1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

রাজনীতি নিয়ে ভাবছেন না খালেদা জিয়া

হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
১৩ মে ২০২০

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে গুলশানের বাসায় ডেকে নিয়ে কথা বলেছেন দলটির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া৷ তাদের একান্ত বৈঠকে কি কথা হয়ে তা নিয়ে কৌতূহল আছে বেশ৷

https://p.dw.com/p/3cALH
গত ২৫ মার্চ ছয় মাসের জন্য মুক্তি পেয়ে বাসায় ফেরার পথে খালেদা জিয়াছবি: bdnews24

এটা দলের নেতা-কর্মীরা যেমন জানতে চান, তেমনি আগ্রহ আছে সরকারেও৷ কিন্তু ফখরুল ইসলাম আলমগীর ডয়চে ভেলেকে বলেছেন, ‘‘রাজনৈতিক নয়, ওটা ছিলো মূলত সৌজন্য সাক্ষাৎ৷ তিনিতো অসুস্থ৷ রাজনীতি নিয়ে কথা বলার সময় কোথায়!’’

১১ এপ্রিল রাত নয়টার পর খালেদা জিয়ার গুলশানের বাসায় মির্জা ফখরুল দেখা করেন৷ তিনি খালেদা জিয়ার বাসায় প্রায় দেড় ঘণ্টা ছিলেন৷ তারপরও খালেদা জিয়াকে ত্রাণ তৎপরতা ও দলের বর্তমান অবস্থা নিয়ে খালেদা জিয়াকে জানিয়েছেন মির্জা ফখরুল৷ করোনায় চিকিৎসা, কৃষি উৎপাদন পর্যবেক্ষণ ও দলের ত্রাণ তৎপরতা পর্যবেক্ষণের জন্য জাতীয় করোনা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ সেল গঠনের কথা তিনি জানান দলের চেয়ারপারসনকে৷ সারাদেশে কর্মহীন ও গরিব মানুষকে সহায়তার জন্য দলের পক্ষ থেকে নেতা-কর্মীদের চিঠি দেয়ার কথাও জানানো হয়৷

রাজনৈতিক নয়, ওটা ছিলো মূলত সৌজন্য সাক্ষাৎ: মির্জা ফখরুল

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘এগুলোতো সাধারণ আলোচনা৷ করোনা পরিস্থিতি, ত্রাণ তৎপরতা এগুলো তাকে জানানো হয়েছে৷ সৌজন্য সাক্ষাতে তো আর বিস্তারিত আলোচনা হয় না৷’’ তিনি দলের জন্য কোনো নির্দেশনা দিয়েছেন কিনা জানাতে চাইলে বলেন, ‘‘না কোনো নির্দেশনা দেননি, তিনি অসুস্থ৷’’

গত ২৫ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় প্রিজন সেল থেকে ছয় মাসের জন্য মুক্তি পাওয়ার দিনখালেদা জিয়ার সাথে মির্জা ফখরুলের এক ঝলক দেখা হয়৷ দলের মহাসচিব ৪৮ দিন পর তার বাসায় গিয়ে দেখা করলেন৷ মুক্তি পাওয়ার পর তিনি ১৪ দিনের হোম কোয়ারান্টিনে ছিলেন৷ কোয়ারান্টিন শেষ হওয়ার পরও তার পরিবারের লোকজন ছাড়া দলের কোনো নেতার দেখা করার অনুমতি মেলেনি৷ মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘এতদিন তো করোনার কারণে আমরা কেউ তার সাথে দেখা করতে পারিনি৷ এবার তিনি দেখা করলেন৷’’

