মার্কিন নির্বাচন ও ভারতের স্বার্থ
৬ নভেম্বর ২০১২প্রতিবারই মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে কে জয়ী হবে, ডেমোক্র্যাট না রিপাবলিকান তা নিয়ে একটা প্রত্যাশা থাকে৷ যিনিই জয়ী হন তাঁর অভিঘাত দেশ-বিদেশে কী হতে পারে তা নিয়ে একটা হিসেব মেলানোর জায়গা থেকে যায়৷ প্রেসিডেন্ট নির্বাচনী প্রচারে মার্কিন বিদেশ নীতিতে চীন, ইরান, মধ্যপ্রাচ্য, আফগানিস্তান এমন কী পাকিস্তান যেভাবে উঠে এসেছে, ভারত সেখানে জায়গা পায় নি৷
যুক্তরাষ্ট্র দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতকে দেখে চীনকে শাসনে রাখতে একটি কৌশলগত সহযোগী দেশ হিসেবে৷ তাই ডেমোক্র্যাট প্রার্থী ওবামা বা রিপাবলিকান প্রার্থী মিট রমনি যিনিই আসুন, ভারতের সঙ্গে সম্পর্কে বিশেষ তারতম্য হবে না৷
এই প্রসঙ্গে বিশিষ্ট রাষ্ট্রবিজ্ঞানী অধ্যাপক উদয়ন বন্দোপাধ্যায় ডয়চে ভেলেকে বললেন, ভারতের ওপর মার্কিন প্রেসিডেন্টের নির্বাচনী ফলাফলের অভিঘাতের দুটো দিক আছে৷ পররাষ্ট্র এবং অর্থনৈতিক৷ দেখা গেছে, ডেমোক্র্যাট বা রিপাবলিকান যেই আসুক বিদেশ নীতিতে ইতরবিশেষ তেমন হয় না৷ বৈশিষ্ট্যগত কিছু ফারাক হতে পারে, কিন্তু মূল পররাষ্ট্রনীতি যেটা মার্কিন উচ্চকক্ষ সেনেট মোটামুটি ঠিক করে দেয়, প্রেসিডেন্ট সেটাই অনুসরণ করে থাকেন৷
অন্যদিকটা হলো অর্থনৈতিক৷ ভারতের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির গতি মন্থর হয়ে পড়ায় অ্যামেরিকার কাছে ভারতের মূল্য কমে গেছে৷ আউট সোর্সিং একটা বড় ইস্যু৷ এই আউট সোর্সিং-এর জন্য ভারতের ছেলে-মেয়েদের কর্মসংস্থান হচ্ছে৷ অ্যামেরিকায় বেকারিত্ব কমাতে ওবামা সেটা বন্ধ করার বা কমিয়ে দেবার কথা বলেছিলেন৷ যদিও শেষ পর্যন্ত সেটা তিনি পারেন নি৷
মিট রমনি এক ঝানু ব্যবসাদার মানুষ৷ সাধারণ নাগরিকদের স্বার্থের চেয়ে তাঁর কাছে আর্থিক লাভটাই আসল কথা৷ আউট সোর্সিং করলে যদি কোম্পানিগুলির আর্থিক লাভ ভালো হয়, তিনি তাই করবেন৷ ভারতের ওপর রমনি চাপ বাড়াবেন ভারতের বাজার আরো খুলে দিতে৷
অধ্যাপক উদয়ন বন্দোপাধ্যায় মনে করেন, ভারতের দৃষ্টিকোণ থেকে একটা সম-দূরত্ব রাখার প্রশ্ন এসে যাচ্ছে৷ যিনিই আসুক, ভারতের স্বার্থ একই রকম থাকবে৷ অর্থাৎ ভারতের বিদেশ নীতি কতটা মার্কিনমুখী হচ্ছে, তার ওপরই নির্ভর করছে ভারত-মার্কিন সম্পর্ক৷ তবে দেখা গেছে, ডেমোক্র্যাটরা ভারতের প্রতি বেশি বন্ধুত্বভাব পোষণ করে এসেছে, সেই প্রথম থেকেই৷