1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান
রাজনীতিফ্রান্স

রাষ্ট্রীয় সফরে গিয়েও কড়া কথা শোনালেন মাক্রোঁ

১ ডিসেম্বর ২০২২

অ্যামেরিকায় রাষ্ট্রীয় সফরের শুরুতেই ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট শিল্পক্ষেত্রে বিশাল মার্কিন ভরতুকির কড়া সমালচনা করলেন৷ এমনকি পশ্চিমা বিশ্বে ফাটলেরও আশঙ্কা প্রকাশ করেন মাক্রোঁ৷ বৃহস্পতিবার বাইডেনের সঙ্গে বৈঠক করছেন তিনি৷

https://p.dw.com/p/4KKBL
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাক্রোঁ
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাক্রোঁছবি: Thibault Camus/AP/picture alliance

এমানুয়েল মাক্রোঁ ফ্রান্সের একমাত্র প্রেসিডেন্ট, যিনি দু-দুটি রাষ্ট্রীয় সফরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পা রাখলেন৷ এমন সম্মান সত্ত্বেও তিনি ইউরোপের স্বার্থে অ্যামেরিকার কড়া সমালোচনা করতে দ্বিধা বোধ করছেন না৷ সফরের প্রথম দিনেই তিনি মার্কিন সংসদ সদস্য ও শিল্পপতিদের স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিলেন, যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের একটি নীতি পশ্চিমা বিশ্বে ফাটল সৃষ্টি করতে পারে৷ করোনা মহামারি ও ইউক্রেন যুদ্ধের জের ধরে অ্যামেরিকা শিল্পক্ষেত্রে যে ভরতুকি দিচ্ছে, তার ফলে ফ্রান্সসহ ইউরোপের প্রতিযোগীদের মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট৷

বাইডেন প্রশাসন ‘ইনফ্লেশন রিডাকশন অ্যাক্ট' নামের আইনের আওতায় পরিবেশবান্ধব শিল্পক্ষেত্রের জন্য বিশাল অংকের অর্থ ঢালতে শুরু করেছে৷ অ্যামেরিকায় উৎপাদন চাঙ্গা করতে এবং পুনর্ব্যবহারযোগ্য জ্বালানি প্রয়োগে উৎসাহ দিতে মার্কিন কোম্পানিগুলিকে সরকার এভাবে সুবিধাজনক অবস্থায় আনতে চাইছে৷ কিন্তু এর ফলে মুক্ত বাজার অর্থনীতির মৌলিক শর্তই প্রশ্নের মুখে পড়ছে বলে ইউরোপ মনে করছে৷ পালটা পদক্ষেপ হিসেবে ইউরোপীয় ইউনিয়নও নিজস্ব ‘গ্রিন ইকোনমিক' ক্ষেত্রের জন্য সরকারি ভরতুকির বিষয়ে ভাবনাচিন্তা করছে৷ এমনটা ঘটলে অ্যামেরিকা ও ইউরোপের মধ্যে বাণিজ্য যুদ্ধের আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যায় না৷

নিজেকে অ্যামেরিকার ‘ভালো বন্ধু' হিসেবে বর্ণনা মাক্রোঁ বুধবার বলেন, ‘‘আমি অ্যামেরিকার পণ্যের বাজার হয়ে উঠতে চাই না, কারণ আমার কাছেও আপনাদের মতো হুবহু সেই সব পণ্যই রয়েছে৷ আইআরএ আইনের পরিণতি হিসেবে আপনাদের সমস্যার হয়তো সমাধান হবে, কিন্তু তাতে আমার সমস্যা বাড়বে৷'' পরে ফরাসি দূতাবাসে মাক্রোঁ বলেন, পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তির আরও প্রসারের জন্য অ্যামেরিকার উদ্যোগ ভালো হলেও সে ক্ষেত্রে ভরতুকিই সমস্যা সৃষ্টি করছে৷ ইউক্রেন সংকট, চীনের প্রভাবপ্রতিপত্তির মোকাবিলার মতো বিষয়ে অ্যামেরিকা ও ইউরোপের মধ্যে নিবিড় সহযোগিতা সত্ত্বেও অর্থনীতির ক্ষেত্রে সংঘাতের আশঙ্কা নিয়ে তিনি চিন্তিত৷ ইউরোপের গ্যাস সংকটের সময়ে অ্যামেরিকা থেকে তরল প্রাকৃতিক গ্যাস সরবরাহের কারণে কৃতজ্ঞতা থাকলেও সেই গ্যাসের উচ্চ মূল্যও ইউরোপে ক্ষোভ সৃষ্টি করছে৷

ওয়াশিংটনে পৌঁছেই মাক্রোঁর এমন চাঁচাছোলা মন্তব্যের কারণে রাষ্ট্রীয় সফরের তাল কেটে যাওয়ার আশঙ্কা উড়িয়ে দিয়ে হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, যে দুই দেশের প্রেসিডেন্টের ‘উষ্ণ সম্পর্ক'-ই এই রাষ্ট্রীয় সফরের কেন্দ্রবিন্দু৷ হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি কারিন জঁ-পিয়ের বলেন, অ্যামেরিকা নির্মল জ্বালানির ক্ষেত্রে উন্নতির যে উদ্যোগ নিচ্ছে, তা ইউরোপীয়দেরও সাহায্য করবে৷ আইআরএ আইন ইউরোপীয় কোম্পানিগুলির জন্যও উল্লেখযোগ্য সুবিধা বয়ে আনবে এবং ইইউ-র জ্বালানি নিরাপত্তা জোরদার করবে৷

অ্যামেরিকার ভরতুকি আইন নিয়ে প্রবল ক্ষোভ প্রকাশ করলেও ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট বলেন, মতপার্থক্য সত্ত্বেও অ্যামেরিকা ও ফ্রান্সের সম্পর্কের ভিত্তি অত্যন্ত শক্ত৷ তিনি ঐতিহাসিক এই সহযোগিতার বিশেষ প্রশংসা করেন৷ বুধবার তিনি মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসের সঙ্গে নাসার সদর দফতরে মহাকাশে সহযোগিতার বিষয়ে আলোচনা করেন৷ মাক্রোঁ চাদে প্রথম ফরাসি মহাকাশচারী পাঠানোর প্রস্তাব দেন৷ উল্লেখ্য, অ্যামেরিকার ‘আর্টেমিস' কর্মসূচির আওতায় চাঁদে আবার মানুষ পাঠানোর উদ্যোগে ইউরোপীয় মহাকাশ সংস্থাও অংশ নিচ্ছে৷

এসবি/কেএম (এএফপি, ডিপিএ)