রাজনীতির হট টপিক: জাতীয় ঐক্য
নির্বাচনকে সামনে রেখে এখন সবচেয়ে বেশি আলোচিত বিষয় হলো জাতীয় ঐক্য৷ ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে একটি জাতীয় ঐক্যের ডাক দেবার পর যুগপৎ আন্দোলনে যোগ দেয় বিএনপি৷ সরে যেতে হয়েছে বি চৌধুরীর বিকল্পধারাকে৷
রাজনৈতিক সংস্কৃতি
বাংলাদেশে সুদীর্ঘ কাল ধরেই জোটের রাজনীতি চলে আসছে৷ এরশাদবিরোধী আন্দোলনে যেমন বিএনপি নেতৃত্ব দিয়েছিল সাত দলীয় জোট করে৷ এরপর নানা সময়ে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি নির্বাচনীয় জোট-মহাজোট করেছে৷ এর বাইরে ছোট দলগুলোও নানা সময়ে যৌথভাবে ঐক্য গড়ার প্লাটফর্ম করেছে৷
এবারের প্রেক্ষাপট
আওয়ামী লীগ টানা দ্বিতীয়বার সরকারে আছে৷ এই আমলে ঘটে যাওয়া নানা ঘটনা ও সিদ্ধান্তে খুশি নন বিরোধী রাজনীতিকরা৷ তাঁদের একজন ড. কামাল হোসেন৷ তাই তিনি সম্প্রতি সরকারবিরোধী জাতীয় ঐক্যের ডাক দেন৷ ২২ সেপ্টেম্বর সমাবেশের মাধ্যমে এই জোটের যাত্রা শুরু হয়৷
কারা আছেন এই ঐক্যে
২২ সেপ্টেম্বরের সমাবেশে বিকল্পধারার সভাপতি এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আবদুর রব, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্নাসহ আরো অনেকে ছিলেন৷ সেখানে মির্জা ফখরুল ইসলাস আলমগীরের নেতৃত্বে মওদুদ আহমেদ, খন্দকার মোশাররফ হোসেন ও মঈন খানসহ বিএনপির নেতা-কর্মীরা যোগ দেন৷
২০ দলীয় জোটে ভাঙ্গন?
এলডিপির অলি আহমেদ ও কল্যাণ পার্টির সৈয়দ মুহাম্মদ ইব্রাহীমসহ সমাবেশে বিএনপির নেতৃত্বাধীন বিশ দলীয় জোটের শরিক দলের নেতাদের অনেকেই ছিলেন না৷ এদিকে, ২০ দলীয় জোট থেকে বেরিয়ে গেছে ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি ও ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি৷
দেনা-পাওনার হিসেব
ঐক্য প্রক্রিয়া কার্যকর কতটা হবে, তা অনেকটা নির্ভর করছে দেনা পাওনার হিসেবে৷ এরই মধ্যে স্থানীয় গণমাধ্যমে এসেছে যে, বিকল্পধারার মাহী বি চৌধুরী ১৫০ আসন চেয়েছেন৷ আর নাগরিক ঐক্যের মাহমুদুর রহমান মান্না চেয়েছেন অন্তত দুই বছর ক্ষমতা পরিচালনার দায়িত্ব৷ এছাড়া জামায়াতকে ছেড়ে বিএনপি যেন ঐক্যে যোগ দেয়, সে শর্তও আছে তাদের৷
বিকল্পধারা’র বিদায়
জামায়াতকে ত্যাগ ও আসন ভাগাভাগির বিষয়ে সমঝোতা না হওয়ায় বি চৌধুরীর বিকল্পধারাকে বাদ দিয়েই শেষমেষ জাতীয় ঐক্য করে বিএনপি ও অন্য দলগুলো৷
আওয়ামী লীগেরও ডাক
এদিকে, ‘মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু প্রশ্নে’ অসাম্প্রদায়িকতার ভিত্তিতে বামপন্থি দলগুলোর সঙ্গে ঐক্য গড়তে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের৷
বাসদ ও সিপিবির ‘না’
আওয়ামী লীগের ডাকের জবাবে বাসদ ও সিপিবি এই ডাকে আপাতত ‘না’ বলে দিয়েছে৷ ‘‘আমরা এ ভুল করব না৷ আওয়ামী লীগ-বিএনপি এই দুই দুঃশাসনের কারও ঘরেই আমরা জনগণের সংগ্রামের ফসল দেব না৷’’ বলেছেন সিপিবি সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম৷
আলোচনা চলবে
রাজনীতিতে কোনো কথাই শেষ নয়৷ তাই আলোচনা, হিসেব-নিকেশ চলবে৷ বিশেষ করে নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসবে, পরিস্থিতি তত দ্রুত বদলাবে৷ ঐক্য বা জোটের বিষয়েও সিদ্ধান্ত যে কোনো সময় বদলে যেতে পারে৷