1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান
পরিবেশলিবিয়া

লিবিয়ায় বন্যা: ডারনা শহরে বিক্ষোভ, দমনের আশঙ্কা

২০ সেপ্টেম্বর ২০২৩

লিবিয়ার পূর্বাঞ্চলের ডারনা শহরে অতিবৃষ্টির পর ১১ সেপ্টেম্বর পানির তোড়ে দুটি বাঁধ ভেঙে সৃষ্ট বন্যায় এখন পর্যন্ত প্রায় চার হাজার মানুষ মারা যাওয়ার খবর দিয়েছে জাতিসংঘ৷ এছাড়া নিখোঁজ আছেন প্রায় ১০ হাজার জন৷

https://p.dw.com/p/4WaRL
লিবিয়া বন্যা
ছবি: Zohra Bensemra/REUTERS

শহরের বাসিন্দারা সোমবার বিক্ষোভ করেছেন৷ তারা পূর্বাঞ্চলীয় সংসদের স্পিকার আগিলা সালেহর বিরুদ্ধে শ্লোগান দেন ও ক্ষতিপূরণ দাবি করেন৷ এছাড়া আন্তর্জাতিক কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে শহর পুনর্গঠনের কাজ করারও দাবি জানান বিক্ষোভকারীরা৷

স্পিকার সালেহ গত সপ্তাহে বন্যাকে ‘আল্লাহর কাজ' আখ্যায়িত করে এর জন্য রাজনীতিবিদদের দায়ী না করতে নাগরিকদের সতর্ক করে দিয়েছিলেন৷ যদিও ডারনা শহরের দুটি বাঁধ ভেঙে যাওয়ার কারণেই এত প্রাণহানি হয়েছে৷ ২০২২ সালে ঠিক এমন আশঙ্কার কথাই জানিয়েছিলেন সিভিল ইঞ্জিনিয়ার আবদেলওয়ানিস আশুর৷ লিবিয়ার সাভা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক জার্নালে প্রকাশিত লেখায় তিনি বাঁধগুলো মেরামতের প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরেছিলেন৷ তিনি লিখেছিলেন, ‘‘বড় বন্যা হলে, উপত্যকা এবং শহরের বাসিন্দাদের জন্য এর পরিণতি হবে বিপর্যয়কর৷''

এদিকে, ডারনা শহর পুনর্গঠনের দায়িত্ব স্পিকার সালেহি, আবদেল মোনায়েম মেয়র আল-গাইতি (সদ্য বরখাস্ত হয়েছেন) ও পূর্বাঞ্চলীয় সরকারের পেছনে থাকা প্রভাবশালী সামরিক কর্মকর্তা জেনারেল খালিফা হাফতারের ছেলে সাদ্দাম হাফতারকে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পূ্র্বাঞ্চলীয় সংসদ৷ এর আগে ২০১৮ ও ২০১৯ সালে ডারনা শহরে জেনারেল হাফতারের অবরোধ ও যুদ্ধের পরও শহর পুনর্গঠনের দায়িত্ব এই তিন ব্যক্তিকে দেয়া হয়েছিল৷ কিন্তু বরাদ্দকৃত অর্থ খরচ হয়ে গেলেও তা কোথায় খরচ হয়েছে তা দেখানোর মতো কিছু ছিল না বলে ডয়চে ভেলেকে জানান ইউরোপিয়ান কাউন্সিল অন ফরেন রিলেশন্সের সিনিয়র পলিসি ফেলো তারেক মাগারিসি৷

এসব কারণে বিক্ষোভকারীরা এবার আন্তর্জাতিক কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে শহর পুনর্গঠনের কাজ করার দাবি জানিয়েছেন৷

দমনের আশঙ্কা

২০১৪ সাল থেকে লিবিয়ায় দুটি সরকার কাজ করছে৷ পশ্চিমাঞ্চলয়ী সরকারের রাজধানী ত্রিপোলি এবং সেখানে জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে গঠিত সরকার ক্ষমতায় আছে৷ আর পূর্বাঞ্চলীয় সরকারের রাজধানী তোব্রুক৷ সেখানে ক্ষমতায় জেনারেল হাফতার সমর্থিত সরকার৷ ডারনা শহরটি এই সরকারের অধীনেই পড়েছে৷ বিরোধীদের কঠোর হাতে দমনের জন্য পরিচিত জেনারেল হাফতার৷ তাই ডারনার বিক্ষোভকারীদের কথা শোনা হতে পারে বলে আশা করছেন না বিশ্লেষকরা৷ বরং বিক্ষোভ চলতে থাকলে তা দমন করা হতে পারে বলে আশঙ্কা তাদের৷ এর প্রমাণও মিলেছে৷

জার্মান ইনস্টিটিউট ফর ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড সিকিউরিটি অ্যাফেয়ার্সের গবেষক ভোলফ্রাম লাখার এক্স সামাজিক মাধ্যমে জানিয়েছেন, এক ব্যক্তি ডারনার মেয়র ও সংসদের স্পিকার সালেহর বিরুদ্ধে টিভিতে সাক্ষাৎকার দেয়ার সময় নিরাপত্তা কর্মীরা তা বন্ধ করে দেন৷ পরবর্তীতে লিবিয়ার সাংবাদিক মোহাম্মেদ এলগ্রাজ এক্স মাধ্যমে জানান, ডারনা থেকে সাংবাদিকদের বের করে দেয়ার নির্দেশ দিয়েছে সরকার৷

ইউরোপিয়ান কাউন্সিল অন ফরেন রিলেশন্সের তারেক মাগারিসিও সম্ভাব্য বিক্ষোভ দমন করা হতে পারে বলে মনে করছেন৷ তিনি বলেন, ‘‘হাফতার ও লিবিয়ার রাজনীতিবিদেরা ক্রোধ দমন ও প্রতিবাদী মানুষদের দমিয়ে রাখতে সিদ্ধহস্ত৷''

জেনিফার হোলাইস/জেডএইচ