1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

মশাবাহিত রোগের সংক্রমণ কমায় ওলবাকিয়া ব্যাকটেরিয়া

১৮ জুলাই ২০২৩

ডেঙ্গুসহ মশাবাহিত অন্যান্য রোগের সংক্রমণ কমাতে কাজ করছে ‘ওয়ার্ল্ড মসকুইটো প্রোগ্রাম'৷ তারা মশার ভে়তর ওলবাকিয়া নামে একটি ব্যাকটেরিয়া ঢুকিয়ে দেয়৷ ফলে মশা রোগ ছড়ানোর ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে৷

https://p.dw.com/p/4U2aX
World Mosquito Program | WMP Scientists in Indonesia (Yogyakarta City)
ছবি: World Mosquito Program/Eric Elofson

ব্রাজিলে বড় আকারে ঠিক সেই কাজটি করতে চাইছে অলাভজনক এই প্রতিষ্ঠান৷ গবেষণা প্রতিষ্ঠান ফিওক্রুজের সঙ্গে মিলে এই কাজ করতে চায় তারা৷

ওয়ার্ল্ড মসকুইটো প্রোগ্রামের সিইও স্কট ও' নিল জানান, ‘‘ওলবাকিয়া ব্যাকটেরিয়া মশার ভেতর ঢোকানো গেলে সেটা মশার ভেতর থাকা যে ভাইরাস মানুষকে আক্রমণ করে, সেটির রেপ্লিকেট হওয়া প্রতিহত করে৷ মানুষ থেকে মানুষে ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া, জিকা ও পীতজ্বরের ভাইরাস ছড়াতে ‘রেপ্লিকেটের' প্রয়োজন হয়৷ কিন্তু ওলবাকিয়া ব্যাকটেরিয়ার কারণে সেটা সম্ভব হয় না৷''

অনেক জরিপে প্রমাণ পাওয়া গেছে যে, ওলবাকিয়া আক্রান্ত মশাকে অন্যান্য মশার মধ্যে ছড়িয়ে দিলে ডেঙ্গু বা জিকার যে কারণ, সেই বিপজ্জনক প্যাথোজেনগুলোর সংক্রমণ অনেকখানি কমে যায়৷ এছাড়া এই পদ্ধতির আরও অনেক সুবিধা আছে৷

স্কট ও' নিল বলছেন, ‘‘এই পদ্ধতি আপনাকে শুধু একবার প্রয়োগ করতে হবে৷ কিন্তু আপনি যদি মশা মারতে কীটনাশক ব্যবহার করে থাকেন, তাহলে প্রতিবছরই সেটা করতে হয়৷ অথচ আমাদের পদ্ধতিটা একবার ব্যবহার করলে ব্যাকটেরিয়াটা মশার ভেতর স্থায়ীভাবে থেকে যায়৷ ফলে পদ্ধতিটা আরেকবার ব্যবহার না করলেও সেই মশাই মানুষকে রক্ষা করে৷''

মশাবাহিত রোগের সংক্রমণ কমায় যে ব্যাকটেরিয়া

ওলবাকিয়া আক্রান্ত ব্যাকটেরিয়া তার সন্তানদের মধ্যেও এই ব্যাকটেরিয়া দিয়ে দেয়৷

গত ১০ বছরে এক ডজনেরও বেশি দেশে এই প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে৷ ফলাফল আশাব্যঞ্জক ছিল৷

কিছু জায়গায় এটি মানুষ বা পরিবেশের উপর আপাতদৃষ্টিতে কোনো বিরূপ প্রভাব ফেলা ছাড়াই ভাইরাসজনিত রোগের সংক্রমণ উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কমিয়েছে৷ তবে ব্রাজিলের ক্ষেত্রে এখনও কিছু প্রশ্ন আছে৷

ফিওক্রুজ সংস্থার কর্মকর্তা রাফায়েল ফ্রাইতাস বলছেন, ‘‘ইন্দোনেশিয়ার তথ্য বলছে, সেখানে ডেঙ্গু সংক্রমণ উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কমেছে৷ কিন্তু ব্রাজিলের রিওতে ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়ার ক্ষেত্রে আমরা তেমনটা দেখতে পাচ্ছি না৷ তাই পদ্ধতিটা ইন্দোনেশিয়ার চেয়ে ব্রাজিলে কেন কম কার্যকরি হচ্ছে, সেটা বোঝা যাচ্ছে না৷''

বিশ্বে ডেঙ্গু সংক্রমণের হার সবচেয়ে বেশি থাকা দেশগুলির একটি ব্রাজিল৷ মশাবাহিত রোগের সংক্রমণ কমাতে সে দেশে ওলবাকিয়া আক্রান্ত মশার বংশবৃদ্ধি করতে একটি স্থাপনা গড়ে তোলা হচ্ছে, যার কাজ আগামী বছর শেষ হবে৷ গাড়ি, মোটরসাইকেল ও ড্রোন দিয়ে মশা ছাড়া হবে৷

স্কট ও' নিল বলছেন, ‘‘আমরা সপ্তাহে ১০০ মিলিয়ন মশা উৎপাদনের লক্ষ্য নির্ধারণ করছি৷ অর্থাৎ বছরে পাঁচ বিলিয়ন৷ ব্রাজিলের কয়েকটি শহরে একসঙ্গে কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য আমাদের এই সংখ্যক মশা দরকার৷''

পুরো ব্রাজিলে এই পদ্ধতি কার্যকর প্রমাণিত হলেও এটি দিয়ে মশাবাহিত সব রোগ দমন করা যাবে না৷ ফলে টিকা উদ্ভাবনের মতো কাজের গুরুত্ব ভবিষ্যতে আরও অনেক বছর থাকবে৷

ডেরিক উইলিয়ামস/জেডএইচ