উপন্যাস
২৮ সেপ্টেম্বর ২০১২উপমহাদেশে হ্যারি পটারের ফ্যানদের সংখ্যা খুব কম নয়৷ হ্যারি পটার লিখে যে মহিলা নাকি ইংল্যান্ডের রানির থেকেও বেশি বিত্তশালী হয়ে উঠেছেন, তাঁর প্রথম বড়দের জন্য লেখা অ-হ্যারি পটার উপন্যাসে যদি একটি উপমহাদেশীয় শিখ পরিবার এ রকম গুরুত্ব পায়, তাহলে সেটা বইটার কাটতির পক্ষে স্বভাবতই খারাপ হতে পারে না৷
রোওলিং নিজেও বলেছেন এবং বইটির প্রাথমিক ভারতীয় পাঠক-পাঠিকারাও বলছেন, রোওলিং সত্যিই শিখ ধর্ম নিয়ে পড়াশুনো করেছেন৷ তাঁর বয়স যখন বিশের কোঠায় তখন নাকি তাঁর এক শিখ তরুণীর সঙ্গে আলাপ ছিল৷ তখন থেকেই তিনি শিখ ধর্ম সম্পর্কে আগ্রহী৷ শিখ ধর্মের সমতার দিকটা তাঁকে মুগ্ধ করেছিল৷ সেই কারণে তাঁর বইতে তিনি শিখ ধর্মকেই নৈতিকতার মান করেছেন, বলেছেন রোওলিং, চার্চ অফ ইংল্যান্ডকে নয়৷ একটি খালি গির্জার মাধ্যমে তিনি চার্চ অফ ইংল্যান্ডের দশা দেখিয়েছেন৷
অবশ্য কাহিনির উপজীব্য শিখ ধর্ম কিংবা শিখ পরিবার নয়৷ দক্ষিণ-পশ্চিম ইংল্যান্ডের কাল্পনিক প্যাগফোর্ড গ্রামের প্যারিশ কাউন্সিলের এক সদস্য হঠাৎ মারা যাওয়ার পর তাঁর পদ পূরণ করা নিয়ে কাহিনি৷ আবার একটা হাউজিং এস্টেটের কাহিনিও বটে৷ বইটিতে আছে যৌনতা এবং ড্রাগস৷ কিন্তু সব সত্ত্বেও অনেক পাঠক-সমালোচকরা বলছেন, রোওলিং'এর হাত খোলে যখন তিনি বড়দের জগতেও ছোটদের নিয়ে লেখেন৷
উপন্যাসটির আরেকটা দিক যা সবাইকে নাড়া দিয়েছে, সেটা হল রোওলিং'এর মৃত্যু নিয়ে চিন্তাভাবনা, সংশয়৷ তাঁর মা মারা যান মাত্র ৪৫ বছর বয়সে, রোওলিং'এর বয়স তখন ২৫৷ তখন থেকেই মৃত্যু নিয়ে তাঁর এই অবসেশন, বলেছেন রোওলিং৷ কিন্তু মৃত্যু সম্পর্কে লিখলে নাকি মৃত্যুভয় কমে যায়৷ অবশ্য ‘দ্য ক্যাজুয়াল ভ্যাকান্সি' লিখে আরেকটা স্বস্তি পেয়েছেন রোওলিং৷ সেটা হল, হ্যারি পটার বইগুলোর অমানুষিক চাপের পর এমন একটা বই লেখা, ‘‘যেটা না ছাপলেও চলে'', নিজেকে বলতেন নাকি রোওলিং৷
সেই না-ছাপলেও-চলে বইয়ের দশ লাখ কপি অর্ডার হয়েছে বই বেরনোর আগে৷ আপাতত অ্যামাজন চার্টের টপে৷ সম্ভবত এ বছর ব্রিটেনের টপ সেলিং বই হবে৷ একেই বলে ম্যাজিক৷
এসি/ডিজি (এএফপি, পিটিআই)