1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

যুক্তরাষ্ট্র সফরের প্রথম দু'দিন মোদী যেভাবে কাটালেন

২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪

যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে প্রেসিডেন্ট বাইডেনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন প্রধানমন্ত্রী মোদী৷ সেখানে বাংলাদেশ নিয়েও কথা হলো৷

https://p.dw.com/p/4kyDn
প্রেসিডেন্ট বাইডেনের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী মোদী।
বাইডেন ও মোদীর মধ্যে আলোচনায় বাংলাদেশ নিয়ে মতবিনিময় হয়। ছবি: Kevin Lamarque/REUTERS

ভারতের পররাষ্ট্রসচিব ব্রিজেশ মিশ্রি বৈঠকের পর জানান, মোদী ও বাইডেন বাংলাদেশ নিয়ে মতবিনময় করেছেন৷

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেছেন, ‘‘দেখুন আলোচনায় আঞ্চলিক বিভিন্ন বিষয় উঠে এসেছে৷ সেখানে দ্বিপাক্ষিক বিষয় নিয়ে যেমন আলোচনা হয়েছে, তেমনই দুই পক্ষের স্বার্থ সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা হয়েছে৷ আবার এই অঞ্চলের বাইরের বিষয় নিয়েও কথা হয়েছে৷ অনেকগুলি দেশের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে৷ তাদের আলোচনায় বাংলাদেশও এসেছিল৷ সেখানকার পরিস্থিতি নিয়ে তারা মতবিনিময় করেছেন৷'' তিনি এই বিষয়ে আর কিছু বলেননি৷

বাংলাদেশ থেকে শেখ হাসিনার চলে যাওয়া, মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর এই প্রথমবার মুখোমুখি বৈঠকে বাংলাদেশ নিয়ে মোদী-বাইডেনের কথা হলো৷

ফিলিস্তিনের পরিস্থিতি নিয়ে

ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট আব্বাসের সঙ্গেও বৈঠক করেছেন মোদী৷ সেখানে তিনি ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্টকে বলেছেন, গাজায় মানবিক সংকটে তিনি রীতিমতো উদ্বিগ্ন৷

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় লিখিত বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, ‘‘মোদী বলেছেন, গোটা এলাকার নিরাপত্তা পরিস্থিতি খারাপ হয়েছে এবং ভারত ফিলিস্তিনিদের পাশে আছে৷ ভারত তাদের মানবিক সহায়তা করবে৷''

বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, ‘‘মোদী বলেছেন, ইসরায়েল-ফিলিস্তিন নিয়ে ভারত দীর্ঘদিন ধরে একই মনোভাব নিয়ে চলছে৷ তারা মনে করে, আলোচনার মাধ্যমে কূটনৈতিক পথে সমস্যার সমাধান হওয়া দরকার৷''

প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘‘ভারত অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি ও বন্দিদের মুক্তি চায়৷ ভারত মনে করে, টু-স্টেট সমাধান একমাত্র এই অঞ্চলে দীর্ঘস্থায়ী শান্তি এনে দিতে পারে৷''

মোদী জানিয়েছেন, ভারতই প্রথম দেশগুলির মধ্যে অন্যতম, যারা ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিয়েছিল৷ জাতিসংঘে ফিলিস্তিনের সদস্যতাকে তারা সমর্থন করেছে৷

নেপালের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে

প্রধানমন্ত্রী মোদী সোমবার নেপালের প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা ওলির সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেছেন৷ ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, দুই নেতা দুই দেশের মধ্যে ঘনিষ্ঠ ও অসাধারণ সম্পর্কের উল্লেখ করে বলেছেন, জলবিদ্যুৎ, যোগাযোগ ব্যবস্থা ও দুই দেশের মানুষের সম্পর্কের উপর তারা জোর দিতে চান৷

প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, ভারত নেবারহুড ফার্স্ট নীতি নিয়ে চলছে৷ সেজন্য নেপালের সঙ্গে সুসম্পর্ককে ভারত খুবই গুরুত্ব দেয়৷

সিইও-দের সঙ্গে বৈঠক

নিউ ইয়র্কে এমআইটি স্কুল অফ ইঞ্জিনিয়ারিং একটি গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করে৷ সেখানে অ্যাকসেনচার, গুগল, এএমডি, বায়োজেন, এইচপি, আইবিএম-সহ ১৫টি প্রমুখ প্রযুক্তিগত সংস্থার সিইও-রা ছিলেন৷ প্রধানমন্ত্রী মোদী তাদের সঙ্গে কথা বলেন৷

