শহীদুল আলম কারাগারে
১৩ আগস্ট ২০১৮বার্তা সংস্থা এএফপিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ পুলিশ৷ ডিবি পুলিশের উপ-কমিশনার (উত্তর) মশিউর রহমানের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থাটি জানিয়েছে, রোববার তাঁকে ঢাকা চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) কোর্টে নেয়া হলে আদালত তাঁকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন৷
স্থানীয় গণমাধ্যমে দেয়া পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, শহীদুলের বিরুদ্ধে অভিযোগের তদন্ত চলাকালে তাঁকে কারাগরেই রাখার আর্জি জানিয়েছে পুলিশ৷
এদিকে, শহীদুলের আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া ইংরেজি দৈনিক দ্য ডেইলি স্টারের কাছে দাবি করেছেন, সোমবার তাঁকে কোর্টে তোলার কথা ছিল, কিন্তু তা না করে একদিন আগেই তা করা হয়েছে৷ তবে মশিউর রহমান অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, রিমান্ডের পর মেডিকেল চেকআপ করে নির্ধারিত সময়েই শহীদুলকে আদালতে তোলা হয়েছে৷
শহীদুলের বিরুদ্ধে কাতারভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম আল জাজিরা ও সামাজিক গণমাধ্যমে অসত্য ও উস্কানিমূলক তথ্য ছড়ানোর অভিযোগ রয়েছে৷ বিতর্কিত তথ্য প্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন মুক্তচিন্তা বিরোধী, নিপীড়নমূলকতাঁর বিরুদ্ধে মামলা করে পুলিশ৷
নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সময় গত ৫ আগষ্ট তাঁকে তাঁর ধানমণ্ডির বাসা থেকে গ্রেফতার করা হয়৷
এরপর পুলিশ তাঁর দশ দিনের রিমাণ্ড চাইলে আদালত সাত দিনের রিমাণ্ড মঞ্জুর করেন৷ পুলিশ হেফাজতে নির্যাতনের অভিযোগও আনেন ৬৩ বছর বয়সি এই প্রথিতযশা ফটোগ্রাফার৷
উচ্চ আদালত তাঁর স্বাস্থ্য পরীক্ষার নির্দেশ দিলে গত বুধবার সকালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল হাসপাতালে নেয়া হয়৷ স্বাস্থ্য পরীক্ষা শেষে দুপুরে আবার গোয়েন্দা হেফাজতে ফিরিয়ে আনা হয়৷
এদিকে, জেনেভায় প্রকাশিত এক বিবৃতিতে শহীদুলকে মুক্তির জন্য বাংলাদেশের কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন জাতিসংঘের মানবাধিকার বিশেষজ্ঞরা৷ এছাড়া, পুলিশের হেফাজতে তাঁর ওপর যেসব নির্যাতনের অভিযোগ এসেছে সেগুলো তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়ারও দাবি জানিয়েছেন৷
শহীদুল আলমের তোলা ছবি পৃথিবীর বিখ্যাত সব পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে৷ তিনি গ্যালারি দৃক এবং ফটোগ্রাফির স্কুল পাঠশালা'র প্রতিষ্ঠাতা৷
প্রসঙ্গত, ঢাকায় ২৯ জুলাই সড়ক দুর্ঘটনায় দুই স্কুলশিক্ষার্থী নিহতের ঘটনার পর নিরাপদ সড়কের দাবিতে রাস্তায় নেমে আসে বিভিন্ন স্কুল এবং কলেজের শিক্ষার্থীরা৷ এরপর কয়েকদিন রাজপথে বিভিন্ন গাড়িচালকের লাইসেন্স পরীক্ষাসহ নানা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করে তারা৷ এক পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের উপর পুলিশ এবং ‘সরকার দলের কর্মীরা' চড়াও হলে ছাত্র বিক্ষোভ সহিংস রূপ নেয়৷ স্কুল শিক্ষার্থীদের প্রতি সংহতি প্রকাশ করে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও রাজপথে বিক্ষোভ শুরু করে৷
হেলমেট পরা দুষ্কৃতিকারীরা সাংবাদিকদের ওপরও হামলা চালায়৷ কয়েকদিনের এই বিক্ষোভে কয়েকশত শিক্ষার্থীর পাশাপাশি সাংবাদিক, পুলিশ এবং ছাত্রলীগের কর্মীরা আহত হন৷ বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তারেরও ঘটনা ঘটে৷
জেডএ/ এসিবি