1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

মার্কিন নির্বাচন নিয়ে ইউরোপীয়দের উন্মাদনা সীমাহীন

হাফসা হোসাইন৪ নভেম্বর ২০০৮

যুক্তরাষ্ট্রের ৪৪তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করতে ভোট দিচ্ছেন মার্কিনীরা৷ এই নির্বাচনকে ঘিরে আটলান্টিকের অপর পারের মানুষের অর্থাত্‌ ইউরোপীয়দের উন্মাদনা সীমাহীন৷

https://p.dw.com/p/FnMU
মার্কিন নির্বাচনের ভোট গ্রহণ চলছেছবি: AP

জনমত জরিপে ওবামা এগিয়ে থাকায় অনেক ইউরোপীয় ধরেই নিয়েছে পরবর্তী মার্কিন প্রসিডেন্ট হতে যাচ্ছেন বারাক ওবামাই৷ রূপকথার গল্প কিংবা টানটান উত্তেজনাময় হলিউডের কোন সিনেমার মতোই ওবামাও তাঁর লক্ষ্যে পৌঁছুবেন এমনটাই মনে করছে অনেকে৷ তবে ইউরোপীয়দের অতি প্রত্যাশার ব্যাপারে সতর্ক করে দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা৷

Bildgalerie Obama in Berlin Schaulustige am Brandenburger Tor
মার্কিন নির্বাচনকে ঘিরে আটলান্টিকের অপর পারের মানুষের অর্থাত্‌ ইউরোপীয়দের উন্মাদনা সীমাহীনছবি: picture-alliance/dpa

নিউ ইয়র্কের চেয়ে ৭ ঘন্টা এগিয়ে বার্লিন৷ তাই মার্কিন নির্বাচনের ভোটাভুটি শেষে ফলাফল কি হয় তা জানতে জার্মানদের অনেক রাত জাগতে হবে বৈকি৷ সাধারণ জার্মানদের মতো জার্মান গণমাধ্যমেও এ নিয়ে চলছে মাতামাতি৷ বার্লিনের জন এফ কেনেডি ইন্সটিটিউটের অধ্যাপক টোমাস গ্রেভেন জানালেন, মঙ্গলবার সকালেই মার্কিন নির্বাচন নিয়ে চার চারবার সাক্ষাত্‌কার দিয়েছেন তিনি৷ একে গণমাধ্যমের উন্মাদনাই বলছেন তিনি৷ তাঁর আশংকা, এই নির্বাচনকে ঘিরে এতো যে প্রত্যাশা তা পূরণ না হলে উন্মাদনা পরিণত হবে হতাশায়৷

পরিস্থিতি দেখে শুনে মনে হচ্ছে নির্বাচনে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী ওবামা বেশ সুবিধাজনক অবস্থায় রয়েছেন৷ গ্যালাপ-ইউএসএ টুডের সর্বশেষ জরিপে রিপাবলিকান প্রার্থী জন ম্যাককেইনের চেয়ে ১১ পয়েন্ট এগিয়ে আছেন তিনি৷ অর্থাত্‌ তাঁর পক্ষে রয়েছেন ৫৫ শতাংশ মার্কিনী৷ আর ম্যাককেইনের পক্ষে ৪৪ শতাংশ৷ এবার ভোটার সংখ্যা সাড়ে ১৩ কোটি৷ যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে এতো বিপুল সংখ্যক ভোটার নজিরবিহীন বটে! প্রসিডেন্ট নির্বাচনে বহু ঘটনার স্বাক্ষী ওহাইয়ো এবং ফ্লরিডা দিয়েই শেষ হবে ভোট গ্রহণ৷

Der naechste US Praesident Barack Obama oder John McCain
কে হচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট?ছবি: picture-alliance/dpa

জার্মানদের মতে, ওবামা জিতছেন বিপুল ব্যবধানে৷ জনমত জরিপে দেখা গেছে, ৪্রতি ৪ জন জার্মানের মধ্যে ৩ জনেরই রায় ওবামার পক্ষে৷ একই রকম চিত্র গোটা ইউরোপেই৷

