রাশিয়ার সবচেয়ে সুন্দর কয়েকটি গন্তব্যস্থল
বিশ্বের সবচেয়ে বড় দেশ রাশিয়া৷ ইউরোপ, এশিয়া– দুই মহাদেশ জুড়েই আছে দেশটি৷ ফলে বৈচিত্র্যের শেষ নেই৷ আছে সমৃদ্ধ ইতিহাসও৷
মস্কো ক্রেমলিন
ক্রেমলিন শব্দের অর্থ দুর্গ৷ রাশিয়ার অনেক শহরে এর দেখা পাওয়া যায়৷ তবে সবচেয়ে বিখ্যাত অবশ্যই রাজধানী মস্কোর ক্রেমলিন৷ অতীতে গ্র্যান্ড ডিউক, পরে সোভিয়েত সরকার আর এখন পুটিন সেখানে থেকে দেশ শাসন করছেন৷ ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায় ক্রেমলিনের নাম আছে৷ আছে রেড স্কয়্যারের নামও৷
শহর মস্কো
মস্কোতে গেলে একদিকে যেমন অভিজাত আর উঁচু, বিলাসবহুল আবাসিক ভবনের দেখা পাওয়া যাবে, তেমনি দারিদ্র্যও চোখে পড়বে৷ কমিউনিজম আর ক্যাপিটালিজম, ধনি আর গরিব, উঁচু ভবন আর সোভিয়েত আমলের মনুমেন্ট৷ এসব কারণেই মস্কো ঘুরতে যাওয়া বেশ উত্তেজনার একটি বিষয়৷
সেন্ট পিটার্সবার্গ
প্রায় দুই শতাব্দী সময়কাল ধরে রাশিয়ার মতো বিশাল দেশ পরিচালিত হয়েছে সেন্ট পিটার্সবার্গ থেকে৷ নেভা নদীর তীরে অবস্থিত এই শহর পর্যটকদের জন্য এক বড় আকর্ষণ৷ বিশ্বখ্যাত মিউজিয়াম অ্যার্মিটাজ, রাশিয়ার ভার্সাই বলে খ্যাত পিটার্সহফ (ছবি), রুশ শাসকদের সরকারি বাসভবন উইন্টার প্যালেস ইত্যাদি আছে সেখানে৷
গোল্ডেন রিং
মস্কোর উত্তর-পূর্বের আটটি শহর মিলে এই রিং গঠিত৷ রাশিয়ার ইতিহাসের অনেক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার সঙ্গে জড়িত এসব শহর৷ আজও সেখানে গেলে অপূর্ব সব গির্জার দেখা পাওয়া যায়৷ ছবিতে সার্গিয়েভ পোসাদ শহরের ট্রিনিটি গির্জা দেখা যাচ্ছে৷
কালিনিনগ্রাদ
এটি রাশিয়ার সবচেয়ে পশ্চিমের শহর৷ মূল ভূখন্ড থেকে একেবারে পৃথক এই শহর পোল্যান্ড ও লিথুয়ানিয়ার মাঝে অবস্থিত৷ ১৯৪৫ সালের আগে নাম ছিল ক্যোনিগসব্যার্গ৷ শহরের সবচেয়ে বিখ্যাত মানুষ জার্মান দার্শনিক এমানুয়েল কান্ট৷ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় শহরটি ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল৷ ছবিতে পুনর্নির্মাণ করা চতুর্দশ শতকের ক্যোনিগসব্যার্গ ক্যাথিড্রাল দেখা যাচ্ছে৷
ক্যামচাতকা
রাশিয়ার সবচেয়ে পূর্বে ক্যামচাতকা উপত্যকা অবস্থিত৷ একসময় সেখানে যাওয়ার অনুমতি ছিল না৷ ক্যামচাতকায় আছে প্রায় ৩০০ আগ্নেয়গিরি, যার অনেকগুলোই সক্রিয়৷ আছে প্রায় ১০ হাজার বাদামি ভল্লুক, যাদের প্রিয় খাবার স্যামন মাছ৷
ভল্গা নদী
প্রায় সাড়ে তিন হাজার কিলোমিটার দীর্ঘ এই নদী ইউরোপের সবচেয়ে দীর্ঘ৷ ভল্গা নিয়ে অনেক গান আর কবিতা লিখা হয়েছে৷ পর্যটকদের জন্য ভল্গায় ক্রুজের ব্যবস্থা আছে৷ সেখান থেকে নদীর পাড়ের ছোট, বড় শহরগুলো দেখা যায়৷
ভল্গোগ্রাদ
পূর্ব নাম স্ট্যালিনগ্রাদ৷ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় অন্যতম বড় যুদ্ধটি হয়েছিল সেখানে৷ মারা গিয়েছিল প্রায় সাত লক্ষ মানুষ৷ তাঁদের স্মৃতির উদ্দেশ্যেই ৮০ মিটার উঁচু ‘মাদার হোম’ স্তম্ভটি নির্মাণ করা হয়েছে৷ বিশ্বযুদ্ধে একেবারে ধ্বংস হয়ে যাওয়া শহরটি পরে পুনরায় সোভিয়েত স্টাইলে গড়ে তোলা হয়৷
ট্রান্স-সাইবেরিয়ান রেলওয়ে
বিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘ রেলপথ৷ ৯,২৮৮ কিলোমিটার! মস্কো থেকে ভ্লাদিভস্তক যেতে সময় লাগে সাত থেকে নয় দিন৷ সাধারণ ট্রেন ছাড়াও আছে বিশেষ ট্রেন৷ বিশাল রাশিয়ার বেশিরভাগ অংশের বৈশিষ্ট্য বুঝতে অনেক পর্যটক এই দীর্ঘ সময়ের রেলযাত্রা বেছে নেন৷
সাইবেরিয়া
রাশিয়ার প্রায় তিন-চতুর্থাংশ এলাকা জুড়ে আছে সাইবেরিয়া৷ যেখানে ইউরোপের শেষ আর এশিয়ার শুরু, অর্থাৎ উরাল পর্বতমালা থেকে সাইবেরিয়ার শুরু৷ তুন্দ্রা আর তৈগা বনাঞ্চলের দেখা পাওয়া যাবে সেখানে৷
বৈকাল হ্রদ
বিশ্বের সবচেয়ে পুরনো ও গভীর স্বাদু পানির হ্রদ এটি৷ ৬৩৬ কিলোমিটার দীর্ঘ, ৪৮ কিলোমিটার প্রশস্ত আর ১,৬৩৭ মিটার গভীর৷ সাইবেরিয়ার দক্ষিণাঞ্চলে এটি অবস্থিত৷ হাইকিংয়ের জন্য বৈকাল হ্রদ বিখ্যাত৷ কিন্তু সম্ভবত সাঁতারের জন্য নয়, কারণ, সেখানে পানির সর্বোচ্চ তাপমাত্রা মাত্র ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস!
সোচি
ব্ল্যাক সি’র পাড়ে অবস্থিত সোচিকে রাশিয়ার গ্রীষ্মকালীন রাজধানী বলা যায়৷ কারণ, গ্রীষ্মের মাঝামাঝি সেখানকার পানির তাপমাত্রা থাকে ২৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস৷