1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

সাউথ আফ্রিকায় চাপ সামলানোর সফর

হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
২২ আগস্ট ২০২৩

সাউথ আফ্রিকায় ব্রিকস সম্মেলনে যোগ দিতে মঙ্গলবার ঢাকা ছেড়েছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আশা ছিল এবারাই ব্রিকস-এর সদস্য পদ পাবে বাংলাদেশ। কিন্তু সেটা আপাতত হচ্ছে না।

https://p.dw.com/p/4VRmk
এবার জোহানেসবার্গের স্যান্ডটন কনভেনশন সেন্টারে হচ্ছে ১৫তম ব্রিকস সম্মেলন৷ সম্মেলনে যোগ দিতে ঢাকা ছেড়েছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেষ হাসিনা
এবার জোহানেসবার্গের স্যান্ডটন কনভেনশন সেন্টারে হচ্ছে ১৫তম ব্রিকস সম্মেলন৷ সম্মেলনে যোগ দিতে ঢাকা ছেড়েছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেষ হাসিনাছবি: Sergei Bobylev/dpa/TASS/picture alliance

বিশ্লেষকেরা বলছেন তারপরও প্রধানমন্ত্রী এই সম্মেলনে পর্যবেক্ষক হিসেবে যোগ দেয়ার মূল উদ্দেশ্য হলো ‘পশ্চিমের চাপ সামলানো‘।

ব্রাজিল,  রাশিয়া, ভারত, চীন ও সাউথ আফ্রিকা-এই পাঁচটি দেশের অর্থনেতিক জোট হলো ব্রিকস। এবার জোহানেসবার্গে ব্রিকস-এর ১৫ তম সম্মেলন বসছে। বিশ্লেষকেরা বলছেন ইউক্রেন যুদ্ধ, মার্কিন ডলারের দাপট  এবং বিশ্বমন্দার এই সময়ে ব্রিকস-এর এই সম্মেলন বেশ গুরুত্বপূর্ণ। এই জোটে রাশিয়া, চীন ও ভারত থাকায় যুক্তরাষ্ট্র সম্মেলনটি গুরুত্ব দিয়ে পর্যবেক্ষণ করছে। আর ডলারের বিরুদ্ধে ব্রিকস-এর অভিন্ন মুদ্রা চালুর যে চেষ্টা রয়েছে সেটাকে ভালো চোখে দেখছে না যুক্তরাষ্ট্র।

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনের আগে ব্রিকসকে একটি প্রেসার রিলিজের প্ল্যাটফফরম হিসেবে দেখছে বলে মনে করছেন আন্তর্জাতিক সম্পর্কের বিশ্লেষকেরা। তারা মনে করেন অর্থনৈতিক এই জোটটির একটি রাজনৈতিক চরিত্র রয়েছে। সদস্যদের মধ্যে মার্কিন বিরোধী শক্তিশালী রাষ্ট্র থাকায় এর রাজনৈতিক দিকটি উপেক্ষা করার উপায় নেই। এখনও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সম্মেলনের সাইড লাইনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীসহ অন্য সররকার ও রাষ্ট্র প্রধানদের বৈঠক চূড়ান্ত না হলেও সেই চেষ্টা অব্যাহত আছে বলে জানা গেছে।

২২ থেকে ২৪ আগস্টের এই সম্মেলনে সাউথ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা, চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং, ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুরা দা সিলভা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিচ্ছেন। রাশিয়ার  প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন সম্মেলনে যোগ দিচ্ছেন না।

‘শেখ হাসিনার যোগদান বাংলাদেশের গুরুত্ব বাড়িয়ে দিয়েছে’

সাবেক রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল (অব.) মো. শহীদুল হক বলেন, "ব্রিকস-এর বাংলাদেশ সদস্য হবে এটায় আমি নিজেও উৎসাহিত ছিলাম। এখন জানা গেলো সেটা সহসা হচ্ছে না। ভারতের রিজার্ভেশন আছে।  তারপরও প্রধানমন্ত্রী পর্যবেক্ষক হিসেবে সেখানে যাচ্ছেন। আমার মনে হয় এর উদ্দেশ্য মূলত রাজনৈতিক। কারণ পশ্চিমা বিশেষ করে নির্বাচনকে সামনে রেখে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রচণ্ড চাপের মুখে রয়েছেন  প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা । সেই চাপ রিলিজ করার চেষ্টা করবেন তিনি।”

তার কথা, "এখনো নিশ্চিত নয় যে তার সঙ্গে মোদী বা চীনা রাষ্ট্রপতির বৈঠক হবে কিনা। তবে আমার মনে হয় সেটা শেষ পর্যন্ত হতে পারে। তিনি চেষ্টা করবেন সাইডলাইনে তাদের সঙ্গে তার বর্তমান অবস্থা নিয়ে কথা বলতে। তাদেকে সার্বিক পরিস্থিতি জানাতে।”

তিনি মনে করেন,"এখানে মার্কিন বিরোধী মনোভাবের যেসব দেশ রয়েছে তাদের কাছ থেকে এই সময়ে  আরো সাপোর্ট পেতে, একটি ভারসাম্য অবস্থা তৈরির চেষ্টা করবেন তিনি।”

ব্রিকস-এ পুতিন না গেলেও ৭ ও ৮ সেপ্টেম্বর দুই দিনের সফরে ঢাকায় আসছেন রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রী সের্গেই লাভরভ । তিনি ৯ ও ১০ সেপ্টেম্বর নয়া দিল্লিতে জি-২০ সম্মেলনে যোগ দেবেন। তার আগে তিনি ঢাকা সফর করবেন। শহীদুল হক মনে করেন, "রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ঢাকা সফরের রাজনৈতিক গুরুত্ব আছে। সেটা দিয়েও বাংলাদেশে ক্ষমতাসীন সরকার কিছু অর্জনের চেষ্টা করবে বলে মনে হয়।” আর ওই সম্মেলনে যোগ দিতে শেখ হাসিনাকে  আমন্ত্রণ জানিয়েছেন নরেন্দ্র মোদী।

এদিকে চীনে বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত । এটা যেমন অর্থনৈতিক স্বীকৃতি তেমনি রাজনৈতিক স্বীকৃতি। বিশ্বে এটার একটা প্রভাব আছে।”

তার কথা,"এখানে কেউ মার্কিন বিরোধী নয়, বরং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কাউকে কাউকে বিরোধী হিসেবে গণ্য করে। তাই আমার মনে হয় প্রশ্নটি বাংলাদেশের ব্যাপারে মার্কিন রাজনৈতিক চাপ এড়ানোর নয়। বরং বাংলাদেশ যে রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিকভাবে আরো শক্তিশালী হচ্ছে তা-ই বাস্তবতা।”

বিশ্লেষকেরা বলছেন, শেখ হাসিনা মূলত এখন যুক্তরাষ্ট্র ও তাদের মিত্রদের চাপ মোকাবেলায় নানা পথ খুঁজছেন। সে ক্ষেত্রে জি-২০ সম্মেলনও তাকে একটি সুযোগ এনে দিতে পারে।