1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

মমতার সঙ্গে পিকে-র সম্পর্ক শেষ হচ্ছে?

৭ ফেব্রুয়ারি ২০২২

তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপধ্যায়ের সঙ্গে কি প্রশান্ত কিশোরের সম্পর্ক এবার ছিন্ন হচ্ছে? দলের ভিতরে আলোচনা তুঙ্গে।

https://p.dw.com/p/46cpz
বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলের জয়ের পিছনে পিকে-র কৌশলও কাজ করেছিল। ছবি: Satyajit Shaw/DW

বিরোধ শুরু হয়েছে জেলায় জেলায় পুরভোটে তৃণমূলের প্রার্থীতালিকা নিয়ে। যে প্রার্থীতালিকা একবার ওয়েবসাইটে উঠে গিয়েছিল, তাতে প্রচুর ভুল রয়েছে বলে পরে জানানো হয়। অভিযোগ, সেই প্রার্থীতালিকা পিকে-র করা। তবে সূত্রের খবর, জেলার পুরভোট নিয়ে পিকে কোনো সমীক্ষা করেননি। প্রার্থীতালিকা করেননি। ওই প্রার্থীতালিকা আসলে অভিষেকের করা। তৃণমূলের অভ্যন্তরে সম্প্রতি অভিষেক বনাম প্রবীণ নেতাদের লড়াই বা বিতর্ক শুরু হয়েছে। কংগ্রেসে রাহুল গান্ধীকে যেমন প্রবীণ নেতাদের বিরোধের মুখে পড়তে হয়েছে, তেমনই অভিষেকের বিরোধ করছেন তৃণমূলের প্রবীণ নেতারা। আর পিকে-কে যেহেতু অভিষেক তৃণমূলে নিয়ে এসেছিলেন, তাই তাঁকে আক্রমণের মুখে পড়তে হচ্ছে।

পিকে তৃণমূলের হয়ে ভোটের কৌশল তৈরির কাজ শুরু করেছিলেন ২০১৯ সালে। ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে পিকে-র গুরুত্ব ছিল অপরিসীম। ভোট কৌশল, প্রার্থী বাছাই, কোন বিষয়কে প্রাধান্য দিতে হবে, দলিত, আদিবাসীদের ভোট পেতে কোন কৌশল নিতে হবে থেকে শুরু করে প্রায় সব বিষয়েই তার বা তার সংস্থা আইপ্যাকের মতামত গুরুত্ব পেয়েছে। তারপর মমতাকে সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে নেতা হিসাবে তুলে ধরার কাজও পিকেই করেছেন।

পিকে বলেছিলেন, ভোটের পর তিনি আইপ্যাক ছেড়ে দেবেন। কিন্তু বাস্তবে সেটা হয়নি। এখনো আইপ্যাকই তৃণমূলের মিডিয়ার দেখভাল করে। ত্রিপুরা, গোয়ায় ভোট কৌশল তৈরির কাজ তারাই দেখছে। কিন্তু ১০৭টি পুরসভায় ভোট নিয়ে তৃণমূলের ওয়েবসাইটে প্রার্থী তালিকা প্রকাশ হওয়া, তারপর তাতে ভুল আছে বলে দল জানিয়ে দেয়া, জেলার জেলায় বিক্ষোভ শুরু হওয়ার মতো ঘটনা নিয়ে উত্তাল তৃণমূল কংগ্রেস। সূত্র জানাচ্ছে, এরই জেরে পিকে তৃণমূলের দায়িত্ব ছেড়ে দিতে চান। মমতাও তা মেনে নেন। দলনেত্রী জানিয়ে দিয়েছেন, সংগঠনের সবকিছু এখন তিনিই দেখবেন।

ঘটনা হলো, এখানে পিকে-র থেকেও তৃণমূলে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হলো, তাহলে অভিষেকের কী হবে? অভিষেক সম্প্রতি জি-বাংলায় একটি সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ''যারা দল ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন, তারা আবার সুসময়ে দলে ফিরবেন, আর যারা ঘাম-রক্ত ঝড়ালেন, তাদের মাথার উপর বসে যাবেন, এটা আমি হতে দেব না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদারতার কারণে সব্যসাচী দত্ত ঢুকতে পেরেছেন। দলের সিদ্ধান্ত আমাকে মানতে হবে। কিন্তু যারা এভাবে ফিরে আসছেন, তাদের তিন থেকে পাঁচ বছর পাপের প্রায়শ্চিত্ত করতে হবে।''

পিকে প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, ''মোদীর হয়েও আইপ্যাক কাজ করেছে। পলিটিক্যাল ম্যানেজমেন্ট বদলেছে। ফলে ২০১৬ সালের পরিস্থিতি আর নেই। এটা বুঝতে হবে।'' ফলে পিকে-কে যে তৃণমূলের দরকার সেটা অভিষেক পরিষ্কার করে দিয়েছেন। প্রার্থীতালিকা নিয়েও অভিষেক বলেছেন, পরের তালিকাতেও ভুল আছে। অভিষেকের কথা খুবই তাৎপর্যপূর্ণ।  

প্রবীণ সাংবাদিক শুভাশিস মৈত্র ডয়চে ভেলেকে বলেছেন, ''শেষপর্যন্ত পিকে থাকবেন কি না, সেই প্রশ্নের জবাব পরে পাওয়া যাবে। কিন্তু আপাতত একটি বিষয় স্পষ্ট, তৃণমূলে অভিষেক বনাম প্রবীণ নেতাদের লড়াই সর্বোচ্চ স্তরে পৌঁছেছে। মমতা এই লড়াই মেটানোর চেষ্টা করছেন ঠিকই, কিন্তু এখনো তা মেটেনি। তার মধ্যে জড়িয়ে গেছে পিকে-র নাম।''

জিএইচ/এসজি (পিটিআই, আনন্দবাজার, জি বাংলা)