‘সত্যিকারের ইসলাম একটি নয়'
২৯ মার্চ ২০১৬সত্যিকারের ইসলাম আসলে কেমন? ডয়চে ভেলেকে দেয়া সাক্ষাৎকারে অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস স্টাডিজের জেনারেল এডিটর সাঈদ নোমানুল হক বলেন, ‘‘এটা খুব মজার প্রশ্ন৷ আমাদের মনে রাখা উচিত, ইসলামে চার্চের মতো কোনো প্রতিষ্ঠান নেই, সুতরাং প্রাতিষ্ঠানিকভাবে ইসলামের যাবতীয় ব্যাখ্যা সর্বজনগ্রাহ্য করে প্রচার করার সুযোগ কোনো প্রতিষ্ঠানের নেই৷ সে কারণে ইসলামে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়ায় জনমত৷ তাছাড়া এ কথাও মনে রাখা দরকার যে, আল-কোরআনে শুধু কিছু নিয়মই লিপিবদ্ধ করা হয়নি, (ইসলামের এই পবিত্র) গ্রন্থটি বিধিনিষেধ নিয়েই রচিত- তা-ও নয়৷ '' তিনি আরো বলেন, শরিয়াও মানুষের সৃষ্টি৷ তাই এর কিছু বিষয় নিয়ে মুসলমানদের মধ্যেও মতবিরোধ আছে৷
অনেকেই বলেন, ইসলামিক স্টেট বা আইএস-এর সঙ্গে ইসলামের কোনো সম্পর্ক নেই৷ কথাটা কি ঠিক? এ প্রসঙ্গে সাঈদ নোমানুল হকের অভিমত, ‘‘তারা (আইএস) কোরআন, হাদিসের কথা বলে৷ আমার মনে হয় তারা যেভাবে সব কিছুর সমাধান করতে চায় সেদিকে নজর দেয়াই উত্তম৷
আমরা যদি বিশ্বাস করি, নিরপরাধ শিশু হত্যা ইসলাম সমর্থন করে না, তাহলে (ইসলামিক স্টেট) ওদের সঙ্গে ইসলামের সম্পর্ক আছে কিনা এ বিষয় নিয়ে বিতর্কেরই তো দরকার পড়ে না৷''
দীর্ঘ সাক্ষাৎকারে কয়েকটি মুসলিম প্রধান দেশে উগ্র জঙ্গিবাদের উত্থানের বিষয়টি নিয়েও কথা বলেছেন সাঈদ নোমানুল হক৷ দক্ষিণ এশিয়ার মুসলমানরা যেভাবে ইসলাম পালন করেন তার সঙ্গে সৌদি ওয়াহাবি বা সালাফিজম নির্দেশিত ইসলামের বড় রকমের পার্থক্য দেখতে পান শিক্ষাবিদ ও ইসলামি চিন্তাবিদ সাঈদ নোমানুল হক৷ তাঁর মতে, ‘‘সুফিরা যে ভূমিকা পালন করেছেন সেটা ছাড়া দক্ষিণ এশিয়ায় ইসলাম ছড়াতে পারতো না৷ সুফিরা আইন এবং রাজনীতির বিষয়গুলোকে বেশি গুরুত্ব দেননি৷ আবার ইসলামের মূল নীতির প্রশ্নে কোনো আপোষও করেননি৷ তবে ইসলাম ব্যাখ্যায় তাঁরা ছিলেন মানবিক৷ কৌশলটা খুব ভালো ছিল তাঁদের৷ অমুসলিমদের কিছু রীতি-নীতি তাঁরা মেনে নিতেন এই ভেবে যে একদিন অমুসলিমরাও তাঁদের কাতারে আসবে৷''