1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

লিটনের আচরণের জন্য বিসিবির পক্ষ থেকে দুঃখ প্রকাশ

১৬ অক্টোবর ২০২৩

লিটন দাসের অভিযোগে বাংলাদেশের গণমাধ্যমকর্মীদের টিম হোটেল থেকে বেরিয়ে যাওয়ার অনুরোধ করেছিলেন নিরাপত্তাকর্মীরা। ওই ঘটনায় সমালোচনার মুখে দুঃখ প্রকাশ করেছেন লিটন। একইসেঙ্গে জানালেন, গণমাধ্যমের প্রতি তিনি বরাবরই শ্রদ্ধাশীল।

https://p.dw.com/p/4XZJz
লিটন দাস (ফাইল ফটো)
লিটন দাস (ফাইল ফটো)ছবি: Ashwini Bhatia/AP/picture alliance

সোমবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি পোস্ট দিয়েছেন লিটন। সেখানে বাংলাদেশের ক্রিকেটের এগিয়ে চলার পথে দেশের গণমাধ্যমকর্মীদের অবদানের কথাও স্বীকার করেছেন তিনি।

‘‘গতকাল টিম হোটেলে ঘটে যাওয়া অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার জন্য আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত। আসলে আমি বুঝতে পারিনি সেখানে এত গণমাধ্যমকর্মীদের অবস্থান ছিল। হুট করে ঘটে যাওয়া ঘটনার জন্য আমি দুঃখ প্রকাশ করছি। মিডিয়ার প্রতি আমি বরাবরই শ্রদ্ধাশীল। বাংলাদেশ ক্রিকেট এগিয়ে যাওয়ার পেছনে গণমাধ্যমকর্মীদের অবদান অনস্বীকার্য।''

চেন্নাই থেকে পুনেতে পৌঁছে বাংলাদেশ দল অবস্থান করছে পাঁচ তারকাবিশিষ্ট কনরাড হোটেলে। গতকাল রোববার ওই হোটেলেই বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে হয় বিশ্বকাপ কাভার করতে ভারতে যাওয়া বাংলাদেশের গণমাধ্যমকর্মীদের। আর সেটা ঘটে লিটনের প্রশ্নবিদ্ধ আচরণের কারণে।

অনুশীলন না থাকায় ক্রিকেটারদের দর্শন পেতে বাংলাদেশের গণমাধ্যমকর্মীরা হাজির হন টিম হোটেলে। দুপুরের খাবার খেতে বেরিয়ে তাসকিন আহমেদ, তাওহিদ হৃদয়, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদরা কুশলও বিনিময় করেন গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে। কিন্তু সৌহার্দ্যপূর্ণ সেই পরিবেশ পাল্টে যায় কিছুক্ষণ পরই।

গণমাধ্যমকর্মীদের উপস্থিতি দেখে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন সাম্প্রতিক সময়ে ব্যাট হাতে ছন্দে না থাকা লিটন। নিরাপত্তাকর্মীদের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করেন, ‘‘মিডিয়া এখানে কেন? আমার ছবি তুলছে কেন?''

নিরাপত্তাকর্মীদের সঙ্গে লিটনের কথোপকথনের বাকিটা অবশ্য শোনা যায়নি। তবে পুরোটাই যে নেতিবাচক ছিল তা বোঝা যায় কিছুক্ষণ পর। নিরাপত্তাকর্মীরা এসে বাংলাদেশের গণমাধ্যমকর্মীদের হোটেল থেকে বেরিয়ে যেতে অনুরোধ করেন। তারা জানান, গণমাধ্যমকর্মীদের উপস্থিতিতে ক্রিকেটাররা স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করছেন না।

বিসিবির পক্ষ থেকেও লিটনের এমন আচরণের জন্য দুঃখ প্রকাশ করা হয়েছে। পুনেতে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে টিম ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ বলেছেন, বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) এ ঘটনায় দুঃখিত। পাশাপাশি ঘটনাটি দেশের জন্যও লজ্জাজনক বলে মন্তব্য করেছেন খালেদ মাহমুদ। যদিও এটি লিটন ইচ্ছাকৃতভাবে করেননি বলে মনে করেন তিনি।

