1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

সিত্রাংয়ের বৃষ্টি যশোরের কৃষকদের জন্য প্রকৃতির ‘আশীর্বাদ'

২৬ অক্টোবর ২০২২

সিত্রাং এর প্রভাবে বৃষ্টিতে আমন ধানের উপকার হবে, আমন নুয়ে পড়লেও ক্ষতি হবে না৷ উপকূলের আমন ক্ষেতের বড় ক্ষতি হলেও যশোরের জন্য ‘আশীর্বাদ' বলে মনে করছে যশোর কৃষি বিভাগ৷

https://p.dw.com/p/4IgX8
ছবি: Asif Ahsanul

ডয়চে ভেলের কনটেন্ট পার্টনার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে মঙ্গলবার জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মঞ্জুরুল হক বলেন,  ‘‘ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং এর কারণে আমরা যে ধরনের ক্ষতির আশঙ্কা করেছিলাম তার কিছুই হয়নি৷ ঝড় মূলত উপকূলবর্তী এলাকায় ক্ষতি করেছে৷”

 ‘‘জেলায় এই সময়ে পুরো মাঠজুড়ে আমন ধান রয়েছে৷ এর মধ্যে কিছু ধান পাকতে শুরু করেছে৷ আবার কিছু ধানের থোড় বড় হচ্ছে৷ এ অবস্থায় পানির খুব প্রয়োজন ছিলো৷ সে কারণে একদিনের এ বৃষ্টিপাত আমাদের জন্য বড় ধরনের উপকার হয়ে দেখা দিয়েছে৷ এটাকে প্রকৃতির আশীর্বাদ বলা যায়৷”

 ‘‘ঝড়ের তোড়ে যে ধান নুয়ে পড়েছে, তার অধিকাংশই পাকা; ফলে এর কোনো ক্ষতি হবে না৷ কৃষক ঘরে তুলতে পারবেন৷”

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের প্রাথমিক তথ্য বলছে, সোমবার রাতের ঘূর্ণিঝড়ে ৬ হাজার হেক্টর ফসলি জমি এবং ১ হাজার মাছের ঘের ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে৷ গবাদি পশুর ক্ষয়ক্ষতির তথ্য এখনও পাওয়া যায়নি৷ মোট ৪১৯টি ইউনিয়নে ঝড় ক্ষতির চিহ্ন রেখে গেছে৷ উড়ে গেছে প্রায় ১০ হাজার ঘর, কিছু স্থানে সড়ক ভেঙেছে, বাঁধও ভেঙেছে৷

রোববার ভোর রাত থেকে সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত যশোরে ৫০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়৷ ঘূর্ণিঝড় নিয়ে সঙ্গত কারণেই এ জেলার চাষি ও কৃষি বিভাগের লোকজন মারাত্মকভাবে উদ্বিগ্ন ছিলেন৷ টানা এ বৃষ্টির কারণে এ অঞ্চলের সদ্য রোপণকৃত শীতের সবজি, আমন ধানের ক্ষতির আশঙ্কা করছিল যশোর কৃষি বিভাগ৷

তবে সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার পর থেকে যশোরে থেমে যায় ঝড় ও বৃষ্টি৷ মাঝে মাঝে মৃদু ঝড়ো হাওয়া ও ঝিরঝির বৃষ্টি হয়েছে৷ রাতে আবহাওয়ার অবস্থা ক্রমশ ভাল হতে হতে সকালে দেখা মেলে রোদের৷ ফলে যেসব ধানক্ষেতে পানি জমে গিয়েছিলো তা সহজে সরিয়ে ফেলা সম্ভব হয়েছে৷ কৃষি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, যশোর অঞ্চলে শীতকালীন সবজির চাষ হয়েছে ২০ হাজার হেক্টর জমিতে৷ আর এক লাখ ৪০ হাজার হেক্টর জমিতে আমনের আবাদ হয়েছে৷

যশোরের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মঞ্জুরুল হক আরও বলেন,  ‘‘এখন রবি ফসল চাষের প্রস্তুতি চলছে৷ ঠিক সেই সময়ে এ বৃষ্টিপাত ফসলের ক্ষেতের উর্বরতা বৃদ্ধি করবে৷ পাশাপাশি যশোরের যে শীতের সবজি রয়েছে তার জন্য বড় উপকার হয়েছে এ বৃষ্টিপাতে৷ তবে সহসা আবার যদি বৃষ্টিপাত হয় তাহলে রবি ফসলসহ অন্যান্য ফসলের জন্য ক্ষতি হয়ে দেখা দিতে পারে৷”

মঙ্গলবার সকালে যশোর সদরের নোঙরপুর এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, সেখানে সবজি ক্ষেতে পানি সরানোর চেষ্টা করছেন চাষিরা৷

সবজি চাষি আশরাফ আলী বলেন,  ‘‘আগের ঝড়গুলোতে আমাদের ব্যাপক ক্ষতি হলেও এবারকার ঝড়ে কোনো ক্ষতি হয়নি৷ জমিতে পানি জমে গেলেও সেগুলো আইল কেটে সরানো সম্ভব হয়েছে৷” তিনি বলেন,  ‘‘একদিন বৃষ্টি হওয়ায় আমরা অনেকটা ক্ষতির হাত থেকে বেঁচে গেছি৷”

সবজি চাষি গোলাম হোসেন বলেন,  ‘‘বৃষ্টির কারণে বাঁধাকপি ক্ষেতের ক্ষতির আশঙ্কা করেছিলাম৷ তবে (মঙ্গলবার) সকাল থেকে আবহাওয়া ভালো থাকায় সেই ক্ষতি থেকে রক্ষা পেয়েছি৷ সামনে আর বৃষ্টি না হলে সব ধরনের সবজি চাষের বড় উপকার হবে৷”

পাশের ইছালী মাঠে রাস্তার পাশে দেখা যায়, কিছু ক্ষেতের আধাপাকা আমন ধান নুইয়ে পড়েছে৷ ওইসব ক্ষেতের আইল কেটে পানি অপসারণের চেষ্টা করছেন চাষিরা৷

চাষি হাদিউজ্জামান মিলন বলেন, বৃষ্টিতে ক্ষেতের ধান মাটিতে পড়ে গেছে৷ তবে বেশি বাতাস না হওয়ায় ধানের তেমন কোনো ক্ষতি হয়নি৷ সামনে আর বৃষ্টিপাত না হলে এসব ধান সহজেই ঘরে তুলতে পারবেন বলে আশা করেন তিনি৷

এনএস/কেএম (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)  

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান