1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

সারা বিশ্বে অর্থনৈতিক মন্দার ‘চেইন রি-অ্যাকশন’

৯ আগস্ট ২০১১

অ্যামেরিকার অর্থনৈতিক মন্দার প্রভাব পড়েছে বিশ্বের প্রতিটি প্রান্তে৷ ইউরোপ এবং এশিয়া পর্যন্ত তা বিস্তৃত৷ একের পর এক দুঃসংবাদ আসছে শেয়ার বাজার থেকে৷

https://p.dw.com/p/12D5x
অর্থনৈতিক মন্দার হাত থেকে পালানোর পথ নেইছবি: AP

গতকাল এশিয়ার বিভিন্ন শেয়ার বাজারে পড়তি ছিল চোখে পড়ার মতো৷ অ্যামেরিকার অর্থনৈতিক মন্দা বেশ ভালভাবে ছুয়ে গেছে এশিয়ার বিভিন্ন শেয়ার বাজারকে৷ প্রভাব পড়েছে জাপান, সিঙ্গাপুর, দক্ষিণ কোরিয়াসহ মুম্বই পর্যন্ত৷ গত কয়েক বছরে শেয়ার বাজারের এমন দুর্দশা দেখা যায়নি৷

তবে ইউরোপীয়ান সেন্ট্রাল ব্যাঙ্কের বিভিন্ন সিদ্ধান্তের প্রভাবও এশিয়ার মার্কেটগুলোতে তেমনভাবে পড়েনি৷ গতকাল হংকং-এর স্টক মার্কেটে শেয়ারের দর কমে যায় প্রায় চার শতাংশ৷ মুম্বই-এর শেয়ার বাজারের দর কমে প্রায় তিন শতাংশ৷ চায়না হং কং'এর স্ট্র্যাটেজির পরিচালক ফ্রান্সিস চেং জানান, ‘‘আমি মনে করি মানুষ বেশ বিচলিত৷ টান টান উত্তেজনা বিরাজ করছে সবার মধ্যে৷ কেউই এই মুহূর্তে শেয়ার বাজারকে বিশ্বাস করতে পারছে না৷ কারোরই এখন আর আস্থা নেই৷ ''

China Talfahrt an den Finanzmärkten geht weiter
চীনা শেয়ার বাজারছবি: dapd

গত সপ্তাহে অ্যামেরিকার ক্রেডিং রেটিং-এ হঠাৎ করেই মন্দা তীব্রভাবে পরিলক্ষিত হয়৷ এর পাশাপাশি যোগ হয় ইউরো মুদ্রা প্রচলিত দেশগুলোর মন্দাভাব৷ তাই শেয়ার বাজারে যারা অর্থ বিনিয়োগ করেছে, তারা ভীষণভাবে চিন্তিত৷ তারা কড়া নজর রাখছে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ওপর৷ নজর রয়েছে ইউরোর ওপরও৷ গত শুক্রবার বিশ্ববাজার থেকে কয়েক ট্রিলিয়ন ডলার তুলে নেয়া হয়৷ এরপর সবাই আতঙ্কিত হয়ে পড়ে৷

যদিও জি-সেভেন সদস্যদেশগুলো এবং ইউরোপীয় সেন্ট্রাল ব্যাঙ্ক প্রতিশ্রুতি দিয়েছে যে, তারা বিশ্ব অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা আনবে৷ তারপরও বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, আগামী কয়েক সপ্তাহ শেয়ার বাজার এরকমই থাকবে৷

সিঙ্গাপুরের ইউওবি ব্যাঙ্ক-এর কর্মকর্তা আলভিন লিউ বলেন, ‘‘অ্যামেরিকার ক্রেডিং রেটিং'এর পড়তি ছিল নজিরবিহীন একটি ঘটনা৷ এ থেকে বোঝা যায় যে আগামী দুই থেকে আড়াই বছর পর্যন্ত অ্যামেরিকার অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি খুবই মন্থরগতিতে এগোবে৷'' আর এর ফলে, এশিয়াতে স্বর্ণের দাম বেড়েছে এযাবতকালের মধ্যে সবচেয়ে বেশি৷ এক আউন্স সোনার মূল্য সতোরশো ডলার৷ পুঁজি বিনিয়োগকারীরা এমন কিছুতে অর্থ বিনিয়োগ করতে চাচ্ছেন যাতে কোন ঝুঁকি নেই৷

USA Finanzkrise New York Börse Wall Street
মাথায় হাত এখন অনেকেরইছবি: AP

সিডনির ব়য়্যাল ব্যাঙ্ক অফ স্কটল্যান্ডের কর্মকর্তা গ্রেগ গিবস বলেন, ‘‘এই মন্দার হাত থেকে লুকানোর কোন জায়গা নেই৷ যারা লুকাতে পারছে বা এই মন্দাকে এড়িয়ে যেতে পারছে, তারা ভাগ্যবান৷ বরং স্বর্ণ কেনা লাভজনক৷ কারণ কোনো সেন্ট্রাল ব্যাঙ্ক তা বিক্রি করছে না৷''

তবে বেশ কিছু বিশ্লেষকরা জানিয়েছেন, স্টক মার্কেটগুলোতে এই অবস্থা আরো কিছুদিন থাকবে৷ শেয়ারের দাম পড়ে যাবে এবং অনেকেই তখন পড়ে যাওয়া শেয়ারগুলো কিনবে৷

তবে এতো আতঙ্কের মধ্যেও এইচএসবিসি'এর কর্মকর্তা মহেন্দ্র আশার আলো দেখালেন৷ তিনি জানান, ‘‘সবাই ভয়ে কেঁপে উঠছে৷'' তার কথায়, এতো সমস্যা এবং বিনিয়োগে ভীত হওয়ার পরও এশিয়ার মার্কেটের অবস্থা কিন্তু ইউরোপ এবং অ্যামেরিকার থেকে ভাল৷ এবং বিনিয়োগকারীরা শেষ পর্যন্ত এশিয়া মহাদেশের বিভিন্ন মার্কেটের দিকেই নজর দেবে৷ বিনিয়োগকারীরা ক্রমে এদিকে ঝুঁকে পড়বে৷ অর্থাৎ উন্নত বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে অর্থ এশিয়ার বিভিন্ন মার্কেটেই আসবে৷

ইউরোপীয় সেন্ট্রাল ব্যাঙ্ক এবং জাপানের সেন্ট্রাল ব্যাঙ্ক বিনিয়োগকারীদের ধৈর্য্য ধরতে বলছে৷ তাদের উত্তেজনা প্রশমিত করতে ব্যস্ত তারা৷ টোকিও রিসার্চ সেন্টারের তোশিও সুমিতানি জানান, ‘‘বিনিয়োগকারীরা অ্যামেরিকার অর্থনীতির ওপর নজর রাখছে৷ অ্যামেরিকার সেন্ট্রাল ব্যাঙ্ক এবার এই মন্দাবস্থা কীভাবে সামলায় সেটাই সবাই দেখতে চাইছে৷''

প্রতিবেদন: মারিনা জোয়ারদার

সম্পাদনা: দেবারতি গুহ