1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ব্রেক্সিট নিয়ে অচলাবস্থা

২২ জানুয়ারি ২০১৯

বেক্সিটের দিনক্ষণ ঘনিয়ে এলেও ব্রিটেনের রাজনৈতিক নেতারা মধ্যে এখনো ঐকমত্যের কোনো সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না৷ এই অবস্থায় চুক্তি ছাড়াই ইইউ থেকে বিচ্ছেদের আশঙ্কা বেড়ে চলেছে৷

https://p.dw.com/p/3BwXY
ব্রেক্সিটকে কেন্দ্র করে ব্রিটেনের সংসদে ঐকমত্যের অভাব
ছবি: picture-alliance/AP Photo/House of Commons

সোমবার ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে সংসদের সামনে ব্রেক্সিট সংক্রান্ত বিকল্প পরিকল্পনা পেশ করবেন, এমনটাই কথা ছিল৷ কিন্তু তিনি শেষ পর্যন্ত নতুন মোড়কে সেই ব্রেক্সিট চুক্তিই তুলে ধরলেন, গত সপ্তাহে যা সংসদে বিপুল ভোটে বাতিল করা হয়েছে৷ ব্রিটেনে বসবাসরত ইউরোপীয় ইউনিয়ন নাগরিকদের জন্য নথিকরণের মাশুল তুলে দেওয়া ছাড়া নতুন কোনো ঘোষণা করলেন না তিনি৷ সেইসঙ্গে ব্রেক্সিট চুক্তির যে বিষয়টি নিয়ে সংসদে সবচেয়ে বেশি আপত্তি রয়েছে, সেই ‘ব্যাকস্টপ' বা আয়ারল্যান্ডের সীমান্তে নিয়ন্ত্রণের প্রশ্নে ইইউ-র কাছ থেকে আরও ছাড় আদায় করার অঙ্গীকার করলেন প্রধানমন্ত্রী মে৷

এমন অবস্থায় ব্রিটেনে ব্রেক্সিট সংক্রান্ত অচলাবস্থা কাটার কোনো সম্ভাবনা এখনো দেখা যাচ্ছে না৷ কোনো সমাধানসূত্রের পক্ষেই সংসদে প্রয়োজনীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করা সম্ভব হচ্ছে না৷ প্রধানমন্ত্রীসহ সব পক্ষই শুধু স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিচ্ছেন, কে কী চান না৷ বিরোধী লেবার দলের দাবি মেনে প্রধানমন্ত্রী চুক্তি ছাড়াই ব্রেক্সিটের সম্ভাবনা পুরোপুরি বাতিল করতে প্রস্তুত নন৷ আগামী ২৯শে মে ব্রেক্সিটের দিনক্ষণ পিছিয়ে দেওয়া বা নতুন করে গণভোটের আয়োজন করতেও নারাজ তিনি৷ মে-র যুক্তি, নির্দিষ্ট পরিকল্পনা ছাড়া ইইউ বিচ্ছেদের মেয়াদ বাড়াতে রাজি হবে না৷ তাছাড়া তিনি প্রথম গণভোটের রায় কার্যকর করতে চান, নতুন করে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি করা তাঁর লক্ষ্য নয়৷ আবার গণভোটের আয়োজন করলে যুক্তরাজ্যের ঐক্য নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে এবং সমাজে অশান্তি সৃষ্টি হতে পারে বলে তিনি সতর্ক করে দেন৷

ইইউ শুরু থেকেই স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে যে; ব্রেক্সিট চুক্তিতে কোনো মৌলিক রদবদল সম্ভব নয়৷ ব্রিটেনে ঐকমত্যের স্বার্থেও তা করা হবে না, এমনটা স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে৷ ইইউ-র প্রধান মধ্যস্থতাকারী মিশেল বার্নিয়ে জানিয়েছেন, একমাত্র ভবিষ্যৎ সম্পর্ক নিয়ে রাজনৈতিক ঘোষণাপত্রে কিছু পরিবর্তন সম্ভব৷ এই অবস্থায় প্রধানমন্ত্রীর আশ্বাস সত্ত্বেও এ ক্ষেত্রে কোনো অগ্রগতির সম্ভাবনা ক্ষীণ৷

ব্রিটেনের রাজনৈতিক অরাজকতা সম্পর্কে চরম বিরক্তি প্রকাশ করছেন ইইউ নেতারা৷ জার্মানির ইইউ সংক্রান্ত বিষয়ের ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রী টোমাস রোট বলেন, এমনকি শেক্সপিয়ার বেঁচে থাকলেও বর্তমান নাটকের ভিত্তিতে ব্রেক্সিট ট্র্যাজিডি লিখতে পারতেন না৷

আয়ারল্যান্ডের ইউরোপ বিষয়ক মন্ত্রী হেলেন ম্যাকএন্টি স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, তাঁর দেশ ব্রিটেনের সঙ্গে সীমান্ত নিয়ে কোনো দ্বিপাক্ষিক আলোচনা চালাবে না৷ ব্রিটেনকে এ বিষয়ে ইইউ-র সঙ্গে সরাসরি সংলাপ চালাতে হবে৷ পোল্যান্ডের প্রস্তাব অনুযায়ী আয়ারল্যান্ড ব্যাকস্টপ ব্যবস্থার মেয়াদ ৫ বছর সীমিত রাখতেও প্রস্তুত নয়৷

এমন প্রেক্ষাপটে ব্রিটেন কী করতে পারে? আগামী ২৯শে জানুয়ারি ব্রিটিশ সংসদে আগামী পদক্ষেপ নিয়ে ভোটাভুটি হবার কথা৷ তার আগে প্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাবে সংশোধন করতে পারেন সংসদ সদস্যরা৷ বিরোধী লেবার দল বিচ্ছেদের মেয়াদ বাড়িয়ে চুক্তিহীন ব্রেক্সিটের সম্ভাবনা নাকচ করারও উদ্যোগ নিচ্ছে৷ কিন্তু কোনো পদক্ষেপের পক্ষে সংখ্যাগরিষ্ঠতা সম্ভব না হলে চুক্তি ছাড়াই বিচ্ছেদের আশঙ্কা আরও বেড়ে যাবে৷

এসবি/এসিবি (রয়টার্স, এএফপি)