সুদান সংকটে হুমকিতে সাহেল অঞ্চলের নিরাপত্তা
১০ মে ২০২৩সুদানে যুদ্ধের দ্রুত সমাধানের আশা ধীরে ধীরে ম্লান হয়ে যাচ্ছে৷ সৌদি আরবের জেদ্দায় গত সপ্তাহে যুদ্ধরত দুই পক্ষের মধ্যে আলোচনা হয়৷ কিন্তু তাতে যে খুব একটা লাভ হয়নি, খার্তুমে সাম্প্রতিক বিমান হামলাই তার প্রমাণ৷
হাজার হাজার বেসামরিক মানুষ এরই মধ্যে দেশটি ছেড়ে পার্শ্ববর্তী নানা দেশে পালিয়েছেন৷ প্রতিবেশী দেশগুলোতে বিপর্যয়কর মানবিক সংকট ছড়িয়ে পড়ার বিষয়ে সতর্ক করেছে জাতিসংঘ৷
অস্ত্রের সরবরাহ বাড়ছে
ফ্রিডরিশ এবার্ট ইনস্টিটিউট - এফইএস এর হেনরিক মাইহাক মনে করেন, ‘‘বর্তমানে সহিংসতা বন্ধ করার বিষয়ে কোনো আঞ্চলিক ঐকমত্য না থাকার ফলে বিষয়টি আরও জটিল হয়ে উঠেছে৷''
ডয়চে ভেলেকে তিনি বলেন, ‘‘হর্ন অফ আফ্রিকা অঞ্চলে, প্রতিবেশী দেশগুলির মধ্যে কোনো কার্যকর যৌথ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেই৷ নিরাপত্তাব্যবস্থা প্রায়শই একে অপরের বিরুদ্ধে কাজে লাগানো হয়৷''
জাতিসংঘের বিশেষ প্রতিনিধি ফলকার পের্থেসও সম্প্রতি ডয়চে ভেলেকে বলেন, সুদানের লড়াইয়ের ফলে ‘সুবিধাবাদী এবং ভাড়াটে যোদ্ধারা' আকৃষ্ট হচ্ছে৷
আরেকটি বিপদ হচ্ছে ছোট আকারের অস্ত্রের সরবরাহ বৃদ্ধি৷ সুদানের সীমানা অতিক্রম করে মহাদেশের অপর প্রান্তের দেশ মালি এবং বুরকিনা ফাসোতেও এসব অস্ত্র পৌঁছে যেতে পারে বলে আশঙ্কা মাইহাকের৷
মাইহাকের মতে, এই দেশগুলোতে এমনিতেই সশস্ত্র নানা গোষ্ঠী সক্রিয়৷ নতুন অস্ত্রের সরবরাহ সাহেল অঞ্চলের নিরাপত্তা পরিস্থিতি আরও খারাপ করে তুলবে৷ তিনি সতর্ক করেছেন যে এরই মধ্যে দুটি সংকটাপন্ন অঞ্চল- হর্ন অফ আফ্রিকা এবং সাহেলের পরিস্থিতি আরো জটিল হয়ে পড়বে সুদান যুদ্ধের কারণে৷
তীব্রতর হচ্ছে মানবিক সংকট
মাইহাক বলেন, যুদ্ধ শুরু হওয়ার আগেও সোমালিয়া, সুদান এবং দক্ষিণ সুদানে মানবিক জরুরি অবস্থা ছিল, ত্রাণ তহবিল কম ছিল৷
১৫ এপ্রিল থেকে জেনারেল আবদেল-ফাত্তাহ বুরহানের অনুগত সামরিক বাহিনী এবং প্রতিদ্বন্দ্বী জেনারেল মোহাম্মদ হামদান ডাগালোর ব়্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস এর মধ্যে লড়াই চলছে৷
তাদের এই আধিপত্য বিস্তারের লড়াই প্রতিবেশী দেশগুলোকেও চাপে ফেলেছে৷ এই দেশগুলোর বেশ কয়েকটি হয় সামরিক শাসনের অধীনে রয়েছে, অথবা অস্থিতিশীল নিরাপত্তা পরিস্থিতি এবং অর্থনৈতিক সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে৷ সুদান থেকে হাজার হাজার শরণার্থী সীমান্ত পাড়ি দিয়ে দক্ষিণ সুদান, চাদ বা সেন্ট্রাল আফ্রিকান প্রজাতন্ত্রে চলে যাচ্ছেন৷ আরও দূরের দেশেও শরণার্থী সংকট ছড়িয়ে যেতে পারে৷
মার্টিনা শ্ভিকোভস্কি/এডিকে