সামাজিক ব্যবধান মেনে মোটরসাইকেল!
১ মে ২০২০‘সাপও মরবে, লাঠিও ভাঙবে না’ – এমন সমাধানসূত্র কে না চায়! করোনা সংকটের কারণে লকডাউনের কড়া নিয়ম না মানলে ভারতে পুলিশের হাতে শাস্তির ভয়ে বেশিরভাগ মানুষ ঘরবন্দি রয়েছেন৷ হেঁটে বেশিদূর যাওয়া কঠিন৷ এদিকে গাড়িঘোড়াও কম৷ থাকলেও সেখানে সামাজিক ব্যবধান মানা কার্যত অসম্ভব৷ এই সমস্যার চমৎকার সমাধান বার করেছেন ত্রিপুরা রাজ্যের রাজধানী আগরতলার তরুণ পার্থ সাহা৷
পার্থ এমন এক মোটরবাইক তৈরি করেছেন, যেটির উপর চালক ও সহযাত্রীর মধ্যে এক মিটার ব্যবধান বজায় থাকবে৷ আসলে প্রথমে তিনি একটি পরিত্যক্ত মোটরবাইক কিনে নেন৷ তারপর ইঞ্জিন খুলে নিয়ে যানটিকে দুই ভাগে ভাগ করেন৷ মাঝে এক মিটারের একটু দীর্ঘ রড বসিয়ে দুই অংশ আবার জোড়া দেন৷ বিকল ইঞ্জিন সরিয়ে ব্যাটারি ইউনিট বসিয়েছেন পার্থ৷ ঘণ্টায় ৪০ কিলোমিটার বেগে চলতে পারে অভিনব এই মোটরবাইক৷ ব্যাটারি চার্জ করতে তিন ঘণ্টা সময় লাগে৷
৩৯ বছর বয়সী পার্থ স্কুলের গণ্ডী পেরোতে পারেন নি৷ মেকানিক হিসেবে কাজ করেন তিনি৷ নতুন বাইকটি বানিয়ে তিনি খুব খুশি৷ সংবাদ সংস্থা এএফপি-কে পার্থ বলেন, লকডাউনের নিয়ম মেনে এক মিটার দূরত্ব বজায় রেখে তিনি আট বছরের মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে পথে বেরোতে পারছেন৷ তাকে স্কুলে পৌঁছে দিতে এবং তুলে আনতে সুবিধা হচ্ছে৷ বিপজ্জনক এই পরিস্থিতিতে স্কুল বাসের মধ্যে মেয়েকে দেখতে চান না তিনি৷
করোনা সংকটের মোকাবিলা করতে ভারত সরকার আচমকা লকডাউন ঘোষণা করায় বেশিরভাগ মানুষের মতো পার্থও সমস্যায় পড়েছিলেন৷ তারপর লকডাউনের মেয়াদ কমপক্ষে ৩রা মে পর্যন্ত বাড়ানোর পর তিনি বুঝলেন, এই সংকট দ্রুত কেটে যাবার সম্ভাবনা নেই৷ তাই সঞ্চয়ের সামান্য অর্থ দিয়ে তিনি বাতিল মোটরবাইকটি কেনেন৷
বলা বাহুল্য, এই বাইক নিয়ে পথে বেরোলে মানুষ অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকেন৷ ডিজাইন দেখে অনেকে প্রশংসাও করছেন৷ ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেবও এমন উদ্যোগ দেখে অভিভূত৷ এক টুইট বার্তায় তিনি লেখেন, ‘‘নেসেসিটি ইজ দ্য মাদার অফ ইনভেনসন! কোভিড-১৯ মহামারির সময় এমন অসাধারণ মোটরসাইকেল তৈরির জন্য আমি পার্থ সাহাকে অভিনন্দন জানাচ্ছি৷’’
এসবি/কেএম (এএফপি)