তবে এরমধ্যে দলীয় আর কোনো নেতা খালেদা জিয়ার সাথে দেখা করেননি বলে জানান বিএনপির চেয়ারপার্সনের প্রেস উইং-এর সদস্য শায়রুল কবির খান৷ তিনি জানান, ‘‘খালেদা জিয়ার পুত্রবধু ডা. জোবায়াদা রহমানের তত্ত্বাবধানে ঢাকায় তার বোন, ভাই, ভাইয়ের বউ তার দেখাশোনা করেন৷ এখন প্রতিদিন ইফতারির আগে তার বাসায় যান৷ আর তার ব্যাক্তিগত চিকিৎসক ডা. এ জেড এম জাহিদের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের চিকিৎসক দল তার চিকিৎসার দিকটা দেখছেন৷ তাকে এখন বাসায় রেখেই চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে৷ পরিস্থিতির কারণে আপাতত তিনি কোনো হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেনা না৷’’

পরিস্থিতির কারণে তিনি আপাতত কোনো হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেনা না: শায়রুল কবির খান

খালেদা জিয়া দেশের বাইরে তার পরিবারের সদস্যদের সাথে টেলিফোনে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন৷ পরিবারের সদস্যদের বাইরে আপাতত তার যোগাযোগ সীমিত৷ বিএনপির এক নেতা জানান, ‘‘তিনিতো শর্ত সাপেক্ষে মুক্তি পেয়েছেন৷ তাই তার যোগাযোগ শর্ত বজায় রেখেই হচ্ছে৷ তিনি তারেক রহমানের সাথে ফোনে কথা বলবেন এটাইতো স্বাভাবিক৷ তারেক রহমান তার বড় ছেলে৷ তিনি দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যানও৷’’

মির্জা ফখরুল খালেদা জিয়ার সাথে দেখা করার পর দলের অন্য নেতাদের এনিয়ে কিছু শেয়ার করেছেন বলেন জানা যায়নি৷ বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘‘চেয়ারপার্সনের সাথে দলের মহাসচিবের কি কথা হয়েছে জানিনা৷ আর আমিও ফোন করে জানতে চাইনি৷ তবে হেলথ ইস্যু ছাড়া আলোচনার তেমন কোনো বিষয় নেই৷ আমার মনে হয় না তিনি এখন রাজনীতিতে সক্রিয় হবেন৷’’

খালেদা জিয়ার বাসায় তার নিরাপত্তার দিকটি দেখছেন তার ব্যক্তিগত নিরাপত্তা দলের সদস্যরা৷ নেতৃত্ব দিচ্ছেন মেজর জেনারেল (অব.) ফজলে এলহী আকবর৷ খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত কর্মকর্তা আব্দুস সাত্তার জানান, ‘‘সরকারের পক্ষ থেকে খালেদা জিয়াকে আলাদা কোনো নিরাপত্তা দেয়া হচ্ছে না৷ আমরা নিরাপত্তার জন্য পুলিশের আইজির কাছে আবেদন করা হয়েছে৷ কিন্তু কোনো জবাব এখনো পাওয়া যায়নি৷’’

Gegenwärtige Residenz von Khaleda Zia, ehemaliger Premierminister von Bangladesch
মুক্তির পর এই বাড়িতে আছেন খালেদা জিয়াছবি: DW/S. Hossain

খালেদা জিয়ার সাথে তার চিকিৎসক ও পরিবারের সদস্যদের বাইরে কেউ দেখা করার সুযোগ পাচ্ছেন না৷ করোনা এবং তারা শারীরিক অবস্থার কারণেই দেখা করার সুযোগ সীমিত৷ একমাত্র মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দু'দিন আগে দেখা করেছেন৷

প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়াকে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়৷ ওই দিনই তাকে কারাগারে পাঠানো হয়৷ পরে দুদকের আপিলে এই মামলায় সাজা বাড়িয়ে ১০ বছর করা হয়৷ এরপর তাকে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় সাত বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়৷ ২০১৯ সালের এপ্রিল থেকে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের এর প্রিজন সেলে চিকিৎসাধীন ছিলেন৷

২৫ মার্চের ছবিঘরটি দেখুন...