1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় এক বছরে ৪৫ খুন, দাবি ঐক্য পরিষদের

৯ জুলাই ২০২৪

বাংলাদেশে গত এক বছরে এক হাজার ৪৫টি সাম্প্রদায়িক সহিংসতা-নির্যাতন-নিপীড়নের ঘটনা ঘটেছে এবং তাতে ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অন্তত ৪৫ জন মারা গেছেন৷ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের প্রতিবেদনে এ তথ্য দেয়া হয়৷

https://p.dw.com/p/4i37y
হামলায় বিধ্বস্ত বাগেরহাটের মোড়েলগঞ্জের একটি বাড়ি (ফাইল ফটো)
হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের প্রতিবেদনে বলা হয়, গত এক বছরে বাংলাদেশে ৪৫ জন সংখ্যালঘুকে খুন করা হয়েছেছবি: bdnews24.com

২০২৩ সালের জুলাই থেকে ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত গণমাধ্যমে আসা তথ্যের ভিত্তিতে তৈরি করা প্রতিবেদনটি তুলে ধরেন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রানা দাশগুপ্ত

প্রতিবেদনে বলা হয়, গত এক বছরে হত্যার ঘটনা ঘটেছে ৪৫টি। মরদেহ উদ্ধার (হত্যাকাণ্ড বলে প্রতীয়মান) হয়েছে ৭ জনের। ১০ জনকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে ৩৬ জনকে।

হামলা/শারীরিক নির্যাতনে জখম হয়েছেন ৪৭৯ জন। ওই সময়ে চাঁদা দাবি করা হয়েছে ১১ জনের কাছে, বসতঘর/ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হামলা/ভাঙচুর/লুটপাট/অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে ১০২টি। এছাড়া বসতবাড়ি/জমিজমা দখলের ৪৭টি এবং দখল বা উচ্ছেদের তৎপরতা ও হুমকির ঘটনা ঘটেছে ৪৫টি।

এর বাইরে দেশত্যাগের হুমকি বা দেশত্যাগে বাধ্য করার চেষ্টার ১১টি ঘটনার উল্লেখ করা হয়েছে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের প্রতিবেদনে৷

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, গত এক বছরে দেবোত্তর/মন্দির বা গির্জার সম্পত্তি দখল ও দখলের চেষ্টা হয়েছে ১৫টি। শ্মশানভূমি দখল বা দখলের চেষ্টার ঘটনা ঘটেছে সাতটি। মন্দিরে হামলা/ভাঙচুর/লুটপাট/অগ্নিসংযোগ ১৪টি, প্রতিমা ভাঙচুর ৪০টি, দলবদ্ধ ধর্ষণ বা ধর্ষণ কিংবা ধর্ষণচেষ্টার ঘটনাও ঘটেছে ২৫টি।

প্রতিবেদনে সংখ্যালঘুদের অপহরণ ও জোরপূর্বক ধর্মান্তরকরণের ১২টি ঘটনারও উল্লেখ রয়েছে প্রতিবেদনে। আরো রয়েছে ধর্ম অবমাননার কল্পিত অভিযোগে আট জনকে আটক করার কথা।

হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের প্রতিবেদন অনুযায়ী, সর্বশেষ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে ৩২টি। স্থানীয় সরকার নির্বাচনে সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে পাঁচটি। এ ছাড়া অন্যান্য ঘটনা ঘটেছে ১৪টি।

সংবাদ সম্মেলনে পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রানা দাশগুপ্ত বলেন, ‘‘বিগত বছরগুলোর সাম্প্রদায়িক সহিংসতার তুলনামূলক পর্যালোচনায় দেখা যায়, সহিংসতার ঘটনার খুব বেশি হেরফের আজও হয়নি। ১৯৭০ সালের নির্বাচনের সময় সংখ্যালঘু ছিল প্রায় ১৯ শতাংশ, এখন তা ৮ দশমিক ৬ শতাংশে নেমে এসেছে। স্বাধীনভাবে ধর্মচর্চার পরিবেশ একেবারেই সংকুচিত করা হয়েছে। পুলিশি প্রহরায় ধর্মীয় অনুষ্ঠান-উৎসবের আয়োজন করা হচ্ছে।''

সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চলাকালে সন্ত্রাসীদের কাউকে জনগণ আটক করলে পুলিশ-প্রশাসন তাকে ‘পাগল' বানিয়ে মূলত সাম্প্রদায়িক অপশক্তিকেই উৎসাহিত করে বলেও দাবি করেন রাণা দাশগুপ্ত৷

তিনি বলেন, ‘‘সাম্প্রদায়িক ও মৌলবাদী অপশক্তি রাষ্ট্র, সরকার, প্রশাসন, রাজনীতি, সমাজসহ সর্বক্ষেত্রে নিজেদের প্রভাব বিস্তার করছে। তারা সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে অধিকতর নিরাপত্তাহীন ও আস্থাহীন করে তুলছে। কৌশলে তাদের দেশত্যাগে বাধ্য করা হচ্ছে।''

বগুড়ার রথযাত্রায় পূণ্যার্থীদের মৃত্যুর প্রসঙ্গে রাণা দাশগুপ্ত বলেন, ‘‘এ ঘটনায় আমরা মর্মাহত।'' তিনি এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করেন।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন পরিষদের অন্যতম সভাপতি নিমচন্দ্র ভৌমিক ও নির্মল রোজারিও, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজল দেবনাথ ও ভিক্ষু সুনন্দপ্রিয়, তথ্য যোগাযোগ ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক শুভ্র দেব কর।

এসিবি/টিএম (দৈনিক প্রথম আলো)