লিটনের এমন আচরণে বিসিবি উদ্বিগ্ন কি না, জানতে চাইলে মাহমুদ বলেছেন, ‘অবশ্যই বিসিবি বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন। আমার ধারণা লিটন এরই মধ্যে তার ফেসবুকে পেজে দুঃখ প্রকাশ করেছে। সে ইচ্ছাকৃতভাবে কিছু করেনি। হয়ত আপনাদের বের করে দেওয়ার কথাটাও সে বলেই নাই। সে হয়তো অস্বস্তি বোধ করছিল। আমি যেহেতু ছিলাম না, তাই সঠিক উত্তরটা দিতে পারব না। তবে ও যেটা বলেছে, সে অস্বস্তি বোধ করছিল। সেটাই সে নিরাপত্তারক্ষীদের জানিয়েছে। এখন নিরাপত্তারক্ষীরা আপনাদের কীভাবে জানিয়েছে, সেটা আমি জানি না।’

লিটনের এ ঘটনা দেশের জন্য লজ্জাজনক বলে মন্তব্য করে মাহমুদ বলেছেন, ‘আমি আবার বলছি, কোনো কিছুই ইচ্ছাকৃত ছিল না। আমরা সব সময় ভাবি যে আপনারা কষ্ট করে বাংলাদেশ থেকে এসেছেন। এটা আমাদের দেশের জন্যও লজ্জাজনক ব্যাপার, যদি আমাদের মিডিয়াকে এখান থেকে সরে যেতে বলা হয়। এটা আমাদের জন্যও ঠিক না। আমরা সব সময় আপনাদের ছবি তোলার জন্য, ভিডিও করার জন্য উৎসাহ দিই।’

লিটনকে এ রূপে আগে কখনো দেখেননি বলেও জানিয়েছেন মাহমুদ, ‘বাংলাদেশের কোনো খেলোয়াড় এর আগে কখনো এমনটা করেনি। লিটনকেও আমি কখনো উদ্ধত দেখিনি। এখন সে সময় কী হয়েছিল ওর, সেটা আমি জানি না। এখন আমি যেটা বলেছি, সেটা ওর সঙ্গে আমার যে কথা হয়েছে তার ভিত্তিতে বলেছি।’

অবশ্য লিটনের এমন আচরণের পেছনে তাঁর সাম্প্রতিক ব্যর্থতাও কারণ হিসেবে থাকতে পারে বলে মনে করেন মাহমুদ। বিসিবির পক্ষ থেকে দুঃখ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘যেটা হয়, কোনো দল হারলে অনেক সময় নেগেটিভিটি কাজ করে। নিজেদের গুটিয়ে রাখতে চায়। আমরা চেষ্টা করছি একসঙ্গে বাইরে গিয়ে ডিনার করার এবং সবকিছু করার। তবে দিন শেষে শারীরিক চাপের চেয়েও মানসিক চাপটা অনেক বেশি। রান করতে পারছে না সেটা সমস্যা তৈরি করছে। ওই সব কারণে কিছু হয়েছে কি না, জানি না। কিন্তু আমি বাংলাদেশ ক্রিকেট দল এবং বিসিবির পক্ষ থেকে দুঃখ প্রকাশ করছি। আমরা চাই আপনারা বিষয়টাকে ইতিবাচকভাবে নিয়ে বাকি ৬ ম্যাচেও  সমর্থন করবেন, যাতে ইনশা আল্লাহ আমরা ভালো করতে পারি।’

উল্লেখ্য, আগামী বৃহস্পতিবার পুনের মহারাষ্ট্র ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন স্টেডিয়ামে বিশ্বকাপে নিজেদের চতুর্থ ম্যাচে মাঠে নামবে বাংলাদেশ। সেদিন সাকিব আল হাসানের দল মোকাবিলা করবে স্বাগতিক ভারতকে।.

কেএম/এসিবি (ডেইলি স্টার)