1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

শুরু হতে যাচ্ছে প্রমিলা বিশ্বকাপ

১০ জুন ২০১১

প্রমীলা ফুটবল শুরু হতে যাচ্ছে ২৬শে জুন থেকে৷ শিরোপাটা এখন পর্যন্ত জার্মান মেয়েদেরই দখলে৷ সেটাই রাখার জন্য লড়বে তারা প্রাণমন দিয়ে৷

https://p.dw.com/p/11XrP
এবছর জার্মানিতে বসছে বিশ্বকাপ ফুটবলের আসরছবি: picture-alliance/ dpa

২০০৬ সালে জার্মানিতে অনুষ্ঠিত হয়েছিল বিশ্বকাপ ফুটবল৷ ফুটবলপ্রেমী জার্মানরা একেবারে উন্মাদ হয়ে গিয়েছিল৷ পাঁচ বছর পর আবারো বিশ্বকাপ ফুটবল জার্মানিতে তবে এবার তা প্রমীলা ফুটবল৷ ২০০৭ সালে জার্মানি জিতেছিল কাপ৷ সেটাই রাখার জন্য লড়বে তারা প্রাণমন দিয়ে৷ আরেকবার জার্মানি, আরেকবার বিশ্বকাপ, আরেকবার ফুটবল৷

একজন ফুটবল প্রেমী এসেছে সুদূর মেক্সিকো থেকে৷ সে বলল, ‘‘আমি এসেছি মেক্সিকো থেকে৷ পুরো সময়টা ধরে আমরা আনন্দ-উৎসবে মেতে থাকবো৷ জার্মানিতে এসব উৎসবের আয়োজন করা হয় জাঁকজমকের সঙ্গে৷ দারুণ!''

Deutsche Fans Bahnfahrt
প্রমিলা ফুটবল নিয়েও ফ্যানদের মাতামাতি কম নয়ছবি: picture-alliance/dpa

কথাটা সত্যি৷ পাঁচ বছর আগে অর্থাৎ ২০০৬ সালে জার্মানিতে আয়োজন করা হয়েছিল বিশ্বকাপ ফুটবলের৷ ফুটবলপ্রেমী এবং সমর্থকরা ভীড় করেছিল জার্মানিতে৷ হাজার হাজার মানুষের সমাগম দেখা গেছে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে৷ আসন্ন প্রমীলা ফুটবল বিশ্বকাপ উপলক্ষে ভীড়টা খুব কম হবেনা ধরে নেয়া যায়৷

সোনিয়া ফুস এফসি কোলন প্রমীলা দলের খেলোয়াড় ছিলেন৷ তবে দ্বিতীয় সারির৷ এখন তিনি খেলছেন ডুইসবুর্গের পক্ষে৷ জাতীয় দলের ফুটবলার হওয়ার স্বপ্ন দেখেন তিনি৷ এবং সেই স্বপ্ন বাস্তবে পরিণত হতে যাচ্ছে৷ সোনিয়া জানাল, ‘‘যখন কেউ অল্প বয়স থেকেই খুব ভাল ফুটবল খেলে, একমাত্র তখনই তার জন্য জাতীয় দলের একজন হওয়ার পথ প্রশস্ত হয়৷ এর সঙ্গে অবশ্যই আত্নবিশ্বাস, দলের প্রতি আনুগত্য এবং ফুটবলের প্রতি প্রচণ্ড ভালবাসার প্রয়োজন৷ এরপরই কোন এক সময় আসে, সেই প্রতীক্ষিত মুহূর্ত, যখন তার ডাক পড়ে জাতীয় দলে খেলার জন্য৷ জার্মানির প্রতিটি ফুটবল খেলায়াড়ই চায় বিদেশের মাটিতে নিজের দেশকে তুলে ধরতে, নিজ দেশের প্রতিনিধিত্ব করতে৷ এর চেয়ে গৌরবের আর কিছু নেই৷''

Mannschaftsbild Frauen Fußball Nationalmannschaft
জার্মানির বিশ্বকাপ টিমছবি: AP

এবারের ফুটবল খেলায় রেফারি থাকছেন যারা তারা সবাই প্রমীলা রেফারি৷ এখবর শুনে অনেকেরই চোয়াল ঝুলেছে৷ কয়েক বছর আগেও যা ছিল একেবারে অসম্ভব৷ এর আগের প্রমীলা বিশ্বকাপগুলোতে রেফারি হিসেবে পুরুষদেরই মাঠে দেখা গেছে৷ রেফারি হিসেবে মহিলাদের প্রশিক্ষণ দিয়েছেন বোরুশিয়া ডর্টমুন্ডের ট্রেইনার ইয়ুর্গেন ক্লপ৷ রেফারি হিসেবে তিনি বেছে নিয়েছেন সেনালি কেশের পুলিশ অফিসার বিবিয়ানা স্টাইনহাউসকে৷ ২০০৭ সাল থেকেই তিনি রেফারি হিসেবে মাঠে নামছেন৷

