মালদ্বীপের পরিস্থিতি
৯ ফেব্রুয়ারি ২০১২মালদ্বীপের পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ৷ গদিচ্যুত প্রেসিডেন্ট মহম্মদ নাশিদের সমর্থকদের সঙ্গে নিরাপত্তা বাহিনীর রক্তাক্ত সংঘর্ষ অব্যাহত৷ নাশিদের সমর্থকরা ১৮টি পুলিশ থানায় হামলা চালায়৷ সংঘর্ষে হতাহত হয় প্রায় দুশো৷ গদিচ্যুত প্রেসিডেন্টের পরিবার পালিয়ে যান শ্রীলঙ্কায়৷গদিচ্যুত প্রেসিডেন্টকে গ্রেপ্তারের জন্য ওয়ারেন্ট জারি করেছে সেদেশের আদালত৷ যে-কোন মুহূর্তে গ্রেপ্তার হতে পারেন তিনি৷ অবিলম্বে নতুন নির্বাচনের দাবি জানিয়ে নাশিদ বলেছেন, নতুন নির্বাচনে তিনি অংশ নেবেন৷
রক্তপাতহীন এক অভ্যুত্থানে গদিচ্যুত মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মহম্মদ নাশিদের ঘনিষ্ঠরা ভারতের সাহায্য চেয়ে যোগাযোগ করলেও ভারত এখনো পর্যন্ত নিরপেক্ষ অবস্থান নিয়ে চলেছে৷ বার্তা দিয়েছে সেদেশের অভ্যন্তরিণ রাজনৈতিক সংঘাতের মোকাবিলা করতে হবে সেদেশের জনগণকে৷ এমন কী সাবেক নাশিদ সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মালের ভারতীয় দূতাবাসে আশ্রয় চাইলে ভারত ফিরিয়ে দেয় এমনটাই খবর৷
১৯৮৮ সালে তৎকালীন মালদ্বীপ প্রেসিডেন্ট আবদুল গায়ুমকে ক্ষমতাচ্যুত করার ষড়যন্ত্র ব্যর্থ করে দিতে ভারত অপারেশন ক্যাকটাস নামে সামরিক অভিযান চালিয়েছিল৷ বর্তমান পরিস্থিতিতে ভারত সেবকম কিছু করবেনা৷ শুধু চাইবে শান্তিপূর্ণভাবে সাংবিধানিক কাঠামোর অধীনে ক্ষমতা হস্তান্তর৷ নতুন সরকার আইন শৃঙ্খলা রক্ষা করবে৷ সুনিশ্চিত করতে হবে গদিচ্যুত প্রেসিডেন্ট নাশিদের জীবনের নিরাপত্তা৷
এই প্রসঙ্গে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ইমন কল্যাণ লাহিড়ি ডয়চে ভেলেকে ভারতের নিরপেক্ষ ভূমিকার কথা উল্লেখ কোরে বলেন দক্ষিণ এশিয়ায় যে পরিবর্তনগুলো হচ্ছে, সামরিক অভ্যুত্থান হচ্ছে সেখানে ভারত সরাসরি হস্তক্ষেপ করতে পারছেনা৷ বাংলাদেশের ক্ষেত্রে পারেনি, পাকিস্তানের ক্ষেত্রেও পারেনি এবং অন্য দেশের ক্ষেত্রেও ভারতের সে জায়গাটা নেই৷ কোন দেশের অভ্যন্তরিণ রাজনীতিতে ঢোকা ভারতের পক্ষে সম্ভব হবেনা৷ পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে আগামী দিনে কী দাঁড়ায় সেটাই লক্ষণীয় বিষয়৷
এই রক্তপাতহীন অভ্যুত্থান কারা স্পনসর করছে সন্ত্রাসবাদী শক্তি নাকি বৃহৎ শক্তি তা এই মুহূর্তে বলা কঠিন৷
নতুন প্রেসিডেন্ট মহম্মদ ওয়াহিদের কাছে এক বার্তায় প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিং মালদ্বীপের স্থিতিশীল সরকারের প্রতি ভারতের সমর্থন জানিয়েছেন৷
প্রতিবেদন: অনিল চট্টোপাধ্যায়, নতুন দিল্লি
সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক