1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

লড়াই নয়, ইরাকে মার্কিন সেনা শুধু প্রশিক্ষণ দেবে

২৭ জুলাই ২০২১

আফগানিস্তানের পর এবার ইরাক। বাইডেন জানিয়েছেন, ইরাকে মার্কিন সেনা আর লড়াই করবে না। তারা প্রশিক্ষণ দেবে।

https://p.dw.com/p/3y6Is
ইরাকের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনার পর মার্কিন সেনার নতুন ভূমিকার কথা জানান বাইডেন। ছবি: Susan Walsh/AP/picture alliance

ইরাক থেকেও এবার নিজেদের গুটিয়ে নিচ্ছে অ্যামেরিকা। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইরাকে অ্যামেরিকার সেনার ভূমিকা বদলের কথা জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ''মার্কিন সেনা আর ইরাকে লড়াই করবে না। তবে আইএসের বিরুদ্ধাচরণ করা হবে। দুই দশকের লড়াই শেষ করে এই বছরের শেষে মার্কিন সেনা ইরাকে প্রশিক্ষকের ভূমিকা নেবে। তারা ইরাকের সেনাকে প্রশিক্ষণ দেবে।''

তবে ইরাক থেকে সেনা প্রত্যাহার করা হবে না। বাইডেন বলেছেন, ''ইরাকে এখনো আড়াই হাজার মার্কিন সেনা আছে। ইরাকে আমরা থাকব। আমরা ইরাকের সেনাকে প্রশিক্ষণ দেব। সাহায্য করব। যখন প্রয়োজন হবে, তখন আইএসআইএসের সঙ্গে কীভাবে মোকাবিলা করতে হবে, সেই কাজে তাদের সাহায্য করব। এই বছরের শেষ থেকে আমরা আর যুদ্ধক্ষেত্রে থাকব না।''

আফগানিস্তান থেকে ৯ সেপ্টেম্বরের মধ্যে সব মার্কিন সেনা দেশে ফিরে যাবে। দীর্ঘ দুই দশকের লড়াইয়ের পর তারা দেশে ফিরবে। ইরাক থেকে সেনা প্রত্যাহার করা হবে না। কিন্তু মার্কিন সেনা আর আইএসের বিরুদ্ধে সরাসরি লড়াই করবে না। এই বছরের শেষ থেকে সেই দায়িত্ব নিতে হবে ইরাকের সেনাকেই। তাদের প্রশিক্ষণ ও সাহায্য করবে অ্যামেরিকা। অর্থাৎ, আফগানিস্তানের পর ইরাক থেকেও দুই দশক পর নিজেদের গুটিয়ে নেয়ার কাজ শুরু করে দিলেন অ্যামেরিকার প্রেসিডেন্ট। সেনা প্রত্যাহার না করেও নিজেদের ভূমিকাকে একেবারে সীমাবদ্ধ করে দিচ্ছে অ্যামেরিকা।

সোমবারই মার্কিন কর্মকর্তা জানিয়েছিলেন, ''ইরাকে আমরা আইএসের বিরুদ্ধে যুদ্ধের মিশন থেকে সরে এসে একটা নতুন ভূমিকায় থাকবে। পরামর্শদাতা ও প্রশিক্ষকের ভূমিকা নেবে।''

তারপর ইরাকের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পর বাইডেন মার্কিন সেনার নতুন ভূমিকার বিষয়ে ঘোষণা করেন।

প্রধানমন্ত্রীর উপর চাপ

ইরাকের প্রধানমন্ত্রীর উপরও প্রবল চাপ রয়েছে। বেশ কয়েকটি ইরানপন্থি সংগঠন চাইছে, মার্কিন সেনা ইরাক ছেড়ে চলে যাক। তিন মাস পরে ইরাকে নির্বাচন। ঠিক এই সময় গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিলেন বাইডেন।

বছরের পর বছর ধরে লড়াই, দুর্নীতি ও দারিদ্র্যের ফলে ইরাকের অবস্থা শোচনীয়। দেশের পরিকাঠামো ভেঙে পড়ার মুখে। প্রায়ই বিদ্যুৎ থাকে না। প্রবল গরমের সময় পরিস্থিতি অসহনীয় হয়ে ওঠে।

বাইডেনের এই ঘোষণার পর ইরাকের প্রধানমন্ত্রী এখন তেহরানপন্থি গোষ্ঠীগুলির সমর্থন পাওয়ার আশা করছেন। সম্প্রতি এই গোষ্ঠাীগুলি সমানে মার্কিন সেনার উপর রকেট হামলা চালিয়েছে। মার্কিন বাহিনীও প্রত্যাঘাত করছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, বাইডেন কখনওই ইরাক থেকে সব মার্কিন সেনাকে সরিয়ে নেবেন না। ইরাকের বিষয়ে ইরান প্রভাব বিস্তার করুক তা তিনি চাইবেন না। ওয়াশিংটন ইনস্টিটিউটের হামিদ মালিক এএফপি-কে বলেছেন, ''ইরাক থেকে নাটকীয়ভাবে মার্কিন সেনার সংখ্যা কমিয়ে দেয়া হবে এমন আশা করা উচিত হবে না।'' 

শিকাগো পিয়ারসন ইনস্টিটিউটের মারদিনির দাবি, ''ইরাকের প্রধানমন্ত্রী যাতে দেশের ভিতরে ভালো জায়গায় থাকতে পারেন, সেই জন্যই অ্যামেরিকা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এতে বাস্তব পরিস্থিতি বিশেষ বদলাবে না।''

ইরাকে বিপদ কাটেনি

আফগানিস্তান থেকে মার্কিন ও ন্যাটো সেনা দেশে ফেরার পর সেখানে তালেবান একের পর এক এলাকা দখল করে নিচ্ছে। ইরাকে মার্কিন সেনার ভূমিকা সীমাবদ্ধ হলে সেখানেও কি একই অবস্থা হবে? এক কর্মকর্তার দাবি, ইরাকি বাহিনী প্রশিক্ষিত এবং তারা যুদ্ধে পারদর্শী। তারা নিজের দেশকে বাঁচাতে সক্ষম। প্রধানমন্ত্রীও বলেছেন, ইরাকের বাহিনী নিজে থেকেই পরিস্থিতি সামাল দিতে পারবে। বিদেশি সেনার উপস্থিতির কোনো প্রয়োজন নেই। 

কিন্তু আইএস এখনো ইরাকের কাছে বিপদের কারণ। গত সপ্তাহেই বাগদাদের বাজারে তারা রাস্তার ধারে বোমা বিস্ফোরণ করেছে। তাতে ৩০ জন মারা গেছেন। 

জিএইচ/এসজি(এপি, এএফপি, রয়টার্স)