ট্রেইনার ইয়ুর্গেন ক্লপ, যিনি কিনা এবার বোরুসিয়া ডর্টমুন্ডকে লিগ শিরোপা এনে দিয়েছেন, বিবিয়ানা সম্পর্কে বললেন, ‘‘আমি মনে করি এবারের বিশ্বকাপে তিনি তাঁর যোগ্যতা প্রমাণ করতে সক্ষম হবেন৷ বিশ্বকাপের রেফারি হিসেবে তিনি এবার মাঠে নামবেন৷ সময়টি খুবই উপযুক্ত৷''

ফিফার ব়্যাংকিং-এ সবার আগে উঠে এসেছে রেফারি বিবিয়ানা স্টাইনহাউসের নাম৷ তিনি ফিফার তালিকাভুক্ত এবং উল্লেখযোগ্য একজন রেফারি৷ দুটি কাজ একসঙ্গে করছেন তিনি৷ পুলিশ অফিসারের কাজ করা এবং মাঠে রেফারি হয়ে ছুটোছুটি করা৷ বিবিয়ানা নিজেই জানালেন, ‘‘আমি বিশ্বাস করি যে দুটি পেশায় আমি কাজ করছি দুটোই দুই মাত্রার৷ একটি সঙ্গে আরেকটির কোন সম্পর্ক নেই, যোগাযোগও নেই৷ দুটো পেশাই অত্যন্ত পরিশ্রমের৷ তবে একদিক থেকে দুটি পেশাতে মিল রয়েছে৷ তা হল সিদ্ধান্ত নেয়া এবং তা দ্রুত পৌঁছে দেয়া৷''

Frauenfussball Deutschland - Niederlande
জার্মানির খেলোয়াড় কিম কুলিশছবি: dapd

জার্মানিতে প্রায় আশি হাজার রেফারি রয়েছে৷ তার মধ্যে মাত্র দুই শতাংশ হল মহিলা রেফারি৷ তাই জার্মানিও চেষ্টা করছে পেশাগতভাবে দক্ষ প্রমীলা রেফারি তৈরি করতে৷ আর এই ঘোষণার পরপরই শুরু ‘রেফারি ফিভার'৷ অনেক মহিলা এবং অল্প বয়স্ক মেয়ে যারা ফুটবল খেলোয়াড় হতে চেয়েছিলেন তারা হঠাৎ করেই এখন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারা রেফারি হবেন, পেশাগত রেফারি৷ আর এবছরের প্রমীলা বিশ্বকাপ তাদের ভেতর যুগিয়েছে উৎসাহ এবং প্রেরণা৷

তবে ফুটবল খেলা শুধু জনপ্রিয়তা, উন্মাদনা, উৎসাহ এবং প্রেরণা যোগাবে না৷ আর্থিকভাবে জার্মানি বেশ লাভবানও হবে৷ জানাচ্ছেন অর্থনীতিবিদরা৷ অর্থনীতিবিদ হেনিং ফোপেল ‘খেলাধুলা এবং অর্থনীতি' বিষয় নিয়ে গবেষণা করছেন হামবুর্গের বিশ্ব অর্থনীতি ইন্সটিটিউটে৷ ২০১১ সালের বিশ্বকাপের সঙ্গে তিনি তুলনা করলেন ২০০৬ সালের বিশ্বাকাপের৷ অর্থনীতিবিদ ফোপেল জানান, ‘‘প্রমীলা বিশ্বকাপের জনপ্রিয়তা ২০০৬ সালের মত হবে না৷ তবে এর কিছুটা প্রভাব অর্থনীতির ওপরও পড়বে৷ ২০০৬ সালে জার্মানি যেরকম ফুটবলপ্রেমী এবং সমর্থকদের জোয়ারে ভাসছিল এবার হয়তো সেরকম কিছু দেখা যাবে না৷ আমরা মনে হয় না কেউ তার প্রতিদিনের রুটিন সেভাবে বদলাবে৷ গ্রীষ্মকালের ছুটি বাদ দিয়ে কেউ স্টেডিয়ামে বসে থাকবে না৷ যেটা দেখা গিয়েছিল ২০০৬ সালে৷ সেই সময়ে গরমের ছুটি কাটিয়েছিল বহু জার্মান স্টেডিয়ামের ভেতর৷ তবে কিছুটা লাভতো হবেই !''

প্রতিবেদন: মারিনা জোয়ারদার

সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য