1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

’’’সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইনের’ কোনো প্রয়োজন নাই’’

হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
২৫ অক্টোবর ২০২১

আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক বলেছেন “ সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন’’-এর কোনো প্রয়োজন নাই। সংবিধানেই তাদের সুরক্ষার বিধান আছে। তবে সাক্ষী সুরক্ষা আইন হবে।

https://p.dw.com/p/429oO
বাংলাদেশে হিন্দুদের উপর নির্যাতনের বিরুদ্ধে নানা পর্যায় থেকে প্রতিবাদ হচ্ছে ছবি: Mohammad Ponir Hossain/REUTERS

আর সংখ্যালঘু নির্যাতনের বিচার হবে বিশেষ ট্রাইব্যুনালে।

হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদসহ আরো কিছু সংখ্যালঘু সংঠনের  ‘সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন' প্রণয়নের দাবির প্রেক্ষিতে আইনমন্ত্রী সোমবার ডয়চে ভেলেকে এসব কথা বলেন। 

‘সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইনের কোনো প্রয়োজন নাই’

হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজল দেবনাথ বলেন," বিশেষ ধরনের অপরাধের বিচারের জন্য বাংলাদেশে বিশেষ আইন আছে। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন তেমন একটি। আমারও  তাই চাই সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন করা হোক।  এই সময়ে সংখ্যালঘু নির্যাতনের মামলায় সারাদেশে ২৪  হাজার আসামি করা হয়েছে। মামলা হয়েছে অনেক। এইসব মামলার বিচার ৪০ বছরেও শেষ হবে না। এই আইনটি হলে আলাদা আইনে আলাদা বিচার হবে। সময় কম লাগবে।”

তিনি জানান, নির্বাচনের আগে সব দলের কাছেই তারা এই আইনের দাবি জানিয়ে আসছেন। আওয়ামী লীগ তাদের নির্বাচনি ইশতেহারে আইনটি করার কথা বলেছে। আর তারা সংখ্যালঘু কমিশনের দাবিও জানিয়ে আসছেন। 

তবে আইনমন্ত্রী অ্যাভোকেট আনিসুল হক বলেন, "সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইনের কোনো প্রয়োজন নাই। কারণ দেশের সর্বোচ্চ আইন সংবিধানেই জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সংখ্যালঘুদের  প্রটেকশন সেখানেই সংরক্ষিত করে গেছেন।”

আর সবার জন্য সাক্ষী সুরক্ষা আইন হবে বলে নিশ্চিত করেন আইনমন্ত্রী। তিনি বলেন," এই আইনটির জন্য একটি সময়ও বেঁধে দেয়া হয়েছে। সম্ভব হলে সংসদের এই অধিবেশনে আর না হলে আগামী অধিবেশনে সাক্ষী সুরক্ষা আইনটি বিল আকারে উত্থাপন করা হবে। এই আইনটি হবে সব ধরনের মামলার সাক্ষীদের জন্য । শুধু সংখ্যালঘু নির্যাতনের মামলার সাক্ষীদের জন্য নয়। এই আইনটি হলে সাক্ষীরা যদি নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে বা হুমকির মধ্যে পড়েন তাদের নিরাপত্তা দেয়া হবে। তারা সুরক্ষা পাবেন।”

সংখ্যালঘু কমিশন প্রশ্নে তিনি বলেন, "এটা তো নীতি নির্ধারকদের সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করবে। সেই নীতি নির্ধারকদের সাথে বসে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এর সব দিক ভেবে এর প্রয়োজনীয়তা বিবেচনা করে যতক্ষণ পর্যন্ত না পর্যন্ত একটা নীতিগত সিদ্ধান্ত দেবেন তার আগ পর্যন্ত কমিশনের ব্যাপারে আমি কিছু বলতে পারছি না।”

আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সংখ্যালঘু নির্যাতনের বিচার হবে বিশেষ ট্রাইব্যুনালে, বিচার হবে দ্রুত।

কাজল দেবনাথ  দাবি করেন,"আইনমন্ত্রী এর আগে সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন করার কথা বলেছেন। এখন হয়তো তিনি অন্য কোনো কারণে অস্বীকার করছেন। তার এই কথা দুর্ভাগ্যজনক। আমি মর্মাহত।”

তিনি আরো বলেন,"আমরা সংখ্যালঘু কমিশন চাইছি আমাদের কথা জানানোর জন্য। আমাদের একটা জায়গা থাকতে হবে যেখানে আমরা আমাদের অভিযোগ জানাতে পারব। জাতীয় মানবাধিকার কমিশন দেশের সবার জন্য হলেও তারা আমাদের কথা তেমন বলে না। রামুর ঘটনার সময় আমরা কমিশনের তখনকার চেয়ারম্যান ড. মিজানুর রহমানকে ছুটোছুটি করতে দেখেছি। এর পরের ঘটনাগুলোতে আমরা কমিশনের কোনো তৎপরতা দেখিনি। আমরা যদি কথা বলার জায়গা পাই তাহলে আমরা প্রতিকারের জন্যও চাপ দিতে পারব।” 

‘তার এই কথা দুর্ভাগ্যজনক’

এদিকে, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নির্মল কুমার চ্যাটার্জি বলেন,"আইনমন্ত্রী সুরক্ষা আইনের কথা বলেছেন। এটা আওয়ামী লীগের ইশতেহারেও আছে। সেটা সবার জন্য। তবে আমরা সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইনও চাই। তবে শুধু আইন করাই যথেষ্ঠ নয়। বিচার নিশ্চিত করতে হবে । রামু থেকে শুরু করে এপর্যন্ত যত সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে কোনোটিরই বিচার হয়নি।”

জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন," আমি সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইনের কথা বলিনি। বলেছি সাক্ষী সুরক্ষা আইনের কথা।”

হারুন উর রশীদ স্বপন (ঢাকা)