প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ভারত এখন বিশ্বের তৃতীয় সবচেয়ে বড় অর্থনীতি হওয়ার পথে এগোচ্ছে৷ উন্নয়নের পথে ভারতের এই যাত্রায় সামিল হয়ে বড় সংস্থাগুলিকে একসঙ্গে উদ্ভাবন, উৎপাদন ও ডিজাইন তৈরির কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন মোদী৷

তিনি বলেছেন, ভারত তাদের মেধাসত্ত্ব রক্ষা করবে এবং প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনে সাহায্য করবে৷ তথ্যপ্রযুক্তি, সেমিকন্ডাক্টর, ইলেকট্রনিক্স, বায়োটেক, গ্রিন এনার্জির ক্ষেত্রে ভারতে যে সুযোগ তৈরি হচ্ছে মোদী তার উল্লেখ করেন৷ তিনি জানান, ভারত কৃত্রিম মেধাসত্ত্বকে উৎসাহ দেবে৷

সিইও-রা জানিয়েছেন তারা ভারতে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী৷

কলকাতায় সেমিকন্ডাক্টর কারখানা

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে বৈঠকে কলকাতায় সেমিকন্ডাক্টর কারখানা নিয়ে কথা হয়েছে৷ প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর জানিয়েছে, এই কারখানা হলে দুই দেশেই কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়বে৷

এই কারখানা তৈরি হলে ইনফ্রারেড, গ্যালিয়াম নাইট্রাইড এবং সিলিকন কার্বাইড সেমিকন্ডাক্টর তৈরি হবে৷ ভারতের ‘সেমিকন্ডাক্টর মিশন'-এরও এটাই উদ্দেশ্য৷

বলা হয়েছে, এই সেমিকন্ডাক্টর কারখানা থেকে যে সব চিপ তৈরি হবে, তা দিয়ে ইন্টারনেটের উপর নির্ভরশীল ও এআই(কৃত্রিম মেধা)-র ক্ষেত্রে উন্নতি হবে, দূষণমুক্ত পরিবেশ তৈরির ক্ষেত্রেও সাহায্য হবে৷

প্রবাসী ভারতীয়দের সঙ্গে

প্রধানমন্ত্রী মোদী প্রবাসী ভারতীয়দের সঙ্গেও মিলিত হন৷ তিনি সেখানে বলেছেন, ভারত যা বলে তা বিশ্ব শোনে৷ এটা প্রবাসী ভারতীয়দের জন্যই সম্ভব হয়েছে৷ তিনি যখন যুদ্ধের বিরুদ্ধে কথা বলেছিলেন, সেটাও সকলে শুনেছিল৷  

মোদী জানিয়েছেন, ভারত ২০৩৬ সালের অলিম্পিক আয়োজন করতে চায়৷ এর জন্য সবরকম চেষ্টা করা হচ্ছে৷

কোয়াড বৈঠকের আগে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে ভারত, জাপান ও অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রীর ফটোসেশন।
কোয়াড বৈঠকে চীন নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা হয়। ছবি: Mark Schiefelbein/AP Photo/picture alliance

কোয়াড বৈঠকে

কোয়াড হলো অ্যামেরিকা, ভারত, অস্ট্রেলিয়া ও জাপানের জোট৷ মূলত চীনের আধিপত্য ঠেকানোর জন্যই এই জোট তৈরি হয়েছে৷

যুক্তরাষ্ট্রে কোয়াড বৈঠকে মোদী বলেছেন, ‘‘ভারত কোনো রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে নয়, ভারত সম্প্রসারণবাদের বিরুদ্ধে৷ এমন একটা সময়ে কোয়াড বৈঠক হচ্ছে, যখন বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় সংঘাত চলছে৷''

বাইডেন বলেছেন, ‘‘চারটি দেশ এখন কৌশলগতভাবে অনেক বেশি সংঘবদ্ধ৷''

কোয়াড বৈঠকে গৃহীত প্রস্তাবে বলা হয়েছে, ‘সমুদ্রপথে শান্তি ও সুরক্ষা, স্থায়ী উন্নয়ন গড়ে তোলা, ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলকে সমৃদ্ধ করা' হলো তাদের লক্ষ্য৷

জিএইচ/জেডএইচ (পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তি)