1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশিদের টাকা কমেছে

১৮ জুন ২০২১

সুইজারল্যান্ডের ব্যাংকে বাংলাদেশিদের জমা টাকার পরিমাণ গত এক বছরে কমেছে শতকরা ৭ ভাগ৷ বাংলাদেশি মুদ্রায় ৫ হাজার ২০১ কোটি টাকার বেশি অর্থ সুইস ব্যাংকগুলোতে বাংলাদেশিরা জমা করেছেন৷

https://p.dw.com/p/3v8uy
ফাইল ছবিছবি: Reuters/R. Sprich

ডয়চে ভেলের কনটেন্ট পার্টনার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২০ সাল শেষে দেশটির ব্যাংকগুলোতে বাংলাদেশিদের জমা অর্থের পরিমাণ আগের বছরের ৬০ কোটি ৩০ লাখ সুইস ফ্রাঙ্ক থেকে কমে ৫৬ কোটি ২৯ লাখ সুইস ফ্রাঙ্ক হয়েছে৷ সুইস ন্যাশনাল ব্যাংকের (এসএনবি) বার্ষিক প্রতিবেদনে তা দেখা গেছে৷

বাংলাদেশি মুদ্রায় ৫ হাজার ২০১ কোটি টাকার বেশি অর্থ সুইজারল্যান্ডের ব্যাংকগুলোতে বাংলাদেশিরা জমা করেছেন৷ এতে ২০১৯ সালের তুলনায় ২০২০ সালে জমার পরিমাণ কমেছে প্রায় ৩৭০ কোটি টাকা৷

বাংলাদেশের নিয়ম অনুযায়ী যে কোনো ব্যাংকের পরিশোধিত মূলধন অন্তত ৫০০ কোটি টাকা হতে হয়৷ সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশিদের যে টাকা এখন জমা আছে, তা অন্তত ১০টি ব্যাংকের পরিশোধিত মূলধনের সমান৷

সুইজারল্যান্ডের আইনে ব্যাংকগুলো তাদের গ্রাহকদের তথ্য প্রকাশ করতে বাধ্য নয় বা টাকার উৎসও তারা জানতে চায় না৷ এই গোপনীয়তার নীতির কারণে সারা বিশ্বের ধনী ব্যক্তিরা সুইস ব্যাংকে টাকা রাখেন৷

তবে কোন দেশের গ্রাহকদের কী পরিমাণ অর্থ সুইজারল্যান্ডের ব্যাংকগুলোতে জমা আছে, তার একটি ধারণা প্রতিবছর এসএনবির বার্ষিক প্রতিবেদন থেকে পাওয়া যায়৷ দুর্নীতিবিরোধী আন্তর্জাতিক সনদের বাধ্যবাধকতা মেনে এসএনবি ওই তথ্য প্রকাশ করে৷ তবে সেখানে গ্রাহকের বিষয়ে কোনো ধারণা পাওয়া যায় না৷

দেশে দুর্নীতি প্রতিরোধ ও সুশাসন নিয়ে কাজ করা প্রতিষ্ঠানগুলোর ভাষ্য অনুযায়ী, সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশিদের যে টাকা জমা রয়েছে, তার বেশিরভাগটাই অবৈধভাবে অর্জিত৷ বিদেশি ব্যাংক বিশেষ করে সুইস ব্যাংকে পাচার করা ‘বিপুল পরিমাণ’ অর্থ উদ্ধারের যথাযথ পদক্ষেপের নির্দেশনা চেয়ে কয়েক মাস আগে একটি রিট আবেদন হয়েছে হাই কোর্টে৷

প্রাথমিক শুনানি নিয়ে আদালত সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশের কতজনের কত টাকা আছে সেই তালিকা চেয়েছে সরকারের কাছে৷ পাচার হওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনতে সরকার কী পদক্ষেপ নিয়েছে তাও জানতে চাওয়া হয়েছে৷ 

সুইস ন্যাশনাল ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, দেশটির ব্যাংকগুলোতে বাংলাদেশ থেকে যাওয়া অর্থের পরিমাণ প্রথমবার দশ কোটি সুইস ফ্রাঙ্ক ছাড়িয়ে যায় ২০০৬ সালে, যেটি ছিল বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের শেষ বছর৷ নয় কোটি ৭২ লাখ সুইস ফ্রাঙ্ক থেকে বেড়ে ওই বছর জমার পরিমাণ দাঁড়ায় ১২ কোটি ৪৩ লাখ সুইস ফ্রাঙ্ক৷ সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রথম বছর ২০০৭ সালে জমা অর্থের পরিমাণ প্রায় দ্বিগুণ বেড়ে ২০ কোটি ৩০ লাখ সুইস ফ্রাঙ্ক হয়৷

বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে ২০১১ সালে জমার পরিমাণ ছিল ১৫ কোটি ২৩ লাখ সুইস ফ্রাঙ্ক, তা ধারাবাহিকভাবে বেড়ে ২০১৬ সালে দাঁড়ায় ৬৬ কোটি ১৯ লাখে৷ 

তবে ২০১৭ সালে তা কমে ৪৮ কোটি ১৩ লাখ সুইস ফ্রাঙ্কে নেমে এলেও ২০১৮ সালে জাতীয় নির্বাচনের বছরে তা বেড়ে ৫১ কোটি ৭৭ লাখ সুইস ফ্রাঙ্কে দাঁড়ায়৷

প্রতিবেশী দেশগুলোর মধ্যে ভারতীয়দের সুইস ব্যাংকে জমানো অর্থের পরিমাণে এবার বড় উল্লম্ফন ঘটেছে৷ ৮৯ কোটি ১৯ লাখ সুইস ফ্রাঙ্ক থেকে বেড়ে ২.৫৫ বিলিয়ন হয়েছে৷ পাকিস্তানিদের জমা অর্থের পরিমাণ ৩৫ কোটি ৯৬ লাখ থেকে প্রায় দ্বিগুণ বেড়ে হয়েছে ৬৪ কোটি ২২ লাখ সুইস ফ্রাঙ্ক৷

সুইজারল্যান্ডের ২৪৩টি ব্যাংকের যে হিসাব দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক দিয়েছে, তাতে একক দেশ হিসেবে যুক্তরাজ্যের নাগরিকদের জমা অর্থের পরিমাণ সবচেয়ে বেশি, ৩৭৭ বিলিয়ন সুইস ফ্রাঙ্ক৷ দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের জমার পরিমাণ ১৫২ বিলিয়ন সুইস ফ্রাঙ্ক৷ তালিকায় এর পরে রয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ, ফ্রান্স, হংকং, জার্মানি, সিঙ্গাপুর ও লুক্সেমবুর্গ৷

এনএস/এসিবি (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য