির সঙ্গে ইথিওপিয়া, ইরিট্রিয়া, ইয়েমেনের ভালো সম্পর্ক আছে। মস্কোর সঙ্গেও তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে।

ব্লিংকেনের কথা

বুরহান ও হেমেটির সঙ্গে ফোনে কথা বললেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিংকেন। দুইজনকেই তিনি অবিলম্বে সংঘর্ষবিরতির কথা বলেছেন। ব্লিংকেন বলেছেন, এই লড়াইয়ের ফলে প্রচুর বেসামরিক মানুষ মারা যাচ্ছেন। আহত হচ্ছেন। তাই প্রথম কাজ হলো লড়াই বন্ধ করা। 

মিশর জানিয়ে দিয়েছে, তারা এই বিরোধে কোনোভাবে হস্তক্ষেপ করছে না। 

কারস্টেন নিপ/জিএইচ/ডিডাব্লিউ