মরক্কোতে বোরকা বিক্রি নিষিদ্ধ
১১ জানুয়ারি ২০১৭স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এলই৩৬০ নিউজ সাইটকে বলেছেন, ‘‘আমরা মরক্কোর সব শহরে এই পোশাকের (বোরকা) আমদানি, উৎপাদন ও বিক্রি পুরোপুরি বন্ধের পদক্ষেপ নিয়েছি৷''
নিরাপত্তাজনিত কারণে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে প্রতিবেদনে জানানো হয়৷ ‘‘দুষ্কৃতিকারীরা নিয়মিতভাবে অপরাধের সময় এই পোশাক ব্যবহার করে’’, বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়৷
উত্তর আফ্রিকার এই দেশের সরকারের পক্ষ থেকে এখনো এ বিষয়ে কিছু বলা না হলেও এলই৩৬০-এর প্রতিবেদন বলছে, এ সপ্তাহেই সিদ্ধান্ত কার্যকর করা শুরু হবে৷
এদিকে, বার্তা সংস্থা এএফপি বলছে, কাসাব্লাঙ্কা শহরের ব্যবসায়ীদের সরকারের এই সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়েছে৷ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা দেশটির আরও কয়েকটি শহরের ব্যবসায়ীদেরও বোরকা তৈরি ও বিক্রির উপর নিষেধাজ্ঞা জারির সরকারি সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন৷
উল্লেখ্য, মরক্কোর বেশিরভাগ নারী হিজাব (এতে মুখ ঢাকা থাকে না) পরে থাকেন৷ তবে দেশটির উত্তরাঞ্চলের নারীদের অনেকেই নিকাব (এতে শুধু চোখ দেখা যায়) পরেন৷ এই এলাকাটি মরক্কোর অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় একটু রক্ষণশীল এবং এই এলাকা থেকে অনেক মানুষ জিহাদে অংশ নিতে সিরিয়া ও ইরাকে গেছে৷
মরক্কোর রাজা চতুর্থ মোহাম্মদ ইসলামের ‘মডারেট সংস্করণ' পছন্দ করেন৷ তাই হিজাব পরা তিনি সমর্থন করেন৷
ফ্রান্স, বেলজিয়ামের মতো মরক্কোও জনসম্মুখে পুরো মুখ ঢাকা বোরকা পরা নিষিদ্ধের পরিকল্পনা করছে কিনা সেটি পরিষ্কার নয়৷
প্রতিক্রিয়া
মরক্কোর সাবেক পরিবার ও সামাজিক উন্নয়নমন্ত্রী নুঝা স্কালি বোরকা বিক্রির উপর নিষেধাজ্ঞা জারির সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন৷ ধর্মীয় সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ বলে মনে করেন তিনি৷
তবে ‘ইসলামিস্ট' কারাবন্দিদের অধিকার রক্ষায় কাজ করা ওসামা বুতাহের মনে করেন, এই সিদ্ধান্ত ‘বৈষম্যমূলক'৷ ‘‘এই সিদ্ধান্তের মানে হচ্ছে আমরা দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক৷ এটি সবার ব্যক্তিগত স্বাধীনতার উপর হস্তক্ষেপ, যদিও মরক্কো মানবাধিকার রক্ষা বিষয়ক কয়েকটি চুক্তিতে সই করেছে,'' এএফপিকে বলেন তিনি৷ বোরকা বিক্রি বন্ধের মাধ্যমে নিরাপত্তা পরিস্থিতি উন্নয়নের যুক্তিটি হাস্যকর বলেও মন্তব্য করেন বুতাহের৷
জেডএইচ/এসিবি (এএফপি)