জার্মান মিডিয়াগুলোও সমর্থন করছে ওবামাকে৷ তাদের বিশ্বাস, ওবামা জিতলে ট্রান্সআটলান্টিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে নতুন যুগের সূচনা হবে৷ প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশের শাসনামলের ৮ বছরে আমেরিকা-ইউরোপ সম্পর্ক খুব ভালো হয়নি৷ বেশির ভাগ ইউরোপীয়ই মনে করে, বুশের ব্যর্থ নীতিরই ধারাবাহিকতা বজায় রাখবেন জন ম্যাককেইন৷

তবে বিশেষজ্ঞরা এ ব্যাপারে বেশ সতর্ক৷ মিউনিখ বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর অ্যাপ্লাইড পলিসি রিসার্চের টোমাস বাউয়ার বলছেন, এই নির্বাচনকে ঘিরে জার্মানদের অনেক প্রত্যাশা৷ যদি ওবামা জিতেন তাহলে অনেকের মুখেই হাসি ফুটবে৷ কিন্তু কয়েক মাসের মাথায়ই তা পরিণত হতে পারে হতাশায়৷

বাউয়ার আরো বলেছেন, ইউরোপীয়রা আসলে ট্রান্সআটলান্টিক সম্পর্কের ব্যাপারে ওবামার দৃষ্টিভঙ্গির চেয়ে তাঁর অভিব্যক্তিকেই বেশি ভালবাসে৷

পরবর্তী মার্কিন প্রেসিডেন্ট হবেন যিনি তাঁকে বেশ কয়েকটি জরুরি বিষয়ে বিচক্ষণ ও কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে হবে৷ আর সেসবের মধ্যে সবার আগে আসে ইরাক ও আফগানিস্তানে বিতর্কিত ও অপ্রিয় যুদ্ধ৷ যার গ্রহণযোগ্য ও সহজ একটা সমাধান খুঁজতে হবে তাঁকে৷

এছাড়া চলমান বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দার কবলে পড়া মার্কিন ও ইউরোপীয় অর্থনীতিকে পুনরুদ্ধার করার গুরু দায়িত্বটাও বর্তাবে পরবর্তী মার্কিন প্রেসিডেন্টের উপরই৷ এছাড়া ইরানের পরমাণু অস্ত্র তৈরির উচ্চাকাংখা, পাকিস্তানের উপজাতি অধ্যুষিত এলাকায় জঙ্গিবাদের উত্থান, প্রতিবেশি দেশগুলোর প্রতি রাশিয়ার মারমুখো মনোভাব এসব বিষয়ে চ্যালেঞ্জ তো রয়েছেই৷

ওবামার ইরাক যুদ্ধ বিরোধী মনোভাব ভালবাসে জার্মানরা৷ তবে একই সঙ্গে তারা এটা ভুলে যাচ্ছে যে, আফগানিস্তানের দক্ষিণাঞ্চলে ইউরোপীয় সৈন্য বাড়ানোর পক্ষে ওবামা৷ কিন্তু আফগানিস্তানে সৈন্য পাঠানোর ঘোর বিরোধী জার্মানরা৷ তাছাড়া ম্যাককেইনের মতোই ওবামারও কথা, প্রয়োজনে ইরানের মতো দেশেও সামরিক শক্তি প্রয়োগ করবেন তিনি৷

তবে সব কথার শেষে বিশেষজ্ঞরা এটাই বলছেন, নীতি একই হলেও তা প্রয়োগের ক্ষেত্রে ওবামার কৌশলটা একটু ভিন্ন৷ কিন্তু তাদের আশা, ওবামা মানুষকে মুগ্ধ করতে জানেন৷ ইউরোপীয় নেতাদেরও তিনি মুগ্ধ করতে পারবেন বলেই বিশ্বাস সবার৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য