মার্কিণ প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ওবামা-ম্যাককেন উতোর-চাপান
২৭ অক্টোবর ২০০৮ওবামা এবার ম্যাককেনকে আক্রমণের সঠিক পন্থাটা খুঁজে পেয়েছেন৷ সর্বত্র বলে বেড়চ্ছেন, যে ম্যাককেন আর বুশ একই, ম্যাককেনকে ভোট দেওয়া আর বুশের রাজনীতিকে আরো চার বছরের জন্য কায়েম করা একই ব্যাপার৷ যেমন গতকাল কলোরাডোর ডেনভারে ওবামা লক্ষাধিক মানুষের জনসভায় বললেন, ম্যাককেন প্রেসিডেন্ট বুশের একটা দুর্বল নকল ছাড়া আর কিছু নন৷ বুশকে ম্যাককেনের হাতে মশাল তুলে দিতে দেওয়া চলবে না৷ দু’জনকে সংযুক্ত ভাবে দেখানোর জন্য ওবামা বারংবার বুশ-ম্যাককেন ফিলসফি বা রাজনৈতিক দর্শনের কথা বলছেন৷ তাঁর ব্যাখ্যানে ঐ ফিলসফির মূলমন্ত্র হল, বড়লোকদের আরো টাকা দাও, যাতে গরীবরাও কালে কিছু পেতে পারে৷
জয়ের চিহ্ন জয়তিলক নয়, জানেন ওবামা
যুক্তরাষ্ট্রে ভোটার সমীক্ষার পরে ভোটার সমীক্ষায় ওবামা এগিয়ে রয়েছেন, সামগ্রিকভাবে এবং কতগুলি বিশেষ অনিশ্চিত রাজ্যে৷ তাই ওবামা সদ্যঃ নেভাডা, নিউ মেক্সিকো এবং কলোরাডো, পশ্চিমের এই তিনটি তথাকথিত রণাঙ্গণ রাজ্যের নির্বাচনী সফর সমাপ্ত করলেন৷ দু’দিন ধরে এখানে ঘুরেছেন তিনি৷ কলোরাডোর মতো কয়েকটি রাজ্যে চৌঠা নভেম্বরের আগেই ভোট দেওয়া সম্ভব৷ কাজেই তরুণ ভোটার, যারা প্রথমবার ভোট দিচ্ছে, এবং যারা কখনো-সখনো ভোট দেয়, তাদের ভোট ধরার জন্য এই রাজ্যগুলি হল আদর্শ৷ মনে রাখা দরকার, ১৮ থেকে ২৯ বছর বয়সী ভোটারদের মধ্যে ৬০ শতাংশই ওবামার দিকে৷
ম্যাককেনের চাপান
ম্যাককেন লড়াকু মানুষ, রিপাবলিকানদের প্রার্থী হবার সময়েই সেটা তিনি প্রমাণ করে দিয়েছেন৷ ভিয়েতনাম যুদ্ধের এই পোড় খাওয়া ভেটারান এবার ওবামার বিরুদ্ধে তাঁর আক্রমণের তীব্রতা বাড়িয়েছেন বটে, কিন্তু ওবামাকে সত্যিই বিপদে ফেলার মতো যুক্তি তাঁর হাতে নেই৷ আপাততঃ তাঁকে ডিফেন্সিভ খেলতে হচ্ছে, কেন না রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট জর্জ ডাবলিউ বুশের সঙ্গে তাঁর দলীয় সম্পর্কই তাঁকে ডোবাতে বসেছে৷ ম্যাককেন বলছেন, যে তিনি বুশকে শ্রদ্ধা করেন বটে, কিন্তু একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে তিনি বুশের সঙ্গে একমত হননি, যেমন সরকারী ব্যয় বৃদ্ধি, অথবা ইরাকে স্ট্র্যাটেজী কিংবা পরিবেশ সংরক্ষণের জন্য আরো কড়া পদক্ষেপের প্রয়োজন ইত্যাদি বিষয়ে৷ ম্যাককেন এক কথায় বলছেন, তিনি বুশ নন৷
অপরদিকে ম্যাককেন ওবামাকে একদিকে যেমন সৌখীন সমাজতন্ত্রী বলে অভিহিত করছেন, তেমনই ওবামার আত্মবিশ্বাস নিয়েই ঠাট্টা শুরু করেছেন৷ বলেছেন, ওবামা নাকি ইতিমধ্যেই তাঁর শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানের ভাষণ লিখে বসে আছেন৷
সারা পেলিনকে নিয়ে দলের বাইরে এবং এবার ভিতরেও নানা বিতর্ক সত্ত্বেও ম্যাককেন বলেছেন, যে পেলিন সম্পর্কে সাফাই দেবার কোনো প্রয়োজন নেই৷
সবচেয়ে বড় কথা, সেটা লোক-দেখানো হোক আর নাই হোক, ম্যাককেন নিত্য নতুন ভোটার সমীক্ষাকে নস্যাত্ করে বলেছেন, যে কয়েকটা পয়েন্টের ফারাকে কিছু আসে যায় না৷ শেষ কয়েক দিনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা আরো নিকট হতে চলেছে বলে তাঁর ধারণা৷
সব মিলিয়ে চৌঠা নভেম্বরের আগে এই প্রতিদ্বন্দ্বিতার নিষ্পত্তি নেই, এটুকু অন্ততঃ বলা